Bangladesh
This article was added by the user . TheWorldNews is not responsible for the content of the platform.

নামাজের পুরস্কার পেলেন ১৯ কিশোর

টানা ৪০ দিন তাকবীরে উলার সাথে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ জামাতে আদায় করায় গাজীপুরের কালীগঞ্জে ১৯ কিশোরকে পুরস্কৃত করা হয়েছে। এমন অভিনব কর্মসূচির আয়োজন করেছে উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নের ছৈলাদী কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ। ছৈলাদী গ্রামবাসীর উদ্যোগে নিয়মিত নামাজ আদায়কারী ওই ১৯ কিশোরের ১০ জনকে পুরস্কার হিসেবে বাইসাইকেল ও ৯ জনকে গিফট বক্স দেওয়া হয়।

শুক্রবার (৫ আগস্ট) বাদ আছর ছৈলাদী কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে অনাড়ম্বর আনুষ্ঠানিকতায় ওই কিশোরদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন মসজিদ কর্তৃপক্ষ ও গ্রামবাসী। তবে শিশু কিশোরদের মোবাইলের কুফল ও অতিরিক্ত আসক্ততা থেকে নামাজে আগ্রহী ও মসজিদমুখী করতেই এই কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে বলে জানান আয়োজকরা।  

পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এমদাদুল হক, জামালপুর ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড সদস্য মো. ফারক শেখ, ছৈলাদী কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের ইমাম মুফতি হাবীবুল্লাহ রফিক, সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন, সেক্রেটারি বীর মুক্তিযোদ্ধা মুরশেদ কাজী, মুফতি মো. আশিকুর রহমান, হাফেজ মাওলানা আজিজুল হক, মাওলানা আমিনুল হক ভূঁইয়া, বীর মুক্তিযোদ্ধা আখেরুজ্জামান, মাহমুদুল হাসান ও কামরুল খান ছাড়াও ছৈলাদী ও আশপাশের গ্রামবাসী উপস্থিত ছিলেন। 

ইউপি সদস্য ফারক শেখ জানান, চলতি বছরের ২১ মে থেকে এই নামাজ প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে ৩০ জুন শেষ হয়। যেখানে ছৈলাদী গ্রামের ৩৭ জন কিশোর-যুবক অংশ নেয়। টানা ৪০ দিন তাকবীরে উলার সাথে পাঁচ ওয়াক্ত (২০০ ওয়াক্ত) নামাজ মসজিদে এসে আদায় করতে সক্ষম হয় ১০ জন কিশোর। ৯ জন কিশোর ১৮৫ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করেন। ২০০ ওয়াক্ত নামাজ আদায়কারী কিশোরকে বাইসাইকেল ও ১৮৫ ওয়াক্ত নামাজ আদায়কারী ৯ জন কিশোরকে গিফট বক্স আনুষ্ঠানিকভাবে তুলে দেওয়া হয়।

ছৈলাদী কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের সেক্রেটারি বীর মুক্তিযোদ্ধা মুরশেদ কাজী জানান, তুরস্কের দেখাদেখি এমন প্রতিযোগিতার বিষয়ে ভাবনা হয় মসজিদ কমিটির। গ্রামবাসীর উদ্যোগে ও মসজিদ কমিটির আয়োজনে কিশোরদের নামাজে উদ্বুদ্ধ করতে এই নামাজ প্রতিযোগিতার আয়োজন। তারা যেন মোবাইলের কুফল ও অতিরিক্ত আসক্ততা থেকে দূরে থাকে। এজন্য তাদের নামাজে আগ্রহী ও মসজিদমুখী করতেই এই কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়।

ছৈলাদী কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের ইমাম মুফতি হাবীবুল্লাহ রফিক বলেন, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায়কারীকে আল্লাহ নিজ হাতে পুরস্কৃত করবেন। তবে আমরা শিশু-কিশোর বয়স থেকে তাদের নামাজের প্রতি আগ্রহী ও মসজিদমুখী করতেই শুধুমাত্র উদ্যোগ নিয়ে আয়োজন করেছি। এই উদ্যোগ শুধু ছৈলাদী গ্রামের নয় আশপাশের গ্রাম, ওয়ার্ড, ইউনিয়ন, উপজেলা, জেলা হয়ে সমগ্র দেশে প্রতিষ্ঠিত হউক। তাতে করে কোমলমতি শিশু-কিশোর ও যুবকরা মোবাইলের ভুল ব্যবহার থেকে দূরে থাকবে। আর এভাবেই তাদের মেধা সমাজ প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখবে বলে আমি বিশ্বাস করি।

বাইসাইকেল পুরস্কার পাওয়া কিশোর ছৈলাদী গ্রামের বাসিন্দা রাকিবুল বলেন, ৪০ দিনে তাকবীরে উলার সাথে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ জামাতে আদায় করায় মাধ্যমে এখন মোটামুটি অভ্যস্ত হয়ে গেছি। শুধু পুরস্কার পাওয়ার আশায় নয়। মুসলমান হিসেবে আমাদের পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করতেই হবে। জীবনের বাকি সময় পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ জামাতের সাথে আদায় করতে সকলের কাছে দোয়াও চান ওই কিশোর। একই কথা বলেন ছৈলাদী গ্রামের দুই কিশোর জিদান ও ফয়সাল।