Bangladesh
This article was added by the user . TheWorldNews is not responsible for the content of the platform.

তরুণ প্রজন্ম এবং আগামীর বাংলাদেশ

তারুণ্যের পাশাপাশি দেশে কর্মক্ষম মানুষের পাল্লাও ভারি। মোট জনগোষ্ঠীর প্রায় ৬২ শতাংশ মানুষ কর্মক্ষম, যাদের বয়স ১৫-৫৯ বছরের মধ্যে। সংখ্যায় যা ১০ কোটি ৫০ লাখ। দেশের এত বিশালসংখ্যক তরুণকে সঠিক পথে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য আমাদের সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। আমরা আমাদের দেশে একদল মানবিক এবং মেধাসম্পন্ন তরুণ চাই, যারা দেশ গঠনে অন্যতম ভূমিকা পালন করতে পারে। মূলত শুধু অগ্রগতি এবং সমৃদ্ধির জন্য নয়, দেশের সংকট, দুর্দিনেও তরুণরা তাদের ভূমিকা রাখতে পারে। প্রকৃতপক্ষে একটি দেশের তরুণ শক্তি মেধাবী এবং উদ্যমী হলে যে কোনো দেশের সামাজিক প্রেক্ষাপটটাই পাল্টে দিতে পারে। তবে এক্ষেত্রে তরুণদের অবশ্যই সাবধান হতে হবে, কারণ তরুণ বয়সটা যেমন প্রাণশক্তিতে ভরপুর তেমনি এ বয়সে যে কোনো তরুণ বিপদগামী হতেও সময় লাগে না। ফলে এমন বিপদগামিতা থেকে তাদের সবসময় সাবধান থাকতে হবে। বর্তমানে তরুণদের মধ্যে অনেককেই মাদকাসক্ত হয়ে সমাজে নানা ধরনের অনৈতিক কাজে জড়িয়ে পড়তে দেখা যায়। এ ধরনের অনৈতিক কাজ থেকে তাদের অবশ্যই বিরত থাকতে হবে। মাদকের কড়াল গ্রাসে যাতে তরুণরা আক্রান্ত হতে না পারে এ বিষয় আমাদের সমাজে বয়োজ্যেষ্ঠরা যারা আছে তাদেরও কিছু করণীয় রয়েছে। এসব তরুণ যাতে মাদকের দিকে পা না বাড়ায় তার জন্য পাড়ায় পাড়ায় মাঠ তৈরি করে সেখানে খেলাধুলার ব্যবস্থা করতে হবে, বই পড়ার ব্যবস্থা করতে হবে এবং সৃজনশীল মেধা গঠনের জন্য পাঠাগারের তৈরির ব্যবস্থা করতে হবে। প্রতিটি পাড়ায় তরুণদের উদ্যোগে বিভিন্ন সংগঠন করে এ কাজকে আরো ত্বরান্বিত করা যায়। মূলত সুকুমার প্রবৃত্তিগুলো তরুণদের মাঝে জাগিয়ে তুলতে পারলেই তারা কখনো বিপদগামী হবে না। এক সময় আমাদের দেশে তরুণদের মাঝে খেলাধুলা, গান-বাজনা এবং বিভিন্ন গ্রামীণ সংস্কৃতির প্রতি ঝোঁক ছিল বেশি। বর্তমানে তারা নেট দুনিয়া নিয়ে ব্যস্ত থাকে বেশি। বয়স হতে না হতেই অভিভাবকদের মধ্যে অনেকেই তার তরুণ সন্তানকে এনড্রয়েট মোবাইল কিনে, ফলে এ মোবাইলের অনেকেই অপব্যবহার করে বিপথে যায়। আমাদের অভিভাবকদের মধ্যে অনেক অসচেতন অভিভাবক আছে, যারা জানেও না তার তরুণ সন্তানটি প্রতিদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যায় কিনা কিংবা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নাম দিয়ে সে কোথায় যায়। এ বিষয়ে অভিভাবকদের যথেষ্ট সাবধানী হতে হবে। তার উঠতি বয়সি সন্তানটি প্রতিদিন কোথায় যাচ্ছে, কার সঙ্গে যাচ্ছে এবং সে সঠিক কাজ করছে কিনা- এগুলো অভিভাবকদের অবশ্যই খোঁজখবর রাখতে হবে। প্রয়োজনে তরুণদের মধ্যে কেউ বিপদগামী হলে তাকে পারিবারিকভাবে সুন্দর করে বোঝাতে হবে। খুব বেশি বিপদগামী হলে তাকে কাউন্সেলিংয়ের মাধ্যমে সুস্থ সামাজিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে হবে। আগামীর সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠনে আমাদের তরুণরা তাদের অফুরন্ত প্রাণশক্তি আর মেধাকে কাজে লাগাবেন- এমন প্রত্যাশা সবার।

রতন কুমার তুরী : লেখক এবং শিক্ষক।
[email protected]