Bangladesh
This article was added by the user . TheWorldNews is not responsible for the content of the platform.

দুই পুত্রবধূ আর দুই নাতিকে হারিয়ে পাগলপ্রায় এই বৃদ্ধা!

দুই পুত্রবধূ আর দুই নাতিকে হারিয়ে পাগলপ্রায় এই বৃদ্ধা!

দুই পুত্রবধূ আর দুই নাতিকে হারিয়ে পাগলপ্রায় এই বৃদ্ধা!

এমটি নিউজ২৪ ডেস্ক : সাত সন্তানের জননী জলেশ্বরী। আশির কোটা পেরিয়েছেন। বাড়ি পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার শালডাঙ্গা ইউনিয়নের হাতিডোবা এলাকায়। স্বামীহারা জলেশ্বরী এক বাড়িতেই রবিন, কার্তিক আর বাবুল এই তিন সন্তানকে নিয়ে থাকতেন।

নাতিদের সাথে সারাক্ষণ গল্পগুজব করে কাটত তার দিন। দরিদ্র এই পরিবারের বাড়ির বধূরা যেন হয়ে উঠেছিলেন এক এক দেবী। সাজানো সংসারে তার চাওয়া ছিল না খুব বেশি। 

সন্তানরা দিনমজুরের কাজ করে যা আয় করতেন তা দিয়েই সুন্দর চলে যেত সংসার। জলেশ্বরীর সাজানো সংসারে আজ দুঃখের ঘন ছায়া। নৌকাডুবিতে দুই পুত্রবধূ আর দুই নাতিকে হারিয়ে পাগলপ্রায় এই বৃদ্ধা।  

রবিনের স্ত্রী তারা রানী ও ছেলে বিষ্ণ, বাবুলের ছেলে দীপঙ্কর আর কার্তিকের স্ত্রী লক্ষ্মী রানী নৌকাডুবিতে মারা গেছেন। নৌকাডুবির শুরুতেই তাদের মরদেহ খুঁজে পান স্বজনরা। এক বাড়িতে চারটি মরদেহ শোকে তাদের পাথর করে তুলেছে।  

জলেশ্বরী বলেন, ‘আমরা একসাথে মহালয়া অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার জন্য যাচ্ছিলাম। আউলিয়ার ঘাটে গিয়ে আমি ভিড় ঠেলে নৌকায় উঠি। এর মধ্যেই নৌকা ভরাট হয়ে যায়। তাদের রেখেই আমি ওপারে যেতে বাধ্য হই। 

ওপারে গিয়ে পেছনে দেখছিলাম। ওরা সবাই একসাথে নৌকায় উঠল। নৌকাটি মাঝনদীতে গিয়ে হঠাৎ উল্টে গেলে আমি এই দৃশ্য দেখে অজ্ঞান হয়ে পড়ে যাই। 

তারপর আমার পরিবারের এক এক সদস্যের মরদেহ উদ্ধারের খবর পাই। মায়ের পূজা করতে গিয়ে আমার মায়েরা চলে গেল। আমার দাদুরা চলে গেল। আমি এখন কিভাবে থাকব? এই কষ্টের চেয়ে তাদের সাথে আমি চলে গেলেও ভালো করতাম। ’ 

রবিন বলেন, ‘আমার একমাত্র ছেলে আর ছোট ভাইয়ের ছেলে একসাথে খেলা করত। তাদের ছুটোছুটিতে পুরো বাড়ি মেতে থাকত। এখন সব স্তব্ধ হয়ে গেছে। আমার স্ত্রী আর সন্তানসহ পরিবারের চার সদস্যকে হারালাম। এখন আমাদের আর হারাবার কিছু নেই। জানি না কী দোষ করেছিলাম, বিধাতা আমাকে এত বড় শাস্তি দিলেন। ’