Bangladesh
This article was added by the user . TheWorldNews is not responsible for the content of the platform.

কখন আসছে বৈশ্বিক মন্দা?

চলতি বছরের শুরুতেই গুঞ্জন উঠেছিল বৈশ্বিক মন্দার। দিন দিন পরিস্থিতি যেদিকে গড়াচ্ছে তাতে সেই গুঞ্জন বাস্তব হওয়ার সম্ভাবনা জোড়ালো হচ্ছে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন অর্থনীতি বিশেষজ্ঞরা। 

গত সপ্তাহে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) প্রধান থেকে শুরু করে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী অর্থনীতিবিদ পল ক্রুগম্যান পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী মন্দার সম্ভাবনা সম্পর্কে শঙ্কার কথা জানিয়েছেন। বুধবার সুইজারল্যান্ডভিত্তিক ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, নেতৃস্থানীয় ২২টি বেসরকারি ও সরকারি খাতের ১০ জন অর্থনীতিবিদের মধ্যে সাতজনই বলেছেন যে, তাদের বিশ্বাস করেন, ২০২৩ সালে বিশ্বব্যাপী মন্দার মতো পরিস্থিতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

এদিকে, বৈশ্বিক মন্দা সম্ভাবনা বিষয়ক ফ্লোরিডাভিত্তিক গবেষণা সংস্থা নেড ডেভিস রিসার্চ ২০২৩ সালে বৈশ্বিক মন্দার সম্ভাবনাকে ৯৮ দশমিক ১ শতাংশে উন্নীত করেছে। ২০২০ সালের কোভিড-১৯ মহামারির পর মন্দার সর্বোচ্চ সম্ভাবনা।

ইউক্রেনের যুদ্ধ, চীনের কঠোর মহামারি নীতি এবং উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি সবই অর্থনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গিকে ঘোলাটে করে দিচ্ছে। বিনিয়োগকারীরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভের সুদের হার উচ্চমাত্রায় বাড়ানোর সম্ভাবনা নিয়ে উদ্বিগ্ন। এতে এটাই ইঙ্গিত মিলছে যে, বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতির দেশটি মন্দার দিকে যাচ্ছে। আর যুক্তরাষ্ট্রের এই যাত্রায় হয়তো সঙ্গী হতে হবে বিশ্বের অনেক দেশকে।

ঐতিহাসিকভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কগুলো অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য সুদের হার নিয়ন্ত্রণ কঠিন বলে মনে করেছে। উচ্চ সুদের হারের কারণে ব্যবসা ও গৃহস্থালি ঋণ এবং বিনিয়োগের খরচ বাড়ে। ১৯৮০ এর দশকে উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের জন্য সুদের হার বাড়িয়েছিল ফেডারেল রিজার্ভ। ওই সময় যে বৈশ্বিক মন্দা পরিস্থিতি দেখা দিয়েছিল তার জন্যমার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এই পদক্ষেপকে দায়ী করা হয়।

জেরেমি সিগেলের মতো খ্যাতিমান অর্থনীতিবিদসহ সমালোচকরা বলেছেন, সুদের হার বাড়ানোর জন্য দীর্ঘ সময় নিয়েছে ফেডারেল রিজার্ভ। আগের নিস্ক্রিয়তার কারণে বর্তমানে সৃষ্ট পরিস্থিতি মোকাবিলায় তারা এখন দ্রুত সুদের হার বাড়াচ্ছে, যার নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে অর্থনীতির ওপর।

জর্জ ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির সহকারী অধ্যাপক পাও-লিন তিয়েন আল জাজিরাকে বলেছেন, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যদি ২০২২ সালের শেষ কয়েক মাসে মুদ্রাস্ফীতি কমার কোনো লক্ষণ দেখা না যায় এবং মুদ্রাস্ফীতি বাড়তে শুরু করে, তাহলে এটি ফেডারেল রিজার্ভকে ২০২২ এবং ২০২৩ সালের বসন্ত পর্যন্ত সুদের হার আক্রমনাত্মকভাবে বৃদ্ধি অব্যাহত রাখতে বাধ্য করবে- আমার মতে তখনই অর্থনীতি মন্দার দিকে যাবে।’

তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোকে তাদের মুদ্রা রক্ষা করার জন্য বা মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সুদের হার আক্রমনাত্মকভাবে এবং ক্রমাগত বাড়াতে বাধ্য করা হলে একই পরিস্থিতি অন্যান্য দেশের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হবে- অনিবার্য হবে মন্দা।’