Bangladesh
This article was added by the user . TheWorldNews is not responsible for the content of the platform.

'এমন একটা অবস্থায় শায়লা পরীক্ষা দিবে তা কখনোই কল্পনা করতে পারিনি'

'এমন একটা অবস্থায় শায়লা পরীক্ষা দিবে তা কখনোই কল্পনা করতে পারিনি'

'এমন একটা অবস্থায় শায়লা পরীক্ষা দিবে তা কখনোই কল্পনা করতে পারিনি'

শরীয়তপুর : প্র'সববে'দনা নিয়ে ভোরে শরীয়তপুর সদরের রূপসী বাংলা হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভর্তি হয়েছিলেন এসএসসি পরীক্ষার্থী শায়লা আক্তার। আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে দশটায় কন্যা সন্তানের জন্ম দেন তিনি। এরপর পরীক্ষা শুরু হবার আগেই ছুটে যান কেন্দ্রে পরীক্ষায় অংশ নিতে।

নির্বিঘ্নে পরীক্ষা দিয়ে আবারও হাসপাতালে নবজাতকের কাছে ছুটে আসেন শায়লা। শায়লা শরীয়তপুর পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের নীলকান্দি এলাকার সবুজ মিয়ার স্ত্রী।

শায়লার পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, আংগারীয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী শায়লা আক্তার। তিনি পাশের আংগারীয়া উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন। গত বছর ফেব্রুয়ারি মাসে নীলকান্দি এলাকার সবুজ মিয়ার সাথে বিয়ে হয় শায়লা আক্তারের। এরপরে সন্তান সম্ভবা হন শায়লা। গত ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে এসএসসি পরীক্ষা শুরু হয়। ওই অবস্থায় তিনি পরীক্ষা দিতে থাকেন।

আজ মঙ্গলবার ছিল তার ভূগোল পরীক্ষা। রাতে প্র'সব বে'দনা উঠলে ভোরে তাকে জেলা সদরের রুপসী বাংলা হাসপাতাল অ্যান্ড  ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভর্তি করেন স্বজনেরা। এরপর সকাল ১০টা ৩০ মিনিটের সময় কন্যা সন্তানের জন্ম দেন তিনি। সুস্থভাবে সন্তান জন্ম দেওয়ার পর শায়লা ছুটে যান পরীক্ষা কেন্দ্রে পরীক্ষায় অংশ নিতে। হাসপাতাল থেকে আংগারীয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের দূরত্ব ৫ কিলোমিটার।

পরিবারের সদস্যরা শায়লাকে নিয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে উপস্থিত হন বেলা ১১টার আগেই। কেন্দ্র সচিব ও শিক্ষকদের সহায়তায় তিনি আসনে বসে পরীক্ষা দেন। পরীক্ষা শেষে দুপুর দেড়টার দিকে আবার হাসপাতালে সন্তানের কাছে ফিরে আসেন। তার এমন অদম্য ইচ্ছে শক্তি দেখে শিক্ষক ও সহপাঠীরা অভিভূত ও আনন্দিত। আর ফুটফুটে কন্যা সন্তান জন্ম দেওয়ায় খুশি পরিবারের সদস্যরা।

শায়লা আক্তার বলেন, 'ছোট থেকেই পড়ালেখার প্রতি আমার অন্যরকম একটা অনুভূতি ছিল। আমি আল্লাহর কাছে কৃতজ্ঞ। সন্তান পেটে নিয়েই ৮টি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছি। আজ লিখিত পরীক্ষার শেষ দিনে আমার কোল আলোকিত হয়েছে। সুস্থভাবে পরীক্ষা দিতে পারায় আমি আমার পরিবার শিক্ষক ও চিকিৎসকদের প্রতি কৃতজ্ঞ। এখন আমি আমার কন্যা সন্তান সুস্থ আছি। '

শায়লার মা ইয়াসমিন আক্তার জানান, 'আমি আমার মেয়ে নিয়ে অনেক গর্বিত। ছোটবেলা থেকেই ক্লাস বাই ক্লাস ও ভালো রেজাল্ট করেছে। এমন একটা অবস্থায় যে ও পরীক্ষা দিবে তা কখনোই কল্পনা করতে পারিনি। '

শায়লার স্বামী সবুজ মিয়া বলেন, 'পরীক্ষা শুরু আগে থেকেই শায়লা আমাকে বলতো আমাকে তুমি শুধু একটু পড়ালেখার বিষয়ে সাপোর্ট দিও। স্বামী হিসেবে যতটুকু পেরেছি সব সময় ওকে সাপোর্ট দিয়ে গিয়েছি পড়ালেখার বিষয়ে। সন্তান জন্ম নেয়ার সাথে সাথেই ও পরীক্ষা কেন্দ্রে গিয়ে পরীক্ষা দিবে কখনই কল্পনা করতে পারিনি। আল্লাহ আমার কন্যা সন্তান ও কন্যা সন্তানের মাকে নেক হায়াত দান করুক। '