Bangladesh
This article was added by the user . TheWorldNews is not responsible for the content of the platform.

ধ্বংসস্তুপে ফুল ফুটিয়ে সিরিজ জেতালেন মিরাজ

আলতো টোকায় মিড অনে বল পাঠিয়ে দৌড় মেহেদী হাসান মিরাজের। ক্রিজের মাঝপথে এসেই ইয়েস বলে চিৎকার। মুখে চড়া হাসিটা স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছিল হেলমেটের ভেতরেই। রান পূর্ণ হতেই হেলমেট খুলে দুই হাত উপরে তুলে সারলেন উদযাপন। মিরাজ ততক্ষণে পৌঁছে গেছেন তিন অঙ্কের ম‌্যাজিকাল ফিগারে। 

মিরপুর শের-ই-বাংলার ধারণক্ষমতা ২৫ হাজার। কিন্তু এদিন গ‌্যালারিতে দাঁড়িয়ে আরও হাজার পাঁচেক দর্শক। ত্রিশ হাজারের করতালি ও মুখে একটাই ধ্বনি, ‘মিরাজ…মিরাজ…মিরাজ।’ সেঞ্চুরিয়ান ডুবে যান ওই মুহূর্তটায়। 

টস জিতে ব‌্যাটিংয়ে নেমে দলীয় ৬৯ রানে আফিফ যখন বোল্ড হলেন, তখন বাংলাদেশের ইনিংস ২০ ওভারও পেরোয়নি। স্কোরবোর্ড চিত্র ছিল এরকম ৬৯/৬। সেখানে বাংলাদেশ ইনিংস শেষ করে ৭ উইকেটে ২৭১ রান নিয়ে। বাংলাদেশের ইনিংসের চিত্র পাল্টে দেওয়ার রূপকার মিরাজ। যিনি ধ্বংসস্তুপে ফুটিয়েছেন সেঞ্চুরির ফুল। তার এই হৃদয় নিংড়ানো, রূপকথার গল্পের মতো ইনিংসে বাংলাদেশ এক ম‌্যাচ বাকি থাকতেই জিতে নেয় ওয়ানডে সিরিজ। 

তবে জয় যতটা সহজে আসার কথা ছিল, ততটা হয়নি। লক্ষ‌্য তাড়ায় ধাওয়ান, কোহলি, রাহুলরা যখন ব‌্যর্থ তখন আইয়ার-অক্ষর ফিফটি তুলে, ১০৭ রানের জুটি গড়ে বাংলাদেশকে চোখ রাঙানি দেখান। তাদের পথ আটকে দিয়েও বাংলাদেশ জয়ের সুবাতাস পাচ্ছিল। কিন্তু তখন ক্রিজে হাজির হয়ে যান অধিনায়ক রোহিত। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে চোট পেয়ে মাঠ ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ার পর আর ফিল্ডিংয়ে ফেরেননি। ওপেনিং ছেড়ে নেমেছিলেন নয়ে। যখন ব‌্যাটিংয়ে নামেন তখন ভারতের জয়ের জন‌্য প্রয়োজন ৪৪ বলে ৬৫ রান। 

বাঁহাতে ব‌্যান্ডেজ নিয়েই চললো তার লড়াই। যে লড়াইয়ের নিষ্পত্তি হলো মোস্তাফিজের করা ইনিংসের শেষ বলে। ওই বলে একটি ছক্কা হলেই সিরিজে সমতা ফেরায় ভারত। কিন্তু বাঁহাতি পেসারের ডেডলি ইয়র্কার বলে সুইং করে ব‌্যাট চালিয়েও কোনও রান পাননি রোহিত। তাতে আঁধারে থেকে যায় তার ২৮ বলে ৫১ রানের লড়াকু ইনিংস। যেখানে মেরেছিলেন পাঁচটি ছক্কা ও তিনটি চার। 

ম‌্যাচের অন্তিম মুহূর্তে ছিল চরম নাটকীয়তা। ১৮ বলে ভারতের জন‌্য ৪০ রানের প্রয়োজন, তখন ৪৮তম ওভারে এসে মেডেন নেন মোস্তাফিজ। বাঁহাতি পেসারের দুর্বোধ‌্য স্লোয়ারের কোনও উত্তর মোহাম্মদ সিরাজের ছিল না। তাতে স্কোরলাইন দাঁড়ায় ১২ বলে ৪০। নখ কামড়ানো এমন মুহূর্তে বোলিংয়ে মাহমুদউল্লাহ। রোহিত যেন হাফ ছেড়ে বাঁচেন। অফস্পিনারের এক ওভারেই ব‌্যবধান কমিয়ে আনেন ২০ রানে। অবশ‌্য ম‌্যাচটা ওই ওভারেই শেষ হতে পারতো যদি ফাইন লেগে রোহিতের সহজ ক‌্যাচ এনামুল মিস না করতেন। 

শেষ ওভারেও রোহিতকে থামানো যায়নি। মোস্তাফিজের প্রথম ৫ বলে দুই চার ও এক ছক্কায় তুলে নেন ১৪ রান। শেষ বলে একটি ছক্কায় হৃদয় ভাঙবে বাংলাদেশের, ভারত জিতবে ম‌্যাচ। এমন সমীকরণে মোস্তাফিজের কাঙ্খিত ইয়র্কারে বাংলাদেশ ৫ রানে জিতে যায় শ্বাসরুদ্ধকর ম‌্যাচ। তৃতীয় ম‌্যাচ খেলতে চট্টগ্রামে পা রাখার আগেই ২-০ ব‌্যবধানে সিরিজ বাংলাদেশের।