Bangladesh
This article was added by the user . TheWorldNews is not responsible for the content of the platform.

জঙ্গিবাদ দমনে সামাজিক জাগরণ জরুরি

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কঠোর অবস্থানের মধ্যেও জঙ্গি তৎপরতা থেমে নেই। জঙ্গিরা নানাভাবে নতুন করে সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করছে। বাংলাদেশে সক্রিয় জঙ্গি সংগঠনগুলোর মধ্যে বেশির ভাগই কোণঠাসা অবস্থায় থাকলেও শঙ্কা এখনো আনসার আল ইসলামকে নিয়ে। কয়েক বছর ধরে এই সংগঠনের সহিংস কর্মকাণ্ড না থাকলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা বলছেন, আনসার আল ইসলাম ভেতরে ভেতরে সুসংগঠিত হওয়ার কাজ করছে। তারা যদি আবারো সহিংস কর্মকাণ্ডে ফিরে আসে তবে বাংলাদেশের জন্য তা বড় শঙ্কার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। গতকাল ভোরের কাগজের খবরে প্রকাশ, কুমিল্লায় ৬ জন, সিলেটে ৪ জন এবং নারায়ণগঞ্জে কয়েকজনের হিজরতের ঘটনায় জঙ্গিবাদের নতুন মেরুকরণে নড়েচড়ে বসেছে গোয়েন্দারা। এর মধ্যে ডা. শাকির ধরা পড়ায় আনসার আল ইসলামের সদস্য সংগ্রহ কার্যক্রমের শেকড় খুঁজছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। পুরস্কার ঘোষিত শীর্ষ জঙ্গি নেতা সেনাবাহিনী থেকে চাকরিচ্যুত মেজর জিয়ার হাত ধরে তারা বড় ধরনের অপকর্মের সুযোগ খুঁজছে বলে গোয়েন্দাদের কাছে তথ্য রয়েছে। বিশেষ করে অনলাইন প্ল্যাটফর্মে চলছে তাদের কার্যক্রম। ব্যর্থ অভ্যুত্থান চেষ্টার পর ২০১১ সালের ডিসেম্বরে জিয়াকে সেনাবাহিনী থেকে চাকরিচ্যুত করার পর থেকেই সে পলাতক রয়েছে। প্রথম দিকে জিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের আরেক নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন হিযবুত তাহরীরের সঙ্গে সম্পৃক্ততার কথা শোনা গেলেও তিনি ২০১৩ সাল থেকে আনসার আল ইসলামের সঙ্গে সম্পৃক্ত হন। জিয়ার নির্দেশনা এবং শেখানো কৌশলেই ওই বছর থেকে দেশে ‘টার্গেটেড কিলিং’ শুরু হয়েছিল। ২০১৭ সালের ৫ মার্চ আনসার আল ইসলামের কার্যক্রমকেও নিষিদ্ধ ঘোষণা করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, এই সংগঠনের টার্গেট গ্রুপ হলো ব্লগার, নাস্তিক, সেক্যুলার, রাজনীতিবিদ ও মিডিয়া ব্যক্তিত্ব। বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ মোকাবিলার ক্ষেত্রে হলি আর্টিজান হামলা একটি মোড় ঘোরানো ঘটনা বলে মনে করি। বর্তমান সরকার সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি ঘোষণা করেছে। বলা যায়, দেশে জঙ্গি তৎপরতা এখন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। সাম্প্রতিক সময়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আগাম তথ্য নিয়ে বেশকিছু জঙ্গি আস্তানায় সফল অভিযান পরিচালনা করতে সক্ষম হচ্ছে। এই তৎপরতা অব্যাহত রাখতে হবে। জঙ্গি ধরপাকড়ের সঙ্গে সঙ্গে বন্ধ করতে হবে নতুন করে জঙ্গিবাদে যুক্ত হওয়ার ধারাও। পাশাপাশি জঙ্গি দমন অভিযান ও গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত থাকা অবস্থায় নব্য জেএমবি বা অন্য জঙ্গিগোষ্ঠীগুলোর গোপন তৎপরতা কীভাবে ও কিসের জোরে চলতে পারছে, তা গভীরভাবে জানার চেষ্টা করা দরকার। জঙ্গিগোষ্ঠীগুলোর অর্থায়ন কখনোই পুরোপুরি বন্ধ হয়নি, তাদের জনবল সংকটও কখনো স্থায়ী হয়নি। আমরা মনে করি, জঙ্গি অর্থায়ন বন্ধ হলে এদের তৎপরতাও কমে যাবে। জঙ্গিদের যে অর্থ তা খুব একটা দেশের বাইরে থেকে আসে না। অভ্যন্তরীণ লেনদেনের মাধ্যমেই জঙ্গিদের হাতে অর্থ যায়। এ বিষয়ে নজরদারি বাড়াতে হবে।