Bangladesh
This article was added by the user . TheWorldNews is not responsible for the content of the platform.

করতোয়ার পাড়ে স্বজনদের আহাজারি

পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলায় করতোয়া নদীতে নৌকাডুবির ঘটনায় এখন পর্যন্ত ২৪ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তবে এখনো অনেক নিখোঁজ রয়েছেন। ঘটনার পর পর ঘটনাস্থল উপজেলার মাড়েয়া বামনহাট ইউনিয়নের আউলিয়া ঘাট এলাকায় শত শত মানুষ ভিড় করেন। এদের মধ্যে হতাহতদের অনেক স্বজন আছেন। নদীর পাড়ে চলছে স্বজনদের আহজারি।

রবিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) রাতে জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলাম জানান, এখন পর্যন্ত ২৪ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৭ জনের লাশ নদী থেকে উদ্ধার হয়। বাকিদের হাসপাতালে নেওয়ার পর মৃত্যু হয়। এদের মধ্যে নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে আট শিশু, চার পুরুষ ও ১২ নারী রয়েছেন।

এ ঘটনায় এখনও উদ্ধার কাজ চলছে। তবে নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন উদ্ধারকর্মীরা। তবে তদন্তে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে আহ্বায়ক করে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলেও জানান জেলা প্রশাসক।

নিহতরা হলেন, পলি রানী (১৪), লক্ষ্মী রানী (২৫), অমল চন্দ্র (৩৫), শোভা রানী (২৭), দিপঙ্কর (৩), প্রিয়ন্ত (৩), খুকী রাণী (৩৫), প্রমিলা রাণী (৫৫), তারা রাণী (২৪), শোনেকা রাণী (৬০), ফাল্গুনী রাণী (৫৫), প্রমিলা রাণী (৭০), ধনো বালা (৪৭), সুমিত্রা রাণী (৫৭), সফলতা রাণী (৪০), সিমলা রাণী (৩৫) হাসান আলী, (৫২), এক বছরের শিশু উশোশী, তনুশ্রী ও শ্রেয়শী।

এ ঘটনায় স্বজনহারাদের কান্নায় নদীর পাড়ে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্য তৈরি হয়। আশপাশের পরিবেশ হয়ে উঠে ভারী। কেউ বোনের লাশের সামনে গড়াগড়ি দিয়ে কাঁদেন। কেউ আবার ভাইয়ের লাশের সামনে মাতম করছেন। কেউ কেউ নিখোঁজ স্বজনের খোঁজে পাগলের মতো এদিক-ওদিক ছুটছেন। আউলিয়া ঘাট এলাকার করতোয়া পাড়ে স্বজন হারানোর এই বিলাপে চোখের জল ধরে রাখতে পারছেন কেউ।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শারদীয় দুর্গোৎসবের মহালয়া উপলক্ষে মাড়েয়া বাজার এলাকার আউলিয়া ঘাট থেকে ৭০-৮০ জনের মতো মানুষ নিয়ে বদেশ্বরী মন্দিরের দিকে যাচ্ছিল শ্যালো ইঞ্জিনচালিত নৌকাটি। ঘাট থেকে কিছুদূর যাওয়ার পর আউলিয়া ঘাট এলাকায় নৌকাটি ডুবে যায়। এ ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২৪ জনে দাঁড়িয়েছে।

নৌকাডুবি থেকে বেঁচে আসা এক যাত্রী মাড়েয়া বামনপাড়া এলাকার সুবাস চন্দ্র রায় বলেন, আমিও নৌকায় ছিলাম। নৌকায় দেড়শরও বেশি যাত্রী ছিল। আমরা নৌকায় উঠার পরপরই নৌকায় পানি ঢুকতে শুরু করে। এ সময় মানুষজন নৌকার মধ্যেই হুড়াহুড়ি শুরু করেন। পরে যে পাশেই যাচ্ছিলাম, সেপাশেই নৌকায় পানি ঢুকছিল। আমরা পাঁচজন বন্ধু ছিলাম। কোনোমতে সাঁতার কেটে প্রাণে বেঁচে যাই। অন্য যাত্রীরা একে অন্যকে জড়িয়ে ধরে বাঁচার আকুতি জানাচ্ছিল। সেই চরম মুহূর্তের বর্ণনা করতে পারবো না। তবে এতো মানুষ মারা যাবেন, তা বুঝতে পারিনি।

এমকে