Bangladesh
This article was added by the user . TheWorldNews is not responsible for the content of the platform.

হিলিতে পানের ফলন ভালো, দামেও খুশি চাষিরা

দিনাজপুরের হিলিতে সপ্তাহে দুই দিন রোববার আর বৃহস্পতিবার বসে পানের হাট। হাটে রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে পান কিনতে আসেন ক্রেতারা। ফলন ভালো এবং দামও বেশি পেয়ে খুশি পানচাষিরা। ঢাকার ব্যবসায়ীরা এ বাজারে পান কিনতে আসছেন, তাই দাম হঠাৎ বেড়ে গেছে— এমন বলছেন স্থানীয় পান ব্যবসায়ীরা। কৃষি দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী উপজেলায় ৪০ হেক্টর জমিতে ১৫৬টি পানের বরজ রয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২২ সেপ্টেম্বর) হিলির পানের হাট ঘুরে দেখা যায়, সকাল ৭টা থেকে পান নিয়ে আসতে থাকে পানচাষিরা। ক্রেতারাও সকাল থেকে ভিড় জমায় হাটে পান কিনতে। পান চাষিরা বড় আকারের পানপাতা বিক্রি করছেন এক পোয়া (৪০ বিরায় এক পোয়া) ৪৫০০ থেকে ৪৮০০ টাকা দরে; সেই হিসারে এক বিরা (৬৪টি পানপাতা) পানের দাম পড়ে ১২০ থেকে ১৩০ টাকা। মাঝারি আকারের পানপাতা বিক্রি করছেন ৩০০০ থেকে ৩২০০ টাকা পোয়া দরে; এতে প্রতি বিরার দাম পড়ে ৬০ থেকে ৬৫ টাকা। ছোট আকারের পান বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা পোয়া; আর প্রতি বিরার দাম ১৫ থেকে ২০ টাকা। 

হিলি সীমান্ত ঘেঁষা ঘাসুরিয়া ও মাধবপাড়া এলাকায় পানের বরজগুলো গড়ে উঠেছে। এই হাটে রোববার ও বৃহস্পতিবার প্রচুর পানপাতা নিযে আসে চাষিরা। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে পাইকাররা এই হাটে পান কিনতে আসেন।  

হিলি বাজারের পান ব্যবসায়ী বুলন শেখ রাইজিংবিডিকে বলেন, দুই সপ্তাহে আগেও বাজারে পানের দাম অনেক কম ছিল। হঠাৎ করে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে এখানে পান কিনতে আসছেন। যার কারণে দাম অনেক বেড়ে গেছে। ঢাকা থেকে আসা ব্যবসায়ীরা পানের দাম করেন না, বিক্রেতা যা দাম চায়, সেই দামে তারা কেনেন। এতে করে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা লোকসানে পড়ে যাচ্ছেন। 

রংপুর থেকে আসা পান ব্যবসায়ী মোজাফ্ফর রহমান রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘বর্তমান রংপুরে পানের দান অনেক বেশি। হিলি থেকে পান নিয়ে ভালো লাভ পাচ্ছি।’

হিলি বাজারে খুচরা পান ব্যবসায়ী আইজার রহমান রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘সপ্তাহে দুই হাটে আমি আমার দোকানের জন্য পান কিনি। প্রতি হাটে বড়, মাঝারি আকারের পান ৪ থেকে ৫ পোয়া লাগে। পানের দাম বেড়ে গেছে। বড় পান ১১০ থেকে ১২০ টাকা বিরা, মাঝারিটা ৬০ থেকে ৬৫ টাকা আর ছোট পান ১৫ থেকে ২০ টাকা পাইকারি কিনছি।’ 

পানচাষি মোস্তাফিজুর রহমান রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘আমার বাড়ি সীমান্ত ঘেঁষে ঘাসুড়িয়া গ্রামে। এখানকার মাটি পলি (বালু) তাই অন্য ফসল তেমনন হয় না। তবে পানের আবাদ ভালো হয়। গ্রামে কম-বেশি অনেকের পানের বরজ আছে। দেড় বিঘার জমির একটা বরজ আছে আমার। বরজটি বয়স প্রায় ৩০ বছর হবে, বাবা থাকতে বরজটি তৈরি করা হয়। এখনও চলছে।  প্রতি হাটে এক পোয়া পান ভাঙি। তাতে প্রায় ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা বিক্রি হয়্।’ 

হিলি খাসমহল হাট-বাজার সমিতির সাধারণ সম্পাদক আরমান আলী রাইজিংবিডিকে বলেন, হিলি খাসমহল হাট-বাজারে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সকল নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা আছে। এখানে কোনো ব্যবসায়ী হয়রানির শিকার হয় না। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে এই হাটে ক্রেতা-বিক্রেতরা আসে এবং তারা স্বাধীনভাবে পণ্য ক্রয়-বিক্রয় করেন।

হাকিমপুর উপজেলা কৃষি অফিসার ড. মমতাজ সুলাতানা রাইজিংবিডিকে বলেন, উপজেলায় মোট ৪০ হেক্টর জমিতে ১৫৬টি পানবরজ রয়েছে। এবার পানের ফলন অনেক ভালো এবং দামও ভালো পাচ্ছেন পানচাষিরা। কৃষি বিভাগ থেকে পান চাষিদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে দেওয়া হচ্ছে।