Bangladesh
This article was added by the user . TheWorldNews is not responsible for the content of the platform.

বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে প্রতিমা বিসর্জন

# উভয় পাড়ে হাজার হাজার মানুষের ভিড়

উৎসাহ, উদ্দীপনা ও আনন্দ-উল্লাসে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যেবর্তী ইছামতি নদীতে নিজ নিজ কিনারায় সমাপ্ত হয়েছে বিজয়া দশমী উৎসব। এতে দুই দেশের মানুষের একে অপরের সঙ্গে মিলেমিশে একাকার হতে পারেনি। কয়েক বছর ধরে দুই দেশের মানুষের অংশগ্রহণের মিলন মেলাটি বন্ধ হওয়া সব শ্রেণির মানুষের মাঝে আমেজ কমেছে।

সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলাধীন ইছামতি নদীর টাউনশ্রীপুরে ও ভারতের টাকি পৌরসভা এলাকায় প্রায় ১০ কিলোমিটারজুড়ে বসত এই মেলা। এতে অংশ নেয় দুই বাংলার লাখো মানুষ।

বুধবার বাংলাদেশ-ভারত দুই দেশের মধ্যে মিলনমেলা দেখতে না পাওয়া গেলেও নিজ নিজ সীমারেখার মধ্যে অনুষ্ঠিত হয় বিজয়া দশমীর প্রতিমা বিসর্জন। নদীর জিরো পয়েন্টে ডিঙ্গি নৌকায় লাল ফ্লাগ উড়িয়ে দুই দেশের সীমানা নির্ধারণ করতে দেখা যায়। দেশের দক্ষিণাঞ্চলের সবচেয়ে বড় ও ঐতিহ্যবাহী প্রতিমা বিসর্জনস্থল দেবহাটার ইছামতি নদী।

দেবী দুর্গার প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হয় হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সর্ব বৃহৎ উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। বিগত দিনগুলোতে এই বিসর্জনকে ঘিরে অনুষ্ঠিত হয় মিলনমেলা।

দেশভাগের অনেক আগে থেকেই সীমান্তের ইছামতি নদীর উভয় তীরে দুর্গাপূজার শেষ দিন বিজয়া দশমীতে মেলা বসে আসছে। দেশভাগের পরও বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি সীমান্তের সীমারেখা। নানা প্রতিবন্ধকতার মধ্যে এ মেলা কখনও বন্ধ হয়নি। সারা বছর ধরে শুধু ইছামতি নদীর পাড়ের মানুষ নয়, বাংলাদেশ ও ভারতের বিভিন্ন এলাকার মানুষ দিনটির জন্যে অপেক্ষায় থাকে। বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিজর্সন উপলক্ষে ইছামতির উভয় পাড়ে বসে নানা রকম দোকান। আত্বীয়স্বজনদের সঙ্গে দেখা সাক্ষাত ছাড়াও এখানে আসা মানুষ উভয়ের মধ্যে ভাব বিনিময় শেষে সন্ধ্যার পরে ফিরে যায় যে যার দেশে, যে যার ঘরে।

এদিকে বেলা গড়ার সাথে সাথে নদীর দেবহাটার টাউন শ্রীপুর ও ভারতের টাকির দুই পারে জড়ো হতে থাকে অসংখ্য মানুষ। একই সঙ্গে বিভিন্ন এলাকার দুর্গা প্রতিমাকে বিসর্জনের জন্য নিয়ে আসা হয় সীমান্ত নদীর পাড়ে। অপরদিকে ভারতের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার হাসনাবাদ, টাকী ও হিঙ্গলগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকার প্রতিমাও নিয়ে আসা হয়।

বিগত বছরগুলোতে এই দিনে ইছামতি নদীর তীরে আন্তর্জাতিক সীমারেখাসহ দ্বিধা-দ্বন্দ ভুলে মিলনমেলায় মিলিত হয় প্রতিবেশী দুই দেশের হাজার হাজার মানুষ। কিন্তু কয়েক বছর আইন-শৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে মিলন মেলা বন্ধ করে কঠোর ব্যবস্থা গৃহীত হয়। তারই পরিপেক্ষিতে দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কঠিন সিদ্ধান্তে ঐতিহ্যবাহী এই মিলন মেলা অনুষ্ঠিত হয়নি।
পরে সন্ধ্যার আগ মূহুর্তে অশ্রুসিক্ত চোখে বিসর্জনের মধ্য দিয়ে দেবী দূর্গাকে বিদায় জানায় দেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের হাজার হাজার মানুুষ। তবে সুষ্ঠভাবে প্রতিমা বিসর্জন সম্পন্ন হয়।

ইছামতিতে আনন্দ উৎসব উপভোগ করতে আসেন উপজেলা চেয়ারম্যান মুজিবর রহমান, দেবহাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এবিএম খালিদ হোসেন সিদ্দিকী, দেবহাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ ওবায়দুল্লাহ, দেবহাটা প্রেস ক্লাবের নবনির্বাচিত সভাপতি মীর খায়রুল আলম, দেবহাটা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন বকুল প্রমুখ।