Bangladesh
This article was added by the user . TheWorldNews is not responsible for the content of the platform.

নাজিম উদ্দিন লজ্জায় কাউকে বাড়ির ঠিকানা দেন না  

‘আগে ঝালমুড়ি বিক্রি করে সংসার চালাতাম। অসুখের পর কাজ করতে পারি না। খুব কষ্টে দিন যায়। বৃষ্টি হলে ঘরে থাকা যায় না। ঘরের কারণে মেয়েদের বিয়ে দিতে পারি না। ছেলেরা কাউকে বাড়ির ঠিকানা বলে না। লজ্জায় আমিও দেই না। এখন আমার আল্লাহ ছাড়া কেউ নাই।’ কথাগুলো মো. নাজিম উদ্দিনের। ৮ মেয়ে ও ২ ছেলের সংসার নিয়ে তিনি অকুল পাথারে ভাসছেন।

নাজিম উদ্দিনের ৩ মেয়ে বিবাহ উপযুক্ত। প্রতিবেশীর বাড়িতে কাজ করার শর্তে তারা সেখানে থাকেন। ঘর না-থাকায় তারা পরিবার থেকে প্রায় বিচ্ছিন্ন। সংসারের অন্য সংদস্যদের নিয়ে জরাজীর্ণ ও ভাঙা ঘরে মানবেতর জীবনযাপন করছেন নাজিম উদ্দিন-ফেরদৌসী দম্পতি। 

নোয়াখালীর বিচ্ছিন্ন দ্বীপ হাতিয়া পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা এই দম্পতি। সংসারে অভাব নিত্যসঙ্গী। দুমুঠো চাল কেনার টাকার যেখানে সংকট সেখানে একটি বাসযোগ্য ঘর তোলা তাদের জন্য বিলাসিতা। কিন্তু এখন তারা নিরুপায়। শীতে তবুও কোনোমতে দিন কাটে কিন্তু ঝড়-বৃষ্টি হলে আশ্রয় নিতে হয় অন্যের বাড়িতে। 

স্থানীয়রা জানান, নাজিম উদ্দিন ওছখালী পুরাতন বাজারে জিলাপির দোকানে কাজ করতেন। এরপর বড় মিয়ার বাজারে ঝালমুড়ি বিক্রি শুরু করেন। বর্তমানে মানসিকভাবে অসুস্থ হওয়ায় কাজ করতে পারেন না। নাজিম উদ্দিন এখন একটি ঘর চান। তিনি শুনেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গরিবদের জন্য ঘর তৈরি  করে দিচ্ছেন। সেখানে একটি ঘর হলে বেঁচে যায় তার পরিবার।  

ফেরদৌসী বেগম বলেন, মেয়েরা বিয়ের উপযুক্ত হইছে কিন্তু এই ঘরে থাকার মতো ব্যবস্থা নাই। ছোট ছেলেমেয়েগুলো নিয়ে বড় বিপদে আছি। এক ছেলে মাদ্রাসায় তৃতীয় শ্রেণীতে পড়ে। কাউকে সে লজ্জায় বাড়ির ঠিকানা দেয় না। 

স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী মঞ্জুর রহমান বলেন, স্থানীয় সংসদ সদস্য আয়েশা আলীর কাছে এই পরিবারের জন্য একটি মুজিববর্ষের ঘরের দাবি করছি যাতে তারা সরকারি ঘরে পুনর্বাসিত হয়ে স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারে। 

হাতিয়া পৌরসভার মেয়র কে এম ওবায়েদ উল্যাহ বলেন, ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে নাজিম উদ্দিনকে চিনি। বর্তমানে সে কাজ করতে পারে না। তবে সে কখনো আমার কাছে আসে নাই ঘরের জন্য। তারপরও আমি খোঁজ নিচ্ছি। আগামীতে বরাদ্দ এলে তার জন্য ঘরের ব্যবস্থা করবো।