Bangladesh
This article was added by the user . TheWorldNews is not responsible for the content of the platform.

মুখ পরিষ্কারে অনেকেই যে ১০ ভুল করেন

মুখের ত্বক পরিষ্কারের সবচেয়ে কার্যকর উপায় হলো, মুখ ধোয়া। তবে ভুল পদ্ধতিতে মুখ পরিষ্কার করার ফলে আশানুরূপ ফল পাওয়া যায় না, আবার ত্বক ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

মুখ পরিষ্কারে কিছু ভুল নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিডার্স ডাইডেস্ট। চলুন বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।

* ভুল তাপমাত্রার পানি ব্যবহার: মুখ ধোয়ার কাজে বেশি গরম পানি ব্যবহার করলে ত্বক শুষ্ক হয়ে উঠবে। আবার বেশি ঠান্ডা পানি ব্যবহার করলে ত্বকের ছিদ্রগুলো খুলবে না, ফলে ত্বক পরিষ্কার হবে না। নিউ ইয়র্কের কসমেটিক ডার্মাটোলজিস্ট মিশেল গ্রিন বলেন, মুখ ধোয়ার কাজে কুসুম গরম পানি হচ্ছে, সবচেয়ে উপযোগী। খুব গরম নয় আবার খুব ঠান্ডাও নয়- এমন পানি মুখ ধোয়ার কাজে ব্যবহার করলে ত্বকের সুস্থতা বজায় থাকে।

* ঘন ঘন মুখ ধোয়া: যাদের মুখমণ্ডলের ত্বক বেশি শুষ্ক তাদের দিনে একবার এবং যাদের ত্বক বেশি তৈলাক্ত তাদের দিনে দুইবার পরিষ্কার করা উচিত। এর চেয়ে বেশিবার পরিষ্কার করলে আপনার ত্বক আরো বেশি শুষ্ক বা আরো বেশি তৈলাক্ত হয়ে উঠতে পারে। তাছাড়া সকাল বেলার চেয়ে রাতে মুখের ত্বকের পরিচর্যা করলে তা ভালো কাজে দেয়। ইয়েল ইউনিভার্সিটির ডার্মাটোলজি ডিপার্টমেন্টের অ্যাসোসিয়েট ক্লিনিক্যাল প্রফেসর ডার্মা মোনা গোহরা বলেন, ‘আপনি যদি দিনে ১ বার মুখ ধুয়ে থাকেন তাহলে তা দিনের পরিবর্তে রাতে করুন। কারণ রাতে ত্বক পরিষ্কার করার ফলে সারাদিনের ধুলো-ময়লা ত্বক থেকে দূর হয়।’

* প্রায়ই স্ক্রাবিং করা: মুখের ত্বক পরিষ্কার এবং সুস্থ রাখতে স্ক্রাবিং এর বিকল্প নেই। স্ক্রাবিংয়ের ফলে ত্বকের মৃত কোষ দূর হয়ে যায় এবং ত্বক আরো উজ্জ্বল হয়ে ওঠে। তবে ক্যালিফোর্নিয়ার পাসাডেনার ডার্মাটোলজিস্ট আইভি লি বলেন, ‘প্রতিদিন স্ক্রাবিং করলে ত্বক শুষ্ক হয়ে ত্বকে ভাঁজ পড়ে যেতে পারে। তাছাড়া ত্বকের প্রদাহের জন্য অতিরিক্ত স্ক্রাবিং দায়ী।’ তিনি বলেন, ‘মুখে সপ্তাহে একদিন স্ক্রাবিং করুন। অতিরিক্ত স্ক্রাবিং ত্বকের জন্য ক্ষতিকারক।’

* ময়লা কাপড়ে মুখ মোছা: মুখ মোছার জন্য পরিষ্কার কাপড় ব্যবহার করুন। তোয়ালে পরিষ্কার না করে প্রতিনিয়ত ব্যবহার করা ত্বকের পক্ষে খুবই ক্ষতিকারক, কেননা আপনার মুখ মোছার পর ওই ভেজা তোয়ালে বা কাপড়ে প্রচুর ব্যাকটেরিয়া জন্ম নেয়। প্রতিদিন না পারলেও অন্তত ২-৩ দিন পরপর মুখ মোছার তোয়ালে বা কাপড় পরিষ্কার করে ফেলুন। আপনার মুখের ত্বক ভালো রাখতে এক্ষেত্রে একটু বেশি সচেতন হোন।

* তোয়ালে বা কাপড় নরম না হওয়া: মুখ মোছার কাজে বা কোনো প্রসাধনী ত্বকে লাগাতে নরম তোয়ালে ব্যবহার করুন। কেননা খসখসে কিছু দিয়ে মুছলে মুখমণ্ডলের ত্বক ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে যায়। ত্বকের মাধুর্য নষ্ট হয়। তাই মুখ ধোয়ার পর সবসময় নরম তোয়ালে ব্যবহার করুন।

* ফেসিয়াল টিস্যু ব্যবহার: খুব দরকার না পড়লে ফেসিয়াল টিস্যু দিয়ে মুখ পরিষ্কার করা উচিত নয়। প্রতিদিন ত্বক পরিষ্কার করার কাজে ফেসিয়াল টিস্যুর ওপর নির্ভর করা খুবই ক্ষতিকর। ডা. গ্রিন বলেন, ‘ফেসিয়াল টিস্যু ত্বক সেভাবে পরিষ্কার করে না বরং এতে থাকা রাসায়নিক দ্রব্য ত্বকের মারাত্বক ক্ষতি করে।’ সেজন্য মুখমণ্ডল পরিষ্কার করার জন্য হাতের কাছে কিছু না পেলে জরুরি প্রয়োজনে ফেসিয়াল টিস্যু ব্যবহার করুন, নিয়মিত নয়।

* সাবানজাত ক্লিনজার ব্যবহার: কখনোই সাবানজাত ক্লিনজার ব্যবহার করবেন না। ডা. গোহরা বলেন, ‘সাবানজাত ক্লিনজার ব্যবহারের ফলে ত্বকে উপস্থিত প্রাকৃতিক তেল ধুয়ে যায়, ত্বক শুষ্ক হয়ে ওঠে এবং ত্বকে প্রদাহ তৈরি করে। অন্যদিকে সাবানহীন ক্লিনজার ত্বকে আর্দ্রতা যোগায় এবং ত্বক সুস্থ রাখে।’ সুতরাং কোনো ক্নিনজার কেনার আগে মোড়কের লেখা পড়ে দেখুন।

* মুখ পরিষ্কারে বেশি বলপ্রয়োগ: মুখ থেকে ময়লা পরিষ্কারে বেশি জোড়ে ঘষামাজা করলে ত্বক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আলতোভাবে ত্বক পরিষ্কার করুন। ত্বক থেকে ময়লা ওঠানোর জন্য বেশি জোড়ে ঘষামাজার কোনো দরকার নেই।

* শুষ্ক অবস্থায় মুখ মোছা: শুষ্ক অবস্থায় তোয়ালে বা কাপড় দিয়ে মুখ মুছলে ত্বক জ্বালা থেকে রক্ষাকারী প্রোটিন, ফ্যাটি অ্যাসিড এগুলো উঠে যায়, ফলে ত্বক সহজেই জীবাণু বা ময়লার সংস্পর্শে আসে। সুতরাং ভেজা অবস্থায় মুখ মুছুন।

* ময়েশ্চারাইজার লাগানোর জন্য অপেক্ষা: কোনো ক্রিম বা লোশন মুখে লাগানোর দরকার থাকলে মুখ ধোয়ার সঙ্গে সঙ্গে তা লাগান। কেননা মুখ ধোয়ার পরপর আপনার ত্বক সবচেয়ে বেশি পরিষ্কার থাকে। তাছাড়া পানির আর্দ্রভাব আপনার ত্বকে থেকে যায়। তবে ডা. গোহরা এবং ডা. লি এ বিষয়ে কিছুটা ভিন্নমত পোষণ করেন। তারা বলেন, ‘ব্রণের চিকিৎসার জন্য যেসকল ক্রিম বা লোশন ব্যবহার করা হয় তা ভেজা অবস্থায় ত্বকে লাগালে জ্বালা-পোড়া করতে পারে। সুতরাং এ ধরনের প্রসাধনী ব্যবহারের ক্ষেত্রে মুখের ত্বক শুষ্ক থাকা প্রয়োজন।’