Bangladesh
This article was added by the user . TheWorldNews is not responsible for the content of the platform.

বাসচাপায় মৃত্যু: ১ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে রায়

ঢাকার সড়কে বাসচাপায় নিহত এক দোকানকর্মীর পরিবারকে এক কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেয়ার রায় এসেছে আদালতের কাছ থেকে। এই ক্ষতিপূরণ দিতে বলা হয়েছে এশিয়ান ইলেকট্রনিক্স দোকানের কর্মচারী পিন্টু শেখের (২৮) পরিবারকে, যিনি সুপ্রভাত পরিবহনের একটি বাসে চাপা পড়ে ছয় বছর আগে মারা গিয়েছিলেন। আর জরিমানা দিতে হবে সুপ্রভাত পরিবহনের ওই বাসটির চালক মো. সোহাগ মিয়া এবং বাসটির মালিক মো. নুরুল ইসলামকে।

ক্লেইম ট্রাইবুনাল বা দাবি আদায় ট্রাইবুনালের বিচারক হিসাবে ঢাকার জ্যেষ্ঠ জেলা ও দায়রা জজ এ এইচ এম হাবিবুর রহমান ভূঁইয়া মঙ্গলবার এ রায় দেন। বুধবার খবরটি প্রকাশ পায়।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী বিমল সমাদ্দার বলেন, “বাসচালক সোহাগ মিয়া ও বাসমালিক মো. নুরুল ইসলামকে ক্ষতিপূরণের অর্থ পরিশোধ করতে হবে।”

২০১৬ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর বাইসাইকেল চালিয়ে কাজে যাওয়ার সময় রামপুরার মালিবাগ চৌধুরীপাড়ার পেট্রল পাম্পের কাছে সুপ্রভাত পরিবহনের বাসের চাপায় নিহত হন পিন্টু শেখ। ২০১৭ সালে ২ কোটি ৭৭ লাখ টাকার বেশি ক্ষতিপূরণের দাবি জানিয়ে পিন্টুর পরিবার এই মামলা করে।

রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারক বলেন, “কথা সত্য মানুষ মরণশীল। মানুষ যে কোনো সময় মৃত্যুবরণ করতে পারে। তবে প্রতিটি মানুষ তার স্বাভাবিক মৃত্যু কামনা করে। এ দেশের মানুষের স্বাভাবিক মৃত্যুসহ গড় মৃত্যুর বয়স অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে এবং এ ক্ষেত্রে ৬৫ বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকার দাবি কোনোভাবেই অস্বীকার করা যায় না, বরং এটি স্বাভাবিক ও সাধারণ হিসেবে বিবেচিত।”

পিন্টু শেখের পরিবারকে যে ক্ষতিপূরণ দিতে আদেশে দেওয়া হয়েছে রায়ে, তার যুক্তিও পর্যবেক্ষণে তুলে ধরেন বিচারক।

“মৃত পিন্টু শেখ বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন। সেক্ষেত্রে তার ৬৫ বছর পর্যন্ত চাকরি করার সম্ভাবনাকে যথাযথ ও স্বাভাবিক ছিল বলে বিবেচিত হয়। ফলে তার আরও ৩৭ বছর পর্যন্ত চাকরি করার সুযোগ ছিল। কিন্তু মামলার আসামি ড্রাইভার সোহাগ দ্রুত ও বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালিয়ে চাপা দিয়ে তার অকাল মৃত্যু ঘটান। এক্ষেত্রে মোটরযান অধ্যাদেশ ১৯৮৩ এর ১২৮, ১২৯ এবং ১৩০ ধারার বিধানমতে পিন্টু শেখের ওয়ারিশরা ক্ষতিপূরণ পাবেন।”

আদালতের বিবেচনায়, নিহত পিন্টু আরও ৩৭ বছর তথা ৪৪৪ মাস চাকরি করলে মাসিক গড়ে ২০ হাজার টাকা বেতন প্রাপ্তির মাধ্যমে সর্বমোট ৮৮ লাখ ৮০ হাজার টাকা প্রাপ্ত হতেন। তাছাড়া তিনি এবং তার আত্মীয়-স্বজন পরস্পর তাদের ভালোবাসা ও আদর-সোহাগ হতে বঞ্চিত হওয়ায় সেই ক্ষতিপূরণও পাবেন।

“এই বিষয়টি বিবেচনায় তারা ১১ লাখ ২০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ পাবেন। এভাবে মৃত পিন্টু শেখের ওয়ারিশরা ৮৮ লাখ ৮০ হাজার ও ১১ লাখ ২০ হাজার মিলে মোট ১ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ পাবেন।”

মামলায় বলা হয়েছিল, পিন্টু শেখ তার পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন। তিনি স্ত্রী, এক মেয়ে ও বোন রেখে যান।

বাদীপক্ষে আইনজীবী এ কে এম ফয়জুল্লাহ টিটু মামলাটি পরিচালনা করেন।