Bangladesh
This article was added by the user . TheWorldNews is not responsible for the content of the platform.

আগামিকাল শিল্পের মহাযজ্ঞের দ্বার খুলবেন প্রধানমন্ত্রী

পৃথিবীর ১৫ দেশের বিচিত্র সব শিল্পকর্ম এখন বাংলাদেশে। শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালার দেয়াল, মেঝেতে মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে। চিত্রশালার করিডরে, ভবনের বাইরের করিডরের নানা জায়গায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে বিদগ্ধ শিল্পীর অভিজ্ঞতার ফসল।

বৃহস্পতিবার (৮ ডিসেম্বর) সকাল ১০টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবার জন্য খুলে দেবেন চিত্রশালার দরজা। এবারের আসরে বাংলাদেশের বাইরে অংশগ্রহণকারী বাকি দেশের মধ্যে আর্জেন্টিনা, অ্যাঙ্গোলা, বেনিন, ক্যামেরুন, মরক্কো, দক্ষিণ আফ্রিকা, থাইল্যান্ড, তিউনিসিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, ভেনিজুয়েলা, আফগানিস্তান, চীন, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, রাশিয়া, সিঙ্গাপুর, ফ্রান্স, জার্মানি, গ্রিস, ইতালি, যুক্তরাজ্য এবং ইউক্রেনসহ ১১৪টি দেশের শিল্পকর্ম দেখার বিরল সুযোগ পাবেন বাংলাদেশের শিল্পপ্রেমীরা। প্রদর্শনী উৎসর্গ করা হয়েছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে।

১৯তম দ্বিবার্ষিক এশীয় চারুকলা প্রদর্শনীর উদ্বোধনীতে বিশেষ অতিথি থাকবেন জুরি বোর্ডের সভাপতি ও বরেণ্য চিত্রশিল্পী রফিকুন নবী এবং জুরি বোর্ডের সদস্য পোলিশ শিল্প-সমালোচক জ্যারোস্ল সুহান। সভাপতিত্ব করবেন সংস্কৃতিমন্ত্রী কে এম খালিদ।

উদ্বোধন এবং পুরস্কার বিতরণ শেষে ২০ মিনিটের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন শিল্পকলা একাডেমির শিল্পীরা। মাসব্যাপী প্রতিদিন বেলা ১১টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত সব শ্রেণির দর্শকের জন্য খোলা থাকবে এ প্রদর্শনী।

১৯৮১ সালে ১৪টি দেশের অংশগ্রহণে শুরু হয়েছিল এশিয়ান আর্ট বিয়েনাল। চার দশক ধরে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি বিরতিহীনভাবে আয়োজন করে যাচ্ছে মর্যাদাপূর্ণ আন্তর্জাতিক এ প্রদর্শনীটি। বলা যায় সেই আয়োজন ছড়িয়ে পড়েছে ইউরোপ, দক্ষিণ আমেরিকা, উত্তর আমেরিকা ও আফ্রিকায়। এবার ১১৪টি দেশ এ প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণ করছে, যা এযাবৎকালের রেকর্ড।

দুই বছর অন্তর অনুষ্ঠিত এ আয়োজনে গেল ১৮তম আয়োজনের তুলনায় এবার অংশগ্রহণকারী দেশের সংখ্যা যেমন বেড়েছে, তেমনি শিল্পকর্মের সংখ্যাও বেশি। পাশাপাশি দেশি-বিদেশি কিউরেটরদের দিয়ে এবারের প্রদর্শনী সাজানো হচ্ছে। প্রদর্শনীতে এবার দেখা যাবে ত্রিমাত্রিক শিল্পকর্ম, থাকছে নানা মাধ্যমের চিত্রকলা, ছাপচিত্র, ভাস্কর্য, আলোকচিত্র, স্থাপনাশিল্প, পারফরম্যান্স আর্ট, নিউ মিডিয়ার শিল্পকর্ম।

জানা গেছে, এবারের আয়োজনে বাংলাদেশসহ মোট ৪৯৩ শিল্পীর ৬৪৯টি শিল্পকর্ম স্থান পাচ্ছে। এদের মধ্যে নির্বাচিত ১৪৯জন বাংলাদেশী শিল্পীর ১৫৬টি শিল্পকর্ম। বিদেশী শিল্পীদের মধ্যে ১১৩টি নির্বাচিত দেশের ৩৪৪জন নির্বাচিত শিল্পীর ৪৯৩টি শিল্পকর্ম স্থান পাচ্ছে।

এবারের আয়োজনে স্থান পাওয়াদের মধ্যে রয়েছেন গ্রিসের ড্যানে স্ট্রাও, ঘানার ইব্রাহিম মাহামা, যুক্তরাজ্যের সুসান কলিন্স, নেপালের সুনিতা মহারাজ, কোরিয়ার মি ইয়ং আর্কিম, ইতালির অ্যালেক্স সালা ও যুক্তরাজ্যের কিমভি নুয়েন। চিত্রকর্ম, স্থাপনাশিল্প থেকে পারফরমিং আর্টের মাধ্যমে প্রদর্শনীতে নবমাত্রা জোগ করবেন বিশ্বব্যাপী সমাদৃত এই শিল্পীরা। বিশ্বখ্যাত এসব শিল্পীর সমান্তরালে প্রদর্শনীতে আলো ছড়াবে বাংলাদেশের বরেণ্য ও প্রতিভাবান শিল্পীদের শিল্পকর্ম। সেই সুবাদে দেশের মাস্টার পেইন্টারদের শিল্পকর্ম নিয়ে থাকবে বিশেষ আয়োজন। শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন, পটুয়া কামরুল হাসান, এস এম সুলতান, সফিউদ্দিন আহমদ, কাইয়ুম চৌধুরীসহ দেশের পৃথিকৃৎ ও প্রয়াত বরেণ্য শিল্পীদের সৃষ্ট শিল্পকর্মও। এ ছাড়া উৎসবে বিদেশি শিল্পী যারা আসছেন, তাদের নিয়ে সেমিনার, শিল্পবিষয়ক পর্যালোচনামূলক আলোচনা, আর্ট ট্রিপ ও কর্মশালার আয়োজন করা হচ্ছে আয়োজকদের পক্ষ থেকে।বিদেশি শিল্পীদের বাংলাদেশে সাত দিন থাকা খাওয়ার পাশাপাশি তাদের নিয়ে দেশের নানা প্রান্তে ভ্রমণের ব্যবস্থাও করা হয়েছে।

এনজে