Bangladesh
This article was added by the user . TheWorldNews is not responsible for the content of the platform.

রাঙামাটিতে ৪২ মণ্ডপে দুর্গাপূজা, আজ মহাষষ্ঠী

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা শুরু হয়েছে আজ থেকে। আজ শনিবার (১ অক্টোবর) মহাষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে পাঁচদিনব্যাপী শারদীয়া দুগোৎবের শুরু হবে। আগামী ৫ অক্টোবর বিজয়া দশমীতে কাপ্তাই হ্রদের প্রতিমা বিসর্জনের মধ্যে দিয়ে মাকে বিদায় জানাবে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা।

পাহাড় ও লেক ঘেড়া রাঙামাটি জেলায় এ বছর ৪২টি মন্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। গতকাল রাত পর্যন্ত লাইটিং ও বিভিন্ন সাজ সজ্জার মধ্যে দিয়ে প্যান্ডেলের সব কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। এদিকে রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রতিটি পূজা মণ্ডপে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। রাঙ্গামাটির মন্ডপ গুলোতে গতকাল থেকে আনসার বাহিনীর সদস্যদের নিয়োগ দেয়া হয়েছে।

সকাল থেকে প্রতিটি মণ্ডপে মণ্ডপে মা দুর্গার বোধনের কাজ শুরু হয়েছে। সকাল থেকে মন্দিরে মন্দিরে ঢাকে কাঠি পড়েছে। এ পূজাকে ঘিরে প্রতিটি মন্দির কমিটি তাদের বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থাও জোরদার করা হয়েছে। প্রতিটি মণ্ডপকে সিসি ক্যামেরার আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে।

রাঙামাটি পৌর সভা ও সদর উপজেলার পূজামণ্ডপগুলো হচ্ছে শ্রী শ্রী গীতাশ্রম মন্দির, রিজার্ভ বাজার, আইচ ভবন পূজা মণ্ডপ, রিজার্ভ বাজার, শ্রী শ্রী বিশ্বনাথ মন্দির, নতুন জালিয়া পাড়া, রিজার্ভ বাজার, শ্রী শ্রী হরি মন্দির, ১৬ নং টিলা রিজার্ভ বাজার, শ্রী শ্রী রক্ষা কাল মন্দির, তবলছড়ি বাজার, শ্রী শ্রী দুর্গা মন্দির, স্বর্ণটিলা, শ্রী শ্রী শীতলা মন্দির, আসামবস্তি, শ্রী শ্রী নারায়ন মন্দির পুরাতন বাসষ্টেশন, শ্রী শ্রী কালী মাতৃ মন্দির, ভেদভেদী, শ্রী শ্রী দুর্গা মন্দির, কলেজ গেইট, শ্রী শ্রী দশ ভূজা মাতৃ মন্দির, দক্ষিণ কালিন্দীপুর, শ্রী শ্রী দুর্গা মাতৃ মন্দির, কাঠালতলী, শ্রী শ্রী অখণ্ড মণ্ডলী মন্দির, গর্জনতলী, শ্রী শ্রী কালী মন্দির, কিল্লামূড়া, রিজার্ভ বাজার।

কাপ্তাই উপজেলায় আটটি পূজামণ্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। মণ্ডপ গুলো হচ্ছে শ্রী শ্রী ত্রিপুরা সুন্দরী কালী বাড়ী, রাইখালী বাজার, শ্রী শ্রী দক্ষিণেশ্বর সিদ্বেশ্বরী কালী মন্দির, মিশন এলাকা, শ্রী শ্রী রাধাকৃঞ্চ মন্দির মিশন এলাকা, শ্রী শ্রী কর্ণফুলী প্রকল্প হরি মন্দির, কয়লার ডিপো, শ্রী শ্রী দুর্গা মন্দির রাম সিতা সংঘ শিলছড়ি, শ্রী শ্রী জয় কালী মন্দির লগ গেইট, শ্রী শ্রী সার্বজনীন মাতিৃ মন্দির ব্রিকফিল্ড, শ্রী শ্রী লোকনাথ মন্দির, ওয়াগ্গাছড়া, ওয়াগ্গা।

অপরূপ সাজে সেজেছে মা দুর্গা। ছবি: ভোরের কাগজ

বাঘাইছড়ি উপজেলায় পাঁচটি মন্দিরে পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। মন্ডপ গুলো হচ্ছে শ্রী শ্রী রক্ষা কালী মন্দির বাঘাইছড়ি সদর পৌরসভা, শ্রী শ্রী হরি মন্দির করেঙ্গাতলী, ৩৫ নং বঙ্গলতলী ইউনিয়ন, বাঘাইছড়ি, শ্রী শ্রী জগন্নাথ মন্দির, দুরছড়ি, ৩১ নং খেদারমারা ইউনিয়ন বাঘাইছড়ি, রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা, শ্রী শ্রী জগন্নাথ সেবাশ্রম মাচালং, ৩৬ নং সাজেক ইউনিয়ন, বাঘাইছড়ি, রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা, শ্রী শ্রী কৃঞ্চ মন্দির বাঘাইহাট, ৩৬ নং সাজেক ইউনিয়ন বাঘাইছড়ি, রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা।

কাউখালী উপজেলা উপজেলায় চারটি পূজা মন্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। মণ্ডপগুলো হচ্ছে শ্রী শ্রী গীতা মন্দির, কলমপতি, কাউখালী সদর, শ্রী শ্রী রাধা কৃঞ্চ সেবাশ্রম তালুকদার পাড়া, বেতবুনিয়া, শ্রী শ্রী গীতা মন্দির মাস্টার ঘোনা, বেতবুনিয়া, শ্রী শ্রী গীতা মন্দির, ঘাগড়া বাজার।

লংগদু উপজেলায় তিনটি মণ্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে পূজাগুলো হচ্ছে শ্রী শ্রী রাধাকৃঞ্চ সেবাশ্রম মাইনীমুখ, লংগদু, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা, শ্রী শ্রী হরি মন্দির, মাইনীমুখ, লংগদু, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা, শ্রী শ্রী শিব মন্দির মাইনীমুখ, লংগদু।

রাজস্থলী উপজেলায় তিনটি পূজা মণ্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। শ্রী শ্রী রাজস্থলী বাজার হরি মন্দির, ১ নং ঘিলাছড়ি, রাজস্থলী, শ্রী শ্রী দক্ষিণেশ্বরী কালী মন্দির ৩ নং বাঙ্গালহালিয়া, ছাগলখাইয়া শ্রী শ্রী কৃঞ্চ মন্দির ৩ নং বাঙ্গালহালিয়া রাজস্থলী।

বরকল উপজেলায় দুটি পূজা মণ্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে মণ্ডপগুলো হচ্ছে শ্রী শ্রী হরি মন্দির, ২ নং বরকল ইউনিয়ন, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা, শ্রী শ্রী হরি মন্দির, ১ নং সুবলং ইউনিয়ন, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা।

জুরাছড়ি, বিলাইছড়ি ও নানিয়ারচর উপজেলায় একটি করে পূজা মণ্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে মন্ডপ গুলো হচ্ছে শ্রী শ্রী রাম কৃঞ্চ সেবাশ্রম (শ্রী শ্রী হরি মন্দির) যক্ষা বাজার, জুরাছড়ি, রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা। নানিয়ারচর উপজেলা সার্বজনীন শ্রী শ্রী জগন্নাথ মন্দির, নানিয়ারচর সদর রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা। বিলাইছড়ি উপজেলা শ্রী শ্রী করুণাময়ী কালী মন্দির বিলাইছড়ি বাজার রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা।

রাঙ্গামাটি শহরের প্রাচীন মন্দির গীতাশ্রম মন্দিরের শারদীয় দুর্গাপূজা আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক রাজু প্রসাদ দে জানান, আমাদের মন্দিরের পূজা সব চেয়ে বড় হয়। আমরা এবছর প্রায় ১২ লক্ষ টাকা বাজেট ধরেছি। আমাদের পার্বত্য অঞ্চলে বিভিন্ন জাতি, ধর্ম, বর্ণ ও সম্প্রদায়ের মানুষের বসবাস। আমরা পূজাতে সকল ধর্মের মানুষের সহযোগিতা পেয়ে থাকি। পূজা আয়োজনে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষ আর্থিক, মানসিক এবং শারীরিকভাবে সহযোগিতা করে থাকে।

তিনি আরও বলেন, আমাদের প্রতিবছরই নানান থিমে আমরা প্রতিমা তৈরি করে থাকি। ঠিক এবছরও আমরা একটি থিমের ওপর প্রতিমা তৈরি করেছি। আশা করছি আমরা খুবই শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবছরের ন্যায় এবছরও দূর্গাপূজা উদযাপন করতে পারবো।

বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ রাঙাামটি সমন্বয় কমিটির সদস্য সচিব রণতোষ মল্লিক জানান, রাঙ্গামাটি শহরে ১৪টি এবং অন্যান্য ৯টি উপজেলায় ২৮টি মন্ডপসহ সর্বমোট জেলায় ৪২টি মন্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ইতিমধ্যে আমরা সরকারিভাবে যেসব সহযোগিতা পাওয়ার কথা ছিলো তা পেয়েছি। এছাড়া আমাদের সাথে জেলা প্রশাসনসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বৈঠক হয়েছে। আমরা সার্বিক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছি।

তিনি আরও বলেন, ইতোমধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বেশ কিছু নির্দেশনা পাওয়া গেছে। আমরা ১০ উপজেলার মঠ-মন্দিরের সভাপতি-সম্পাদকদের সঙ্গে বৈঠক করেছি। তাদেরকে নির্দেশনা দিয়েছি, যাতে যথাযথভাবে সরকারি নির্দেশনা মেনে পূজা উদযাপন করা হয়। প্রতিটি মঠ-মন্দিরে সিসি ক্যামেরা লাগানোর জন্য বলা হয়েছে। আশা করছি আমাদের কোন ধরণের সমস্যা হবে না। আমাদের কোন ঝুঁকিপূর্ণ মণ্ডপ নেই। আমরা মা দুর্গার কৃপায় সুন্দরভাবে দুর্গাপূজা উদযাপন করতে পারবো বলে আশা রাখছি।