Bangladesh
This article was added by the user . TheWorldNews is not responsible for the content of the platform.

আঞ্চলিক উন্নয়ন : সমন্বিত উন্নয়নের স্বার্থে

দেশের সার্বিক ও সমন্বিত উন্নয়ন সমস্যা ও সম্ভাবনা প্রসঙ্গের মধ্যে যেটি সচরাচর সামনে আসে তা হলো, উন্নয়নের নামে, বাজেটে উন্নয়ন বরাদ্দে আঞ্চলিক বৈষম্য কিংবা আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপট প্রান্তরে অঞ্চলভেদে, খাত ও ক্ষেত্রভেদে আইন ও অধিকারগত কোনো ব্যত্যয় ঘটে কিনা, ঘটলে তার মাত্রা ও প্রকৃতি কেমন। এ কথা অস্বীকারের জো নেই যে, উন্নয়ন বরাদ্দের ক্ষেত্রে অঞ্চলভেদে সাধারণত গোষ্ঠী বা দলীয় বিবেচনা প্র্রাধান্য পায়। নানা গবেষণা প্রতিবেদনে দেখা গেছে, রাষ্ট্রের চেয়ে সরকারের সদিচ্ছার ওপর নির্ভর করে আঞ্চলিক উন্নয়ন। এটা ঐতিহাসিক সত্য, আর্থসামাজিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে সরকার সৃষ্ট আঞ্চলিক বৈষম্যের অবসান আকাক্সক্ষাই ছিল পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের মূল লক্ষ্য ও প্রেরণা। তৎকালীন পাকিস্তানের নীতিনির্ধারক রাজনীতিক ও সামরিক-বেসামরিক প্রভাবশালী আমলার অধিকাংশই ছিলেন পশ্চিম পাকিস্তানি। এ সুবাদে ‘পূর্ব’-এর তুলনায় ‘পশ্চিম’ পাকিস্তানে তুলনামূলকভাবে বেশি উন্নয়ন হয়েছিল অঞ্চলভিত্তিক। পশ্চিম পাকিস্তানেই সিংহভাগ বৈদেশিক সাহায্য ব্যবহার ও উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়িত হতো। অন্যদিকে বাংলাদেশ বা পূর্ব পাকিস্তান ছিল বরাবরই বরাদ্দ বঞ্চিত। এই বৈষম্যের কথা তুলেই বাংলাদেশের স্বাধিকার এবং স্বাধিকার থেকে স্বাধীনতা অর্জনের দাবি ওঠে, আকাক্সক্ষা জাগ্রত হয়। ইতিহাস খ্যাত ‘ছয় দফা’ দাবির অন্যতম মর্মবাণীও ছিল- ‘পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের মধ্যকার অর্থনৈতিক ও উন্নয়ন বৈষম্য দূর করার পথ ও পন্থা বের করতে হবে’।
এ প্রেক্ষাপটেই শোষণ, বঞ্চনা, বৈষম্য দূরীকরণার্থে স্বাধীনতা অর্জনের পর বাংলাদেশে কেন্দ্রীভূত চিন্তাচেতনায় পরিকল্পনা কমিশন গঠন করা হয়। সব অঞ্চলের সমান সুবিধাপ্রাপ্তির কথা মাথায় রেখেই এই কেন্দ্রীয় ভাবনার মহামহিম কমিশন গঠিত হয়। এসব কথা কমিশন গঠনের গৌরচন্দ্রিকায় উদ্দেশ্য ও বিধেয় হিসেবে লেখা থাকলেও বাস্তবে দেখা যায় বশংবদ ভিন্ন চিত্র। সুবিধা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে দেখা গেল, সাবেক পাকিস্তানের মতোই বিশেষ দল, মত, গোষ্ঠী, নেতা, কর্মকর্তা বা অঞ্চল প্রাধান্য পেতে থাকছে। যার ফলে দেশের উত্তর ও দক্ষিণ অঞ্চল দীর্ঘদিন অবহেলার শিকার হয়। যমুনা নদীর ওপর বহুমুখী সেতু নির্মাণের পর উত্তরবঙ্গে নানাবিধ উন্নয়ন প্রকল্প শুরু ও বাস্তবায়ন সহজ হচ্ছে। নির্মীয়মাণ পদ্মা সেতু চালুর ওপর নির্ভর করবে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের সুষম উন্নয়ন। আমাদের সংবিধানে লেখা আছে- জন্মস্থান, বংশ, ধর্ম, অঞ্চল নির্বিশেষে সবার সমান সুযোগ-সুবিধা প্রাপ্তির মৌলিক অধিকার থাকবে। কিন্তু বাস্তবে মৌলিক অধিকার প্রাপ্তি প্রশ্নাতীত হয় না অনেক সময় ও ক্ষেত্রে। বশংবদ নানা জটিলতা ও অপারগতার কারণ তো রয়েছেই। যে কোনো আঞ্চলিক উন্নয়নের সুবিধা ক্ষমতাসীন দল, নীতিনির্ধারক কর্মকর্তারা বেশি ভোগ করেন। সবার মৌলিক অধিকার সমভাবে সুনিশ্চিতকরণের ক্ষেত্রে, যা যথেষ্ট বিচ্যুতি বা ব্যত্যয় বলা যায়।
২০০৭/০৮ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকার দেশের পিছিয়ে পড়া অঞ্চলের উন্নয়নের সমস্যা জানা এবং প্রতিকার এর উদ্যোগ নিয়েছিল। সে সময় সরকার গঠিত উচ্চ পর্যায়ের কমিটির গবেষণায় দেখা যায় বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল সঙ্গে পদ্মার দক্ষিণ-পশ্চিম পাড়ের জনগণ অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও সামাজিক সৌভাগ্য অবগাহনে তুলনামূলকভাবে বেশ পিছিয়ে রয়েছে। পদ্মার ওপারে বিশেষত, বরিশাল ও খুলনায় উন্নয়নের ছোঁয়া পড়েছে বেশ কম। এমনকি বিদেশে শ্রমিক পাঠানোর ক্ষেত্রেও এই অঞ্চলের জনগোষ্ঠী যথেষ্ট বিলম্ব ও বৈষম্যের শিকার হয়েছে। অন্যদিকে চট্টগ্রাম বিভাগের চাঁদপুর, ফেনী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ঢাকার মুন্সীগঞ্জ তথা বিক্রমপুরের বাসিন্দারা বিদেশে চাকরির সুবিধা বেশি ভোগ করছেন। ফলে খুলনা বা বরিশালের চেয়ে এসব অঞ্চলের মানুষের অর্থনৈতিক জীবনযাত্রার মান যথেষ্ট বৃদ্ধি পেয়েছে। অথচ শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে দেশের উত্তর ও দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চল তো পিছিয়েই, এডিপিতে এসব অঞ্চলের উন্নয়ন প্রকল্প তালিকা তত্ত্ব তালাশেও দেখা গেছে, অবকাঠামোগত উন্নয়ন অভিযাত্রায় তারা যথেষ্ট পিছিয়ে। বাংলাদেশের জিডিপির শতকরা ২৫ শতাংশ আসে উপকূলীয় অঞ্চল থেকে। এখানে রয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় গরান বন (ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট), দুটি প্রধান সমুদ্রবন্দর, বিশ্বের দীর্ঘতম আনব্রোকেন সি-বিচ। অথচ উপকূলীয় অঞ্চলের স্থায়ী উন্নয়নে কেন্দ্রীয়ভাবে বিশেষ মনোযোগ এর অভাব পরিলক্ষিত হয়। এক পর্যায়ে একটি উপকূল উন্নয়ন বোর্ড গঠনের কথা বলা হয়েছিল। কিছু কথা-বার্তা হলেও আলোর মুখ দেখেনি সে পরিকল্পনা। তার মূল কারণ একটাই। উপকূলীয় অঞ্চলের জনপ্রতিনিধিরা না সরকারে, না প্রশাসনে শক্তিশালী ভূমিকায় ছিল বা আছে। বাংলাদেশের উপকূল বরাবরই উপদ্রুত ও সুবিধা বঞ্চিত রয়েছে। অতি সম্ভাবনাময় ও সম্পদশালী উপকূলীয় অঞ্চল এবং সেখানকার মানুষরা রয়েছে এখনো অরক্ষিত। আইলা বা সিডরের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রায়ই এই অঞ্চলের মানুষকে মোকাবিলা করতে হয়। অভিযোগ ওঠে, সিডর ও আইলাতে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের ক্ষতিপূরণ পেতেও সমস্যা হয়েছে। সুন্দরবনে ক্ষতিগ্রস্ত জীববৈচিত্র্য পুনর্গঠন পুনবার্সন মনোযোগে রয়েছে সবিশেষ অপারগতা আর উ™£ান্ত উপেক্ষা। সব কিছুর মূলে রয়েছে ক্ষমতায়নের অসমতা, অপারগতা আর অঞ্চলভিত্তিক বৈষম্যের বিলাস।
রাজনৈতিক দলগুলো জাতীয় নির্বাচনের আগে ইশতেহার ঘোষণা করে। প্রতিশ্রæতি দেয় দেশ পরিচালনার দায়িত্ব পেলে তারা তদানুযায়ী কাজ করবে। নির্বাচনী ইশতেহার অনুযায়ী উন্নয়ন কর্মকাণ্ড পরিচালনাকে রাজনৈতিক পক্ষপাতিত্ব বলা যেতে পারে এবং এর প্রছন্ন প্রভাব পড়ে আঞ্চলিক উন্নয়নে। দেখা যায়, জনপ্রতিনিধিরা নির্বাচনী প্রচারণায় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হওয়ার ক্ষেত্রে তারা শুধু নিজের এলাকার উন্নয়নের কথা বলেন। স্থানীয় সরকারে নির্বাচিত প্রতিনিধিরাও নিজেদের জনপ্রিয়তার বিষয় বিবেচনায় রেখে স্থানীয়ভাবে কর বা শুল্ক আরোপ করতে চান না। ভাবেন, এতে তার ভোট নষ্ট হবে। কিন্তু এমনটা হওয়া উচিত নয়। সব উন্নয়ন সব সরকারকেই করতে হবে। উন্নয়নের জন্য অর্থের প্রয়োজন। জনগণকে বোঝাতে হবে, আপনার অর্থ ব্যয় করা হবে আপনারই সেবায়। উন্নয়ন হওয়া দরকার সার্বিক ও নিরপেক্ষভাবে।
বেশ কয়েক বছর ব্র্যাক পরিচালিত এক গবেষণায় দেখানো হয়েছিল- নব্বইয়ের দশক থেকে ক্ষমতাসীন দল কিংবা প্রভাবশালী মন্ত্রীরা শুধু নিজেদের এলাকার উন্নয়ন করেছেন। এই তথ্যের সঙ্গে দ্বিমত পোষণের অবকাশ নেই। জাতীয় বাজেটের ওপর আলোচনাকালে সংসদে দেখা যায় সংসদ সদস্যরা প্রস্তাব উত্থাপন করেন, ‘মাননীয় স্পিকার আমার অমুক এলাকায় ডাকঘর হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বাজেটে তা দেখতে পাচ্ছি না।’ বাজেট তো জাতীয় উন্নয়নের দলিল। এখানে আঞ্চলিক স্বার্থ বা নিজের স্বার্থ মুখ্য হতে পারে না। জাতীয় বাজেটের পর্যালোচনায় আলোচিত হবে- কোন দিক-দর্শন, কোন কর্মপদ্ধতি সামগ্রিক উন্নয়নে কাজ করবে তার ওপর। ড. আকবর আলি খান এক চমৎকার গবেষণার ভিত্তিতে উল্লেখ করেছিলেন- বাজেট পর্যালোচনায় প্রাপ্ত ১০ মিনিটের সুযোগ ও সময়ের সিংহভাগ সংসদ সদস্যরা প্রতিজনই ৬ মিনিট অর্থাৎ ৬০ শতাংশ সময় ব্যয় করেন দলের নেতাসহ অন্যদের স্তুতি ও বন্দনাগীতিতে। বাকি ৪ মিনিটে তারা নিজের কিংবা নিজ অঞ্চলের স্বার্থের কথা তুলে ধরেন। অথচ যেখানে জাতীয় বাজেটে দেশের সামগ্রিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা ও পরামর্শ প্রস্তাব করাই বাঞ্ছিত ছিল। একইভাবে বিরোধী দলের অধিকাংশ সদস্য প্রথম ৬ মিনিট বাজেটের কূটসমালোচনা করেন পরে নিজের কিছু কথা থাকলে, তা বলেন। এতে জাতীয় স্বার্থের প্রতিফলন ঘটে না। বিশেষ করে, বৈদেশিক সাহায্যের ব্যবহার বিধি পদ্ধতি প্রক্রিয়া নিয়ে সংসদে সচরাচর কোনো আলোচনা হয় না। হলে দেশবাসী বুঝতে পারত উন্নয়ন কোথায় কী হচ্ছে, কীভাবে বিদেশের সহায়তা ব্যয় হচ্ছে, কোন কোন শর্তে কী প্রকার ও পরিমাণে বিদেশি ঋণ বা অনুদান সহায়তা নেয়া হচ্ছে। বাজেট বরাদ্দের ক্ষেত্রে জাতীয় স্বার্থ, সংহতি ও দেশের সার্বিক উন্নয়নের প্রতিফলন হওয়া সবচেয়ে জরুরি। দেখা গিয়েছে সংসদে উত্থাপিত লিখিত তারকা চিহ্নিত প্রশ্নগুলোও একই ধারায় হয়ে থাকে। প্রশ্ন আসে- ‘মাননীয় মন্ত্রী বলবেন কি এই পর্যন্ত আমরা কত বৈদেশিক সাহায্য পেয়েছি’? এটা মহান জাতীয় সংসদে উত্থাপনযোগ্য কোনো প্রশ্ন হতে পারে না। এসব তথ্য সবখানেই পাওয়া যায়। বরং প্রশ্ন হতে পারত- ‘এই পর্যন্ত বিভিন্ন খাতে পাওয়া আমাদের বৈদেশিক সাহায্য দিয়ে কোন কোন এলাকায় কী ধরনের উন্নতি হয়েছে’? তাহলে ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণের মাধ্যমে জনগণ তা জানতে পারতেন। সম্মানিত জনপ্রতিনিধিরা এই ধরনের প্রশ্ন করে জাতীয় চেতনাকে শানিত ও উজ্জীবিত করতে পারেন। প্রতিষ্ঠা করতে পারেন জবাবদিহির পরিবেশ। এসব সমস্যা সমাধানের সময় ফুরিয়ে যায়নি। মধ্যম আয়ের দেশে উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাওয়ার প্রয়াসে সব সময় থাকতে হবে সংস্কারের, উন্নয়নের। বাজেট বরাদ্দ বিভাজনকালে দেখা সমীচীন হবে এমন কতিপয় প্রস্তাব-
প্রথমত, সব অঞ্চলের সমউন্নয়নে কেন্দ্রীয়ভাবে নীতিমালা প্রণয়ন ও প্রতিফলনে প্রতিশ্রæতি মনে রেখে দাতা গোষ্ঠীর সব উন্নয়ন সাহায্য অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সমানভাবে বণ্টনে অঞ্চল ও ক্ষমতায়নে বৈষম্য বাদ দিয়ে সবার প্রতি সমান দৃষ্টিভঙ্গি রাখতে হবে। দ্বিতীয়ত, দীর্ঘ বছরে পিছিয়ে পড়া অঞ্চলগুলোকে উন্নয়নের মাধ্যমে এগিয়ে নিতে হবে। অবহেলিত অঞ্চলগুলোতে তাই বিশেষ উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ জরুরি। যে অঞ্চলের মানুষের ক্ষমতায়নের সুযোগ রয়েছে তারাই সব সুবিধা পাবে এই মনোভাব নয় সব অঞ্চলে উন্নতি হলেই সার্বিক উন্নতি সম্ভব হবে এই চেতনা পরিব্যাপত হতে হবে। আপাতত দেশের সার্বিক উন্নয়নের জন্য হলেও সমঅধিকারের একটি নীতিগত সিদ্ধান্তে আসা প্রয়োজন। তৃতীয়ত, বৈদেশিক সাহায্যের ব্যবহার সাংবিধানিক প্রক্রিয়ায় হওয়া উচিত। যে কোনো বৈদেশিক সাহায্য প্রস্তাব নিয়ে প্রথমে সংসদে আলোচনা হবে। এরপর এই সাহায্য কোথায়, কেন, কীভাবে, কী শর্তে ব্যবহƒত হচ্ছে তার সব কিছু বিস্তারিত আলোচনার মাধ্যমে সাব্যস্ত হবে। এই বিষয়গুলো মাথায় রেখে নীতিনির্ধারক মহলে সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত। চতুর্থত, আমাদের পরিকল্পনা নীতিতে গোটা দেশকে ইকোনমিক জোনিং করার বিষয় উল্লেখ আছে। অর্থাৎ অর্থনৈতিক উন্নয়নের ভিত্তিতে এলাকাগুলোকে ভাগ করতে হবে। কোন এলাকায় কোন শিল্প হবে, কোন এলাকা শিল্পাঞ্চল নাকি কৃষি প্রাধান্য পাবে তা কেন্দ্রীয়ভাবে নির্ধারণ করে রাখা উচিত। যেমন- উত্তরবঙ্গের কাঁচামালের প্রাপ্যতা অনুযায়ী সেখানে সেই ধরনের শিল্প গড়ে তুলতে হবে। আবার দক্ষিণাঞ্চলে মাছের প্রাপ্যতাভিত্তিক ফিশ প্রসেসিং, পোনা চাষনির্ভর শিল্প গড়ে উঠবে। এভাবেই সম্ভাবনাভিত্তিক প্রতিটি অঞ্চলকে ইকোনমিক জোন বা অর্থনৈতিক সম্ভাবনা অনুযায়ী ভাগ করা উচিত। পঞ্চমত, অনগ্রসর এলাকাগুলোর জন্য শুল্কনীতি, বাণিজ্যনীতি, রপ্তানিনীতি ও বিদেশে শ্রমিক পাঠানোর ক্ষেত্রে নীতিমালা শিথিল বা সমন্বয় করা উচিত।
আঞ্চলিক বা অর্থনৈতিক বৈষম্যের সৃষ্টি হলে অসন্তোষ সৃষ্টি হয়। ভারতের প্রয়াত রাষ্ট্রপতি এ পি জে আবদুল কালাম বাংলাদেশ সফরকালে বলেছিলেন- সমতার ভিত্তিতে সবা ও সব অঞ্চলের টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়ন হলে এবং প্রতিহিংসাপরায়ণ পক্ষপাতিত্বপূর্ণ আচরণ হ্রাস পেলে জাতীয় সংহতি শক্তিশালী হয় এবং সন্ত্রাস হ্রাস পায়।

ড. মোহাম্মদ আবদুল মজিদ : উন্নয়ন অর্থনীতির বিশ্লেষক।
[email protected]