Bangladesh
This article was added by the user . TheWorldNews is not responsible for the content of the platform.

জয়পুরহাটে জোড়াতালির ৪ বেইলি সেতুতে ঝুঁকি নিয়ে পারাপার

জয়পুরহাট-ক্ষেতলাল-পাকারমাথা এবং কালাই-শালাইপুর-হিলি জেলা মহাসড়কের চারটি বেইলি সেতু জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। সরু ও জরাজীর্ণ এসব বেইলি সেতু দিয়ে প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে শত শত যানবাহন। বিশেষ করে জয়পুরহাট-ক্ষেতলাল-পাকারমাথা মহাসড়কের তিনটি বেইলি সেতুর অবস্থা খুবই জরাজীর্ণ। সেতুগুলো পুরাতন হওয়ায় এর পাটাতনের লোহার পাতগুলো জং ধরে নষ্ট হওয়ায় জায়গায় জায়গায় ফাঁক হয়ে গেছে। ঝুঁকিপূর্ণ ফাঁকগুলো লোহার পাত দিয়ে মেরামত করা হলেও শত জোড়াতালির লোহার অবকাঠামোগুলো পুরাতন হওয়ায় ট্রাকসহ ভারি যানবাহন ওঠা মাত্র সেতুন শব্দ করে দুলতে থাকে। এ অবস্থায় প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে গরু বোঝায় ভটভটি ও মাল বোঝাই শত শত ট্রাকসহ সাধারণ যানবাহন চলাচল করছে ওই সড়ক পথে। 

জেলা সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, নব্বই দশকে জয়পুরহাট-ক্ষেতলাল-পাকারমাথা জেলা মহাসড়কের তুলশীগঙ্গা নদীর ওপর ৬৮ মিটার, খাড়াই খালের ওপর ২০ মিটার এবং ঘোনাপাড়া খালের ওপর ৩৬ মিটার দীর্ঘ তিনটি বেইলি সেতু নির্মিত হয়। সড়কটি জয়পুরহাট শহরের সঙ্গে যোগাযোগের বিকল্প হিসেবে ব্যবহার হওয়ায় শুরুতে এর গুরুত্ব কম ছিল। কিন্তু বর্তমানে শহরের যানজটের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় এই পথের গুরুত্ব অনেক বেড়ে গেছে। ফলে প্রতিদিন জয়পুরহাট-ক্ষেতলাল-পাকারমাথা মহাসড়ক হয়ে বিকল্প এই পথে জেলা শহরে যোগাযোগ রক্ষা করছে এলাকার মানুষ। শনিবার ও মঙ্গলবার জয়পুরহাটের নতুনহাট ও পাঁচবিবিতে গরুর হাট বসে। এই দুটি হাট জেলার সর্ববৃহৎ গরুর হাট। ফলে শনি ও মঙ্গলবার ওই পথে শত শত গরু বোঝায় ট্রাক যাতায়াত করে। 

এ ছাড়া আক্কেলপুর হয়ে নওগাঁ শহরে মালামালসহ ট্রাক যাতায়াত করে জেলার এই মহাসড়কেই। তিনটি সেতুই জরাজীর্ণ হওয়ায় দুর্ঘটনা এড়াতে প্রায় প্রতিদিনই সড়ক বিভাগের পক্ষ থেকে বিদ্যুতের ওয়েল্ডিং ঝালাই এর মাধ্যমে লোহার পাত জোড়াতালি দিয়ে চলাচল উপযোগী করার চেষ্টা চলছে। একইভাবে কালাই-শালাইপুর-হিলি সড়কের ৪৪ মিটার দীর্ঘ সরু বেইলি সেতুর অবস্থাও ঝুঁকপূর্ণ। ঝুঁকি নিয়ে এ পথেও চলাচল করছে শত শত ভারি ও হালকা যানবাহন।

জয়পুরহাট-ক্ষেতলাল মহাসড়কের জরাজীর্ণ বেইলি সেতু দিয়ে নিয়মিত চলাচলকারী ক্ষেতলালের ট্রাক চালক শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘সেতুর যে অবস্থা তাতে খালি ট্রাক নিয়ে যেতেও ভয় হয়। ট্রাক ওঠলেই সেতু দুলতে থাকে।’

স্থানীয় ঘোনাপাড়া গ্রামের আব্দুল মতিন বলেন, তুলশীগঙ্গা নদীর ওপর এই সেতুটি নির্মাণ করা হয় ১৯৯০ সালে। সেতুটি পুরাতন হওয়ায় ১০ টনের অধিক যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ করে উভয়পাশে সাইনবোর্ড দেয় সড়ক ও জনপথ বিভাগ। কিন্তু কে শোনে কার কথা। প্রতিদিন ২০-২৫ টনের ট্রাক চলাচল করে এ পথে।

প্রায় সময় ভ্যানের চাকা সেতুর লোহার পাটাতনের ফাঁকে পড়ে দুর্ঘটনা ঘটে। পায়ে হেঁটে যাওয়ার সময়ও সেতু কাঁপে। বর্তমানে যানবাহনের খুবই চাপ। এ অবস্থায় যে কোনো মুহূর্তে সেতু ভেঙে পড়তে পারে। ক্ষেতলাল বটতলী বাজারের ব্যবসায়ী দুলাল মিয়া বলেন, ‘জরাজীর্ণ বেইলি সেতু নিয়ে আমরা খুবই বিপদে আছি। প্রতিদিন এ পথে আমাদের মতো ব্যবসায়ীদের ট্রাকই বেশি যাতায়াত করে। কোনদিন যে সেতু ভেঙে পড়ে তা নিয়ে দুশ্চিন্তাই থাকতে হয়।’

জয়পুরহাট সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী জাকির হোসেন বলেন, জয়পুরহাট সড়ক ও জনপথ বিভাগের চারটি বেইলি সেতু জরাজীর্ণ ও অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। ওইসব বেইলি সেতুর স্থলে নতুন চারটি পিসি গার্ডার সেতু নির্মাণের জন্য টেন্ডার প্রক্রিয়া চলছে। টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষ হলে এ বছরের নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসের মধ্যে এর নির্মাণ কাজ শুরু হবে।