Bangladesh
This article was added by the user . TheWorldNews is not responsible for the content of the platform.

ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি-সম্পাদককে ‘অবাঞ্ছিত’ ঘোষণা

ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি তামান্না জেসমিন রিভা ও সাধারণ সম্পাদক রাজিয়া সুলতানাকে ক্যাম্পাস থেকে বের করে দিয়ে তাদেরকে ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে আনন্দ মিছিল করেছে কলেজ শাখা ছাত্রলীগের আন্দোলনরত অংশটি।

রবিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ছয়টায় আহত অবস্থায় অ্যাম্বুলেন্সে করে সভাপতি রিভা ও পরবর্তী সময়ে পুলিশ প্রটোকলে করে ক্যাম্পাস ছাড়েন সাধারণ সম্পাদক রাজিয়া সুলতানা। তারা ক্যাম্পাস থেকে বের হয়ে গেলে এই আনন্দ মিছিল করে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক বিরোধী অংশ।

আনন্দ মিছিল করার আগে একটি সংবাদ সম্মেলন করেন কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ও বিক্ষুব্ধ অংশটি।

এসময় গত শনিবার রাতে রিভা ও রাজিয়ার সমর্থকদের আক্রমণের শিকার হওয়া সহ-সভাপতি জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, আমরা কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগকে ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছি ঘটনার সত্যতা ও সুষ্ঠু বিচার করতে। কিন্তু তারা যাদেরকে তদন্ত কমিটিতে রেখেছে তারাই মূলত সভাপতি আর সেক্রেটারির মানুষজন। আমরা এই কমিটি মানি না। আমরা রিভা ও রাজিয়াকে এই ক্যাম্পাস থেকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করলাম। এসময় কলেজ শাখা ছাত্রলীগের আরো বেশ কয়েকজন সহ-সভাপতি কথা বলেন।

এর আগে গত ২২ সেপ্টেম্বর একটি গণমাধ্যমে সভাপতি, সেক্রেটারির চাঁদাবাজি ও সিট বাণিজ্য নিয়ে মুখ খুললে গত শনিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) রাতে সহ-সভাপতি জান্নাতুল ফেরদৌসকে মারধর ও হেনস্তা করে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের অনুসারীরা।

এরই পরিপ্রেক্ষিতে রবিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) বেলা ১২টায় রিভা ও জাকিয়া এবং তাদের অনুসারীদের সুষ্ঠু বিচার দাবি করে সংবাদ সম্মেলন করে বিক্ষুব্ধ অংশটি। এতে মোট সাতটি দাবি পেশ করা হয়।

এরপর বিকেল পাঁচটায় সভাপতি রিভা একটি সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। এসময় বিক্ষুব্ধ অংশের নেতাকর্মীরা জান্নাতুল ফেরদৌসকে সাথে নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করতে বলে। এটাতে রিভা অপারগতা প্রকাশ করলে দুই গ্রুপের মধ্যে পুনরায় মারামারি লেগে যায়। এসময় চেয়ার ছোড়াছুড়িসহ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের ব্যানার ছিঁড়ে ফেলে একাংশ। মারামারির একপর্যায়ে সভাপতি রিভা কলেজ মিলনায়ন ভবনে ঢুকে পড়ে। কিছুক্ষণ পর সেখান থেকে বের হলে বিক্ষুদ্ধ অংশটি তাকে ঘিরে ধরে এবং এক পর্যায়ে এসে ধাক্কাধাক্কি শুরু করে।

মারামারিতে বিক্ষুব্ধ অংশের ও কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সুস্মিতা বাড়ৈ, সোনালীসহ অন্তত ২৫ জন আহত হয়। গুরুতরো আহত হন প্রায় ১০ জন। এছাড়াও সভাপতি রিভা অসুস্থ হয়ে পড়েন।

এসময় রিভা সাংবাদিকদের বলেন, আমরা যেদিন থেকে ক্ষমতা পেয়েছি সেদিন থেকে আমাদের পেছনে একটি মহল পড়ে আছে। সেন্ট্রালের চার পাঁচজন পদ পাওয়া ব্যক্তি এটার সাথে সম্পৃক্ত আছেন বলে তিনি উল্লেখ করেন। এসময় তিনি আরো বলেন, আমরা চাই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত হোক এবং যারা প্রকৃত দায়ী তাদের শাস্তির আওতায় আনা হোক।

এদিকে অসুস্থ হয়ে পড়লে রিভার জন্য কলেজ প্রশাসন অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করলেও শুরুতে বিক্ষুদ্ধ অংশ তাকে যেতে দেয়নি তবে কলেজ প্রশাসনের সহায়তা ও পুলিশ প্রটোকোলের সাহায্যে সভাপতি রিভাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়।

এদিকে পরবর্তী সময়ে রাত নয়টা নাগাদ কলেজের ১নং গেইট দিয়ে পুলিশের তত্ত্বাবধানে সাধারণ সম্পাদক রাজিয়া সুলতানাকে নিয়ে যাওয়া হয়। কলেজ থেকে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক চলে যাওয়ায় বিক্ষুদ্ধ অংশটি আনন্দ মিছিল করে।

এদিকে দিনের সমগ্র ঘটনায় কলেজ প্রশাসনের কোনো সবর উপস্থিতি বা কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি। এ ঘটনায় কলেজের অধ্যক্ষ সুপ্রিয়া ভট্টাচার্যকে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও পাওয়া যায়নি।

সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী কলেজ ক্যাম্পাস ছাত্রলীগের বিক্ষুদ্ধ অংশের হাতে নিয়ন্ত্রণ রয়েছে এবং ক্যাম্পাসের উত্তেজনা অনেকটাই প্রশমিত হয়েছে।

এমকে