Bangladesh
This article was added by the user . TheWorldNews is not responsible for the content of the platform.

ইউক্রেনের পরমাণু কেন্দ্রে ফের বিস্ফোরণ

বৃহস্পতিবার ফের একাধিক বিস্ফোরণ হয়েছে দক্ষিণ ইউক্রেনের ঝাপোরিঝঝিয়া পরমাণু কেন্দ্রে। কেন্দ্রটি আপাতত রাশিয়ার দখলে। ওই কেন্দ্রের ভিতরে রাশিয়ার সেনা আছে বলে অভিযোগ। ইউক্রেনের প্রশাসন জানিয়েছে, পরমাণু কেন্দ্রটির ভেতর যেখানে প্রথম বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রটি আছে, সেখানে বিস্ফোরণ হয়েছে। এছাড়াও তেজস্ক্রিয় পদার্থ মজুত রয়েছে যে সমস্ত জায়গায়, সেখানেও বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। তবে বড়সড় কোনো ক্ষতি হয়নি।

গত সপ্তাহেও পরমাণু কেন্দ্রটিতে বিস্ফোরণ হয়েছিল। যার জেরে একটি ইউনিট বন্ধ করে দিতে হয়েছিল। বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, বৃহস্পতিবার যেভাবে সেখানে বিস্ফোরণ হয়েছে, তাতে যে কোনো সময় বড়সড় দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারতো। একবার তেজস্ক্রিয় বস্তুতে বিস্ফোরণ হলে তা ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি করবে বলে আশঙ্কা। খবর ডয়চে ভেলের।

ছবি: সংগৃহীত

ইউক্রেনের দাবি, রাশিয়ার শেল বা রকেট এসে পড়েছে ওই কেন্দ্রে। যদিও রাশিয়া এখনও পর্যন্ত তা স্বীকার করেনি। এ বিষয়ে তারা এখনো পর্যন্ত কোনো মন্তব্য করেনি। গত সপ্তাহে রাশিয়া জানিয়েছিল, ইউক্রেন ওই পরমাণু কেন্দ্রে আক্রমণ চালিয়েছে। কারণ রাশিয়ার সেনা ভেতর আছে।

ইউক্রেনের অভিযোগ, রাশিয়ার সেনা পরমাণু কেন্দ্রের ভিতর থেকে আক্রমণ চালাচ্ছে। সে কারণে তাদের বিরুদ্ধে ইউক্রেন কোনো ব্যবস্থা নিতে পারছে না। বৃহস্পতিবার ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, পরমাণু কেন্দ্রকে সামনে রেখে রাশিয়া ইউক্রেনকে ব্ল্যাকমেল করছে।

বৃহস্পতিবারের ঘটনার পর জাতিসংঘের প্রধান আন্তোনিও গুতেরেস জানিয়েছেন, ওই পরমাণু কেন্দ্রটিকে সেনাহীন করতে হবে। রাশিয়াকে দ্রুত ওই এলাকা ছেড়ে চলে যেতে বলেছেন তিনি। তার বক্তব্য, পরমাণু কেন্দ্রে এই ধরনের পরিস্থিতি কোনোভাবেই কাম্য নয়। যেভাবেই হোক ওই এলাকাটিকে সেনামুক্ত করতে হবে।

ক্রিমিয়া। ছবি: সংগৃহীত

উপগ্রহচিত্রে ক্রিমিয়া

সম্প্রতি একটি উপগ্রহ চিত্র প্রকাশ করেছে ইউক্রেন। তবে চিত্রটি গোপনীয় নয়। সেখানে বিস্ফোরণের পর ক্রিমিয়ায় রাশিয়ার ঘাঁটির অবস্থা দেখা যাচ্ছে। পাশাপাশি রাখা দুটি চিত্র থেকে স্পষ্ট, বিস্ফোরণে কতটা ক্ষতি হয়েছে ওই সেনা ঘাঁটির।

দিনকয়েক আগে ওই সেনাঘাঁটিতে বিস্ফোরণ হয়েছিল। ইউক্রেন জানিয়েছিল, তারা সেখানে হামলা চালায়নি। রাশিয়া জানিয়েছিল, তেল ও বারুদের সংযোগেই সেখানে বিস্ফোরণ হয়। যদিও ইউক্রেন তা মানতে চায়নি। ইউক্রেন দাবি করেছে, ওই ঘটনায় রাশিয়ার নয়টি যুদ্ধবিমান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রাশিয়া তা মানতে চায়নি। সেনাঘাঁটিতে বিশেষ ক্ষতি হয়নি বলে রাশিয়া দাবি করেছে। কিন্তু উপগ্রহ চিত্রে স্পষ্ট, সেনাঘাঁটিটির বিপুল ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

রাশিয়া হুমকি দিয়েছে, ক্রাইমিয়ায় ইউক্রেন আক্রমণ করলে তার ফল ভুগতে হবে। কিয়েভে আক্রমণ চালাবে রাশিয়া। তবে সেনাঘাঁটির বিস্ফোরণের পর রাশিয়া তেমন কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।

এস্তোনিয়ার সিদ্ধান্ত

এস্তোনিয়া সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাশিয়ার দূতাবাসের দেয়া শেনগেন ভিসা নিয়ে কোনো ব্যক্তি দেশটিতে ঢুকতে চাইলে তাকে বাধা দেয়া হবে। তবে অন্য দেশের দেয়া শেনগেন ভিসা নিয়ে এস্তোনিয়ায় ঢুকতে সমস্যা নেই। এস্তোনিয়ার নাগরিকদের ক্ষেত্রে এ নিয়ম বর্জন করা হবে। নতুন নিয়মের মাধ্যমে এস্তোনিয়া রাশিয়া থেকে তাদের দেশে ফেরার রাস্তা বন্ধ করতে চাইছে।

তাদের অভিযোগ, যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর প্রচুর মানুষ এস্তোনিয়ায় এসে কাজ করার চেষ্টা করছে। রাশিয়ায় একাধিক নিষেধাজ্ঞা চলার জন্যই এমনটা ঘটছে বলে তারা মনে করছে তারা।

সুইজারল্যান্ড নিয়ে রাশিয়ার অবস্থান

সুইজারল্যান্ড সম্প্রতি মস্কোয় ইউক্রেনের হয়ে এবং কিয়েভে রাশিয়ার হয়ে কথা বলতে চেয়েছিল। বস্তুত, দুই দেশের মধ্যে কূটনীতির মধ্যস্থতাকারী হতে হয়েছিল। রাশিয়া তা মানতে চায়নি। ক্রেমলিনের বক্তব্য, ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিষেধাজ্ঞায় মত ও মদদ দিয়েছে সুইজারল্যান্ড। ফলে তাদের আর নিরপেক্ষা দেশ বলা যায় না। ফলে তাদের মধ্যস্থতা মেনে নিতে রাজি নয় রাশিয়া।