সংস্কৃতিবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বলেছেন, ‘জাতীয় জাদুঘর প্রতিষ্ঠায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদান অপরিসীম। তিনি ঢাকা জাদুঘরকে জাতীয় জাদুঘরে রূপান্তরে মুখ্য ভূমিকা পালন করেন এবং জাতীয় জাদুঘরের জন্য জমি বরাদ্দ দেন।’
রোববার (৭ আগস্ট) রাজধানীতে জাতীয় জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে ‘ঢাকা থেকে জাতীয় জাদুঘর: রূপান্তরের ইতিবৃত্ত' শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের ১০৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এ সেমিনারের আয়োজন করা হয়।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘স্বাধীনতা পরবর্তী বঙ্গবন্ধুর সাড়ে তিন বছরের শাসনামল পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, এমন কোনো আইন নেই, যা তিনি প্রণয়ন করে যাননি। আমরা যখনই কোনো নতুন আইন প্রণয়ন করতে যাই; দেখা যায়, বঙ্গবন্ধু ইতোমধ্যে তা প্রণয়ন করে গেছেন। এতেই বোঝা যায়, বঙ্গবন্ধু কতটা বিচক্ষণ ও সুদূরপ্রসারী চিন্তার অধিকারী ছিলেন। যুগের প্রয়োজনে আমাদের সেসব আইন শুধু পরিবর্ধন, পরিমার্জন ও সংস্কার করতে হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘জাদুঘরকে আজকের পর্যায়ে উন্নীত করার জন্য যে দুজনের নাম উল্লেখ না করলেই নয়, তারা হলেন নলিনীকান্ত ভট্টশালী ও ড. এনামুল হক। তাদের মধ্যে ড. এনামুল হক কিছুদিন আগে প্রয়াত হয়েছেন। আমি তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতাভরে শ্রদ্ধা জানাই।’
সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘জাতীয় জাদুঘরে প্রায় ১ লাখ নিদর্শন আছে। এসবের মধ্যে আমরা মাত্র ৫ শতাংশ প্রদর্শন করতে পারি। সেজন্য আমরা প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মোতাবেক জাতীয় জাদুঘরের আধুনিকায়নের পদক্ষেপ নিয়েছি। আশা করছি, শিগগিরই এ প্রকল্প অনুমোদন হবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে গ্যালারির সংখ্যা বাড়ানো যাবে এবং আরও অধিক নিদর্শন প্রদর্শন করা যাবে।’
বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর পর্ষদের সভাপতি অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আবুল মনসুর। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর পর্ষদের সদস্য সাবেক সচিব উজ্জ্বল বিকাশ দত্ত।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. মোকাম্মেল এইচ ভূঁইয়া। আলোচনা করেন ওয়াইল্ড টিমের প্রধান নির্বাহী এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের প্রাক্তন অধ্যাপক ও চেয়ারম্যান ড. মো. আনোয়ারুল ইসলাম। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক মো. কামরুজ্জামান। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের কিপার শিহাব শাহরিয়ার।
প্রতিমন্ত্রী পরে জাতীয় জাদুঘরের নলিনীকান্ত ভট্টশালী প্রদর্শনী গ্যালারিতে জাতীয় জাদুঘরে সংরক্ষিত বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি, বঙ্গবন্ধুর বর্ণাঢ্য কর্মময় জীবনের দুর্লভ আলোকচিত্র ও বঙ্গবন্ধুর লেখা বিভিন্ন গ্রন্থ নিয়ে ‘বঙ্গবন্ধু: মুক্তির অগ্রনায়ক’ শীর্ষক বিশেষ প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন এবং প্রদর্শনী ঘুরে দেখেন।