Bangladesh
This article was added by the user . TheWorldNews is not responsible for the content of the platform.

এবার যে কঠিন পরীক্ষার সামনে ইসরায়েল!

এবার যে কঠিন পরীক্ষার সামনে ইসরায়েল!

এবার যে কঠিন পরীক্ষার সামনে ইসরায়েল!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : হামাসের সঙ্গে যুদ্ধে কঠিন পরীক্ষার মুখোমুখি হয়েছে ইসরায়েলের আয়রন ডোম। গত ৭ অক্টোবর হামলা ঠেকাতে অনেকটা সফল, আবার ব্যর্থও হয়েছে তেল আবিবের এই প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি। 

কারণ, একসঙ্গে ছোড়া হামাসের কয়েক হাজার রকেট হামলার বেশ কিছু ধ্বংস করতে না পারায় সেগুলো আঘাত হেনেছে ইসরায়েলের বিভিন্ন এলাকায়। এতে প্রাণহানি হয়েছে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আয়রন ডোম প্রায় ৯০ শতাংশ কার্যকর। খবর এপি’র

আয়রন ডোম তৈরির পর ২০১১ সাল থেকে ইসরায়েল এটি ব্যবহার করে আসছে। এটি অত্যাধুনিক রকেট প্রতিরক্ষাব্যবস্থা। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, মাত্র দুই সপ্তাহে হামাস ইসরায়েলের দিকে সাত হাজার রকেট ছুড়েছে। 

২০০৭ সালে হামাস গাজার নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে চারটি যুদ্ধ হয়েছে। এর মধ্যে ৭ অক্টোবরের হামলা ছিল সবচেয়ে ভয়াবহ।

যুক্তরাষ্ট্র মিলিটারি একাডেমি ওয়েস্ট পয়েন্টের তথ্য অনুযায়ী, যুদ্ধের প্রথম দিনে হামাস অন্তত দুই হাজার রকেট ছোড়ে। যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর লেবাননের সশস্ত্র সংগঠন হিজবুল্লাহও ইসরায়েলের উত্তর অংশে শত শত রকেট ছুড়েছে। 

বেশির ভাগ রকেটই প্রতিহত করেছে ইসরায়েলি আয়রন ডোম। ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের মতে, সব আটকানো সম্ভব হয়নি। এসব রকেট তেল আবিব পর্যন্ত আঘাত হেনেছে।

আয়রন ডোম ব্যাটারির একটি সিরিজ। এটি আকাশে স্বল্প পরিসরের রকেট শনাক্তের সঙ্গে সঙ্গে সেগুলো ঠেকাতে রাডার ব্যবহার করে। 

মার্কিন প্রতিরক্ষা জায়ান্ট রেথিয়নের মতে, প্রতিটি ব্যাটারিতে তিন-চারটি লঞ্চার, ২০টি ক্ষেপণাস্ত্র ও একটি রাডার থাকে। ইসরায়েলের রাফায়েল প্রতিরক্ষা সিস্টেমের সঙ্গে এই সিস্টেমের সহ-উৎপাদন করেছে রেথিয়ন।

কোনো রকেট ছোড়া হলে রাডার সিস্টেমটি নিজে থেকেই শনাক্ত করে সেটি জনবহুল এলাকার দিকে যাচ্ছে কিনা। জনবহুল এলাকার দিকে এগোতে থাকলে এই আয়রন ডোম রকেটটি আটকাতে এবং ধ্বংস করার জন্য ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করে। 

রকেটটি কোনো উন্মুক্ত এলাকা বা সমুদ্রের দিকে যাচ্ছে বলে শনাক্ত করতে পারলে তাতে আর বাধা দেয় না এই প্রযুক্তি। কারণ, এতে অন্তত একটি ক্ষেপণাস্ত্র মজুত থাকে। সামরিক বাহিনীর তথ্যমতে, শুধু ইসরায়েলি আকাশসীমার মধ্যে এই ব্যবস্থা রকেটকে বাধা দেয়, অন্য ভূখণ্ডে নয়।

এখন কতসংখ্যক আয়রন ডোম ব্যাটারি মোতায়েন করা আছে, সে সম্পর্কে মন্তব্য করতে রাজি হয়নি ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী। 

কিন্তু ২০২১ সাল পর্যন্ত ইসরায়েলের ১০টি ব্যাটারি সারাদেশের বিভিন্ন পয়েন্টে মোতায়েন ছিল। রেথিয়নের মতে, প্রতিটি ব্যাটারি ১৫৫ বর্গকিলোমিটার এলাকার সুরক্ষা দিতে সক্ষম।

আয়রন ডোম একটি বৃহত্তর মাল্টি-লেয়ার এয়ার ডিফেন্স সিস্টেমের (আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থার) অংশ। এর মধ্যে রয়েছে অ্যারো, যা দূরপাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রকে বাধাগ্রস্ত করে। 

আর ডেভিডস স্লিং মাঝারি পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রকে বাধা দেয়। লেবাননে হিজবুল্লাহর এ ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে। আয়রন ডোম এখন পর্যন্ত ভালোই কাজ করছে। তবে হিজবুল্লাহ যুদ্ধে জড়ালে এটি সঠিকভাবে কাজ করতে পারবে কিনা– সেই ঝুঁকি রয়েছে। হিজবুল্লাহর আনুমানিক ১ লাখ ৫০ হাজার রকেট ও ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে। এসব দিয়ে একসঙ্গে হামলা চালালে আয়রন ডোম সব ক’টি আটকাতে পারবে না।

তেল আবিবের থিঙ্কট্যাঙ্ক ইনস্টিটিউট ফর ন্যাশনাল সিকিউরিটি স্টাডিজের তথ্য অনুসারে, প্রতিটি ক্ষেপণাস্ত্রের আনুমানিক মূল্য ৪০ হাজার থেকে ৫০ হাজার ডলার। যুক্তরাষ্ট্র এই সিস্টেমে ব্যাপক বিনিয়োগ করেছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, তিনি কংগ্রেসের কাছে ইসরায়েলের জন্য ১৪ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার সামরিক সহায়তা চাইবেন। হোয়াইট হাউসের তথ্যমতে, এর বেশির ভাগই বিমান ও ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষাব্যবস্থা বিকাশে সহায়তা করবে।