ভোক্তাদের কাছে যাতে কম দামে ডিম ও মাংস সরবরাহ করা যায় সেজন্য প্রয়োজনীয় নীতিগত সহায়তা দেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
শনিবার ঢাকায় এফবিসিসিআইতে অনুষ্ঠিত প্রাণিসম্পদ, হাঁস-মুরগি ও মৎস্য বিষয়ক এফবিসিসিআই স্থায়ী কমিটির প্রথম বৈঠকে ব্যবসায়ীরা এসব দাবি জানান।
উদ্যোক্তারা কৃষি খাতের মতো গবাদি পশু, হাঁস-মুরগি এবং মাছ চাষীদের জন্যও সমান নীতিগত সহায়তা দাবি করেছেন।
ব্যবসায়ীরা বলেন,পোল্ট্রি, গবাদি পশুর খামার, মাছ ও চিংড়ির খামারকে বাণিজ্যিক হারে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করতে হয় ফলে উৎপাদন ও পরিচালন ব্যয় বৃদ্ধি পাচ্ছে।
কৃষি খাতের মতো সমান নীতি সহায়তা পেলে এই মাধ্যম থেকেও সাশ্রয়ী মূল্যে প্রোটিনের চাহিদা মেটানো সম্ভব হবে।
এফবিসিসিআই সভাপতি মোঃ জসিম উদ্দিন বলেন, সরকারের উচিত প্রাণিসম্পদ খামারে বিশেষ হারে ইউটিলিটি প্রদান করা।
২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত দেশে পরিণত হতে, বাংলাদেশকে ৩০০ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি করতে হবে, যা শুধুমাত্র আরএমজি থেকে অর্জন করা কঠিন বলে মনে হতে পারে।
তাই এসব খাতে সরকারি নীতি সহায়তা জরুরি। একইসঙ্গে এসব খাতকে পরিবেশবান্ধব ও নিরাপদ কর্মক্ষেত্রে রুপান্তরের তাগিদ দেন তিনি।
তিনি বলেন, গুটি কয়েক অসাধু ব্যবসায়ীর জন্য সম্প্রতি ডিমের বাজারে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। মুষ্টিমেয় কয়েকজনের জন্য পুরো ব্যবসায়ী সমাজের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। বাজার নিয়ন্ত্রণ ও ব্যবসায়ীদের ইমেজ রক্ষায় অসাধু ব্যবসায়ীদের চিহ্নিত করার আহ্বান জানান এফবিসিসিআই সভাপতি।
প্রান্তিক খামারিদের ন্যায্য দাম নিশ্চিতে লজিস্টিকস ও সরবরাহ শৃঙ্খলা নিয়ে কাজ করতে কমিটিকে পরামর্শ দেন জসিম উদ্দিন।
এর আগে কমিটির ডিরেক্টর ইন-চার্জ এফবিসিসিআই’র সহ-সভাপতি সালাহউদ্দীন আলমগীর বলেন, কৃষিঋণের মতোই বাংলাদেশ ব্যাংককে লাইভস্টক খাতে ৫ শতাংশ ঋণের বাধ্যবাধকতা আরোপ করা উচিত। এখাতে আমদানির ক্ষেত্রে ডলার মূল্য ১০০ টাকা নির্ধারণ করে দেওয়ার দাবিও জানান তিনি। খামারিদের সুরক্ষা দিতে স্বল্পহারের প্রিমিয়ামে বিমা সুবিধা চালুর সুপারিশও করেন সহ-সভাপতি।
কমিটির চেয়ারম্যান ও ফিড ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ এর নির্বাহী সদস্য মো. মশিউর রহমান জানান, সরকারের প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর ও বিএসটিআই দেশের গবাদি পশু ও পোল্ট্রি খামারের বিভিন্ন মান তদারিক করে থাকে। দুই সংস্থার মধ্যে সমন্বয় না থাকায় খামারিদের ভোগান্তি পোহাতে হয়। যা এ খাতের বিকাশকে বাধাগ্রস্ত করছে। সরকারি সংস্থাগুলোর আন্তঃসমন্বয় জোরদারের আহ্বান জানান তিনি। এছাড়াও খামারের শোভন কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করতে সুষ্ঠু বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ওপর জোর দেন মো. মশিউর রহমান।
সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআই’র সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু, পরিচালক মোহাম্মদ আনোয়ার সাদাত সরকার, এম জি আর নাসির মজুমদার, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন, বিজয় কুমার কেজরিওয়াল, আবু মোতালেব, মোহাম্মদ ইকবাল শাহরিয়ার, মোহাম্মেদ বজলুর রহমান, তাবারুকুল তোসাদ্দেক হোসাইন খান টিটো, মোহাম্মদ নাসের, আবু হোসাইন ভুঁইয়া (রানু), মহাসচিব মোহাম্মদ মাহফুজুল হক, স্ট্যান্ডিং কমিটির কো-চেয়ারম্যান ইমরান হোসাইন ও মো. মাহমুদুল আলম এবং অন্যান্য সদস্যরা।
অর্থসুচক/এএম