Bangladesh
This article was added by the user . TheWorldNews is not responsible for the content of the platform.

ছিলেন বিশ্ব ক্রিকেটের ত্রাস, অবসরের পর কোথায় সাঈদ আনোয়ার?

ছিলেন বিশ্ব ক্রিকেটের ত্রাস, অবসরের পর কোথায় সাঈদ আনোয়ার?

ছিলেন বিশ্ব ক্রিকেটের ত্রাস, অবসরের পর কোথায় সাঈদ আনোয়ার?

স্পোর্টস ডেস্ক: একদিনের ক্রিকেটে টানা ১২ বছর ধরে ব্যক্তিগত সর্বাধিক রানের রেকর্ডটা ধরে রেখেছিলেন। চলতি মাসেই (৬ সেপ্টেম্বর) ৫৪ বছরে পা দিয়েছেন পাকিস্তান ক্রিকেট দলের সাবেক ওপেনার সাঈদ আনোয়ার। ১৩ বছর (১৯৯০-২০০৩) ধরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলছেন তিনি। 

বলা ভালো রাজত্ব করেছেন। ছিলেন বিশ্ব ক্রিকেটের ত্রাস, অবসরের পর কোথায় সাঈদ আনোয়ার? ২০০১ সালে মুলতান টেস্টেই শেষবার তাকে মাঠে নামতে দেখা গিয়েছিল। এই টেস্ট ম্যাচে শতরান করার পরও তিনি দ্বিতীয়বার ক্রিকেট মাঠের দিকে আর ফিরে তাকাননি। ২ বছর পর তিনি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর গ্রহণ করেছিলেন।

২০০১ সালের ৩১ অগাস্ট। এশিয়ান টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ চলাকালীন পাকিস্তান মুলতান টেস্টের তৃতীয় দিনই বাংলাদেশের বিরুদ্ধে এক ইনিংস এবং ২৬৪ রানের একটা বিশাল ব্যবধানে জয়লাভ করেছিল। সেইসময় টেস্ট ক্রিকেটে এত বড় ব্যবধানে হারানোর কথা কেউ ভাবতেও পারত না (যদিও এক বছর পরেই নিউজিল্যান্ড লাহোর টেস্টে এক ইনিংস এবং ৩২৪ রানের ব্যবধানে জয়লাভ করেছিল)।

কিন্তু পাকিস্তান সেই জয় উদযাপন করতে পারেনি। ওই মুলতান টেস্টে পাকিস্তান তিন উইকেট হারিয়ে ৫৪৬ রান করেছিল। কিন্তু পাক ক্রিকেট দলের পাঁচজন ব্যাটার শতরান করেছিলেন (এক ইনিংসে সবথেকে বেশি শতরান করার পরিসংখ্যানে অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে একই আসনে বসে রয়েছে পাকিস্তান)। 

এই তালিকায় সাঈদ আনোয়ারও ছিলেন। তিনি ১০১ রান করেন। এটা তার কেরিয়ার ১১তম তথা অন্তিম শতরান ছিল। আসলে মুলতান টেস্টের প্রথম দিন (২৯ অগাস্ট) শতরান করার মাত্র ২ দিন পরেই তার সাড়ে তিন বছরের মেয়ে বিসমাহ দীর্ঘ রোগভোগের পর মারা যায়। সেইসময় লাহোরে ফিরে যান আনোয়ার। এরপর তিনি আর কখনও টেস্ট ম্যাচ খেলেননি।

একেবারে অসময়ে মেয়ের মৃত্যু সাঈদ আনোয়ারকে সম্পূর্ণভাবে ভেঙে দিয়েছিল। এরপর তিনি ধর্মের পথ অবলম্বন করতে শুরু করেন। ইসলাম ধর্মের প্রচার এবং প্রসার করতে শুরু করে দেন তিনি। ততদিনে তিনি নিজের দাড়িও অনেকটাই বাড়িয়ে ফেলেছেন। অন্যদিকে একদিনের ক্রিকেটেও তিনি জায়গা পাকা করতে পারেননি। 

অবশেষে ২০০৩ সালে ক্রিকেট বিশ্বকাপে অনেক লড়াই করে তিনি ভারতের বিরুদ্ধে শতরান করেছিলেন কিন্তু, সেই ম্যাচটা পাকিস্তান হেরে গিয়েছিল। তবে আনোয়ার সেই সেঞ্চুরিটা চিরকালের জন্য হারিয়ে যাওয়া নিজের মেয়েকে উৎসর্গ করেছিলেন।

অবশেষে ২০০৩ সালের ১৫ আগস্ট সঈদ আনোয়ার প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটকে বিদায় জানিয়ে দেন। তিনি পাকিস্তানের হয়ে ৫৫টি টেস্ট ম্যাচে ৪৫.৫২ ব্যাটিং গড়ে ৪০৫২ রান করেন। এরমধ্যে ১১টি শতরান এবং ৪৩টি হাফসেঞ্চুরি রয়েছে।

একদিনের ক্রিকেট ইতিহাসে সবথেকে বেশি স্কোরের রেকর্ড (১৯৭) টানা ১২ বছর ধরে অক্ষুণ্ণ রেখেছিলেন। ২০০৯ সালে জিম্বাবুয়ের চার্লস কোভেন্ট্রি ১৯৪ রানের ইনিংস খেললেও আনোয়ারকে টপকাতে পারেননি। কিন্তু, এর তিন বছর পরে শচীনই আবার অপরাজিত ২০০ রানের ঐতিহাসিক ইনিংস খেলে রেকর্ড বুকে নিজের নাম পাকা করে ফেলেছিলেন।

ক্রিকেট থেকে অবসর গ্রহণের পর আপাতত ইসলাম ধর্মের প্রচারক হিসাবেই দিন কাটাচ্ছেন সঈদ আনোয়ার। ক্রিকেট সংক্রান্ত আর কোনও অনুষ্ঠানেই তাকে সেভাবে দেখতে পাওয়া যায় না। ২০০৬ সালে পাকিস্তান ক্রিকেট দলে তারই সতীর্থ মোহাম্মদ ইউসুফ স্বীকার করেছিলেন যে তিনি আনোয়ারকে দেখেই খ্রীষ্টান ধর্ম ছেড়ে ইসলামে দীক্ষিত হন।