Bangladesh
This article was added by the user . TheWorldNews is not responsible for the content of the platform.

শেখ রাসেল ২য় এমআইইউডিসি জাতীয় বিতর্ক প্রতিযোগিতা শুরু

জমকালো আয়োজনে মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে শুরু হয়েছে চার দিনব্যাপী শেখ রাসেল ২য় এমআইইউডিসি জাতীয় বিতর্ক প্রতিযোগিতা ২০২৩। আজ (বুধবার) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের গুলশান ক্যাম্পাসে প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করা হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মাননীয় মেয়র ও মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান মো. আতিকুল ইসলাম।

বাংলা সংসদীয় পদ্ধতির বিতর্ক প্রতিযোগিতার এবারের আসরে সারাদেশের ৩২টি সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এবং ২৪টি কলেজের বিতার্কিক দল অংশ নিচ্ছে। কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে আলাদা আলাদাভাবে প্রতিযোগিতার বিজয়ী নির্বাচন করা হবে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বিতর্ক প্রতিযোগিতা আয়োজনের জন্য আয়োজক মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ডিবেট ক্লাবের সদস্য এবং এতে অংশ নেয়া বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ থেকে অংশ নেয়া ছাত্র-ছাত্রীদেরকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘বিতর্কের উদ্দেশ্য হলে যুক্তি-তর্কের মাধ্যমে সত্য প্রতিষ্ঠা করা। এর মাধ্যমে কোনটি ঠিক, কোনটি ঠিক না তা প্রতিষ্ঠা করা যায়।’

মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘কোভিডের টিকা এনেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তখন একটা পক্ষ বলেছিল এগুলো কোভিডের টিকা না। এটি দিলে মানুষ মারা যাবে। পদ্মা সেতু ভেঙ্গে পড়ে যাবে বলেছিলেন অনেকে। অথচ পদ্মা সেতু তৈরিতে বিশ্বমানে প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে। সুতরাং ভেঙ্গে পড়ার কোন সম্ভাবনা নেই। যুক্তি-তর্কের মাধ্যমে বিরোধীতাকারীদের বুঝিয়ে দিতে হবে যে, এটা ভেঙ্গে পড়বে না। ঠিক যেমনি মানুষকে বোঝাতে হবে যে, কোভিডের টিকাও মানুষকে বাঁচিয়েছিল। বিতর্কের উদ্দেশ্যই হলো এই সত্যটা প্রতিষ্ঠা করা।’

তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের স্বাধীনতার প্রয়োজনীয়তা যুক্তি-তর্কের মাধ্যমে তুলে ধরেছিলেন। ফলে মানুষ স্বাধীনতা অর্জনের জন্য মানুষ জীবন উৎসর্গ করেছিল। ত্রিশ লক্ষ শহীদের বিনিময়ে আমরা পেয়েছিলাম স্বাধীনতা। সুতরাং যুক্তি-তর্কের শক্তি অনেক। এর মাধ্যমেই সত্য প্রতিষ্ঠা করা যায়।’

তিনি ছাত্র-ছাত্রীদের উদ্দেশে আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, শেখ রাসেল যদি বেঁচে থাকতো একজন ভালো মানুষ হিসেবে তাকে দেখতে পেতাম। সে জন্য তোমাদের প্রতিও আমার আহবান থাকবে তোমরা সবাই ভালো মানুষ হও। যুক্তি-তর্ক দিয়ে সত্যটি তুলে ধরো। আর সত্যই হলো সুন্দর। গুজবে কান না দিয়ে তোমরা সত্যকে তুলে ধরবে।’

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্য জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মেখলা সরকার, বাংলাদেশ মহিলা সমিতির সদস্য ইসরাত জাহান নাসরিন, ট্রেজারার অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আব্দুছ ছবুর খান এবং রেজিস্ট্রার ড. মো. মোয়াজ্জম হোসেন।

ডা. মেখলা সরকার ছাত্র-ছাত্রীদের উদ্দেশে বলেন, বিতর্কের উদ্দেশ্য হলো সত্য অনুসন্ধান করা এবং এটি বিপরীত মতকে সম্মান করতে শেখায়। বিতর্ক আমাাদেরকে চোখ খুলে দেয়। একটি বিষয় নিয়ে আমার যে চিন্তা বক্তব্য রয়েছে এর বাইরেও অনেক তথ্য বা বক্তব্য থাকতে পারে সেটা বোঝা যায় বিতর্কের মাধ্যমে। এ জন্য তোমাদেরকে পাঠ্য বইয়ের বাইরে গিয়েও অনেক পড়াশোনা করতে হবে।

ইসরাত জাহান নাসরিন বলেন, আজকে মানারাত ইউনভিার্সিটি শেখ রাসেলের নামে যে বিতর্ক প্রতিযোগিতা শুরু করেছে সে জন্য ডিবেট ক্লাবের সদস্যদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, আগামীতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে শেখ রাসেলের নামে এ রকম বিতর্ক প্রতিযোগিতা আয়োজন করা হবে।
ডিবেট ক্লাবের মডারেটর এবং সেন্টার ফর জেনারেল এডুকেশনের কোঅর্ডিনেটর ড. মোহাম্মাদ আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তৃতা করেন ট্রেজারার অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আব্দুছ ছবুর খান এবং রেজিস্ট্রার ড. মোঃ মোয়াজ্জম হোসেন।

অনুষ্ঠানের শুরুতে সদ্য ইন্তেকাল করা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মো. নজরুল ইসলামের মাগফেরাত কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত করা হয়। দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করেন স্কুল অব আর্টস অ্যান্ড হিউম্যানিটিসের ডিন ও ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের প্রধান ড. মোহাম্মদ ওবায়দুল্লাহ।

অন্যদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন, স্কুল অব ইঞ্জিনিয়ারিং, সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির ডিন ড. নারগিস সুলতানা চৌধুরী, স্কুল অব বিজনেস অ্যান্ড ইকোনোমিকসের ডিন মাহবুব আলম, ডিবেট ক্লাবের মডারেটর ও ইংরেজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ফারজানা জামান, সহকারী মডারেটর রেহমানা সুলতানা, স্টুডেন্ট অ্যাফেয়ার্সের অ্যাডিশনাল ডিরেক্টর আবদুল মতিন, ক্লাবের প্রেসিডেন্ট হাসিব আহমেদ, সেক্রেটারি সাগর পাটোয়ারি, ক্লাবের উপদেষ্টা মুরশেদ ও রাহত, শেখ রাসেল ২য় এমআইইউডিসি জাতীয় বিতর্ক প্রতিযোগিতা ২০২৩-এর আহবায়ক মাহমুদুল আলম রাসেল- সহ বিভিন্ন বিভাগের প্রধান, শিক্ষক এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ। অনুষ্ঠানটি উপস্থাপন করেন ডিবেট ক্লাবের উপদেষ্টা মোহসিনা শারমিনা নিশাত ও সাইফ আহমেদ খান।

অনুষ্ঠানে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মাননীয় মেয়র ও মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান মোঃ আতিকুল ইসলাম ডিবেট ক্লাবের পক্ষ থেকে ক্রেস্ট দেয়া হয়।

এবারের প্রতিযোগিতায় সার্বিক সহযোগিতায় রয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন ও স্বপ্নধারা। গোল্ড স্পন্সর হিসেব অংশ নিচ্ছে এমা। টি শার্ট পার্টনার হিসেবে সহযোগিতা করেছে স্বপ্নধরা। ২৮ অক্টোবর শনিবার বিকেলে ফাইনাল রাউন্ড, পুরস্কার বিতরণী ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে চার দিনব্যাপী এ বিতর্ক প্রতিযোগিতা সমাপ্ত হবে।