Bangladesh
This article was added by the user . TheWorldNews is not responsible for the content of the platform.

মাকে নিয়ে বাড়ি ফিরতে পারলো না রিফাত

বগুড়া সদরের জলসিড়ি গ্রামের হেলাল উদ্দিনের ছেলে রিফাত আল হাসান (৩৫) তার মা মালেকা বানু রুবিকে (৬৫) নিয়ে বৃহস্পতিবার (৬ অক্টোবর) সকালে মাইক্রোবাসযোগে কুমিলা থেকে রওনা হন। দুপুরে টাঙ্গাইলের বঙ্গবন্ধু সেতুর পূর্বপ্রান্তে তাদের বহনকৃত মাইক্রোবাসের সঙ্গে একতা পরিবারের বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলে রিফাত আল হাসান ও তার মা মালেকা বানু রুবি, মাইক্রোবাসের চালক দুলাল হোসেন এবং মাইক্রোবাসের সহকারী সুশীল চন্দ্রশীলসহ ছয়জন নিহত হয়।

রিফাত আল হাসানের ভাতিজির স্বামী মো. পিন্টু মিয়া জানান, এক সপ্তাহ আগে রিফাত মাকে নিয়ে তার বোনের বাসা কুমিল্লায় যান। তার বোনের স্বামী কুমিল্লা ক্যান্টমেন্টে কর্মরত। সকালে রিফাত তার মাকে নিয়ে মাইক্রোবাস ভাড়া করে বাড়ির উদ্দেশে রওনা হয়। কিন্তু মাকে নিয়ে বাড়ি ফিরতে পারলো না রিফাত।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, চাপাইনবাবগঞ্জ থেকে ছেড়ে আসা একতা পরিবহনের দ্রুতগামী বাস বঙ্গবন্ধু সেতু পার হওয়ার পর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়ক বিভাজন ভেঙে উত্তরবঙ্গগামী লেনে ঢুকে পড়ে। এ সময় উত্তরবঙ্গগামী মাইক্রোবাসের সঙ্গে সংঘর্ষে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এতে মাইক্রোবাসটি দুমড়ে-মুচড়ে যায়। ঢাকাগামী বাস রাস্তায় উল্টে যায়। এতে ঘটনাস্থলে মাইক্রোবাসের চালকসহ তিন জনের মৃত্যু হয়। বাসের আহত নয় জনকে উদ্ধার করে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে আরও তিন জনের মৃত্যু হয়।

পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে এসে উদ্ধার কাজ শুরু করে। টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে তিন জনের মৃত্যু হয়। বাসের হেলপার, সুপারভাইজারসহ বাকি ছয় জনকে সেখানে ভর্তি করা হয়।

নিহতরা হচ্ছেন, মাইক্রোবাসের চালক কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার কুটুম্বপুর গ্রামের মৃত ফজলুল হকের ছেলে দুলাল হোসেন (৫২), মাইক্রোবাসের আরোহী বগুড়া সদরের জলসিড়ি গ্রামের হেলাল উদ্দিনের স্ত্রী মালেকা বানু ওরফে রুবি (৬৫) ও তার ছেলে রিফাত আল হাসান (৩৫), মাইক্রোবাসের চালকের সহযোগী কুমিল্লার সুশীল চন্দ্র শীল (৪৫), বাসের আরোহী পাবনার বিএডিসির যুগ্ম পরিচালক (সার) জহিরুল ইসলাম (৫০), নাটোর সদরের বড়াই গ্রামের আব্বাস আলীর ছেলে তামিম (৭)।

পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার জানান, নিহতদের পরিবারের পক্ষ থেকে কেউ পুলিশের কাছে আসলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাদের পরিবারের কেউ না আসলে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করে আইনগত ব্যবস্থা নেবে।

জেলা প্রশাসক মো. আতাউল গনি ও পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার  দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। জেলা প্রশাসক জানান, প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিহতদের পরিবারকে ২০ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে। এছাড়াও টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি আহতদের চিকিৎসা নিশ্চিত করা হয়েছে।

সন্ধ্যায় বঙ্গবন্ধুর সেতু পূর্ব থানার উপসহকারী পরিদর্শক শফিকুল ইসলাম জানান, নিহতের স্বজনরা এসে পৌঁছেছে। লাশ হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে।