Bangladesh
This article was added by the user . TheWorldNews is not responsible for the content of the platform.

নিজ কর্মীকে নিজেরাই মেরেছে বিএনপি : তথ্যমন্ত্রী


সময়ের কন্ঠস্বর ডেস্ক: তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুলের পাকিস্তানই ভালো ছিল বক্তব্য এবং ঢাকায় লাঠি ও রডের মাথায় জাতীয় পতাকা লাগানো একইসুত্রে গাঁথা। তারা জাতীয় পতাকার অবমাননা করেছে, আমাদের মুক্তিযুদ্ধ এবং স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের প্রতি অশ্রদ্ধা ও বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করেছে। দুটির মধ্যে সম্পর্ক আছে।

আজ শুক্রবার বিকেলে চট্টগ্রাম এম এ আজিজ স্টেডিয়ামের জিমনেশিয়াম হলে বিএনপি বিভাগীয় পর্যায়ে সমাবেশের ডাক দিয়ে প্রস্তুতি সভা করার বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

এর আগে জেলা প্রশাসনের আয়োজনে শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষে হরিজন সম্প্রদায়ের মাঝে প্রধানমন্ত্রীর উপহার বিতরণ এবং স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের মাঝে সমাজসেবা অধিদপ্তরের চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন তথ্যমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘বিএনপি বিভিন্ন জায়গায় বিশৃঙ্খলা করছে, মুন্সিগঞ্জে নিজেদের কর্মীকে নিজেরা মেরেছে। তাদের এখন উদ্দেশ্য হচ্ছে প্রয়োজনে নিজেদের কর্মীদের নিজেরা মেরে দেশে একটা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার অপচেষ্টা চালানো। সেটা যদি বিভাগীয় পর্যায়ে সমাবেশের নামে আবারো করার অপচেষ্টা চালায় সেগুলো সরকার কঠোর হস্তে দমন করবে, জনগণও তাদের প্রতিহত করবে। সরকারের দায়িত্ব হচ্ছে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা। ‘

তিনি আরো বলেন, ‘কাগজে দেখতে পেলাম বিএনপি বিভাগীয় পর্যায়ে সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছে। আমরা দেখেছি ঢাকা শহরে তারা লাঠি ও রড নিয়ে সমাবেশে হাজির হয়েছে। আবার লাঠি ও রডের মাথায় জাতীয় পতাকাও বেঁধেছে। জাতীয় পতাকা বেঁধে তারা জাতীয় পতাকার অবমাননা করেছে।

তিনি বলেন, ‘একদিকে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব ঠাকুরগাঁও গিয়ে বলেছেন পাকিস্তান কিংবা পাকিস্তান আমলই ভালো ছিল, আর ঢাকায় তারা রডের মাথায় জাতীয় পতাকা লাগিয়েছে, দুটোর মধ্যে সম্পর্ক আছে।

জেলা পরিষদ নির্বাচনের মনোনয়ন দাখিলের সময় একটা মোনাজাতকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসককে রিটার্নিং অফিসারের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে, এটার কোনো তদন্ত হয়েছে কিনা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সেখানে শতশত মানুষের মধ্যে কেউ একজন মোনাজাত ধরেছে। মুসলমান হিসেবে এখানে যদি কেউ মোনাজাত ধরে আর আমি যদি এখানে মোনাজাত না ধরে দাঁড়িয়ে থাকি তাহলে তো আমাকে বলবে বিধর্মী। সেই জন্য জেলা প্রশাসকও সেখানে মোনাজাত ধরেছেন। মোনাজাতের মধ্যে কে কি বলল, সেটার দায় জেলা প্রশাসকের ওপর বর্তায় বলে আমি মনে করি না। ‘

তিনি বলেন, ‘এক্ষেত্রে জেলা প্রশাসককে একটি শোকজ নোটিশ দেওয়া দরকার ছিল। তাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেয়ার দরকার ছিল, তার বক্তব্য নেওয়া দরকার ছিল। বক্তব্য সন্তোষজনক নাহলে ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারত।

তিনি বলেন, ‘আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে একটি মোনাজাত ও কিছু পত্রিকার সংবাদকে উপলক্ষ করে যেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে আমি মনে করি সেটি তড়িঘড়ি এবং যার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়া হয়নি।

দুর্গাপূজা উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর উপহার বিতরণ অনুষ্ঠানে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা দেশের সমস্ত মানুষের কথা ভাবেন। একেবারে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কথাও তিনি ভাবেন। সেই ভাবনা থেকেই আজকে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে হরিজন সম্প্রদায়ের মধ্যে অনুদান দেওয়া হচ্ছে। হরিজন সম্প্রদায়ের আবাসন সমস্যা সমাধানের জন্য অনেক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে আমাদের সরকার। তাদের আবাসন সমস্যার অনেকটা সমাধান হয়েছে। যেটুকু বাকি আছে সেগুলোও যত দ্রুত সম্ভব আমরা করে ফেলব।

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের যুবসমাজকে সংগঠিত করার জন্য, যুবসমাজ যাতে বিপথে পরিচালিত না হয়, মাদকাসক্তি থেকে দুরে থাকে, জঙ্গিবাদসহ নানা ধরণের অপকর্মে যুক্ত নাহয় সেজন্য আমাদের সরকার ক্লাব ভিত্তিক খেলাধুলার প্রসারের জন্য নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। তারই ধারাবাহিকতায় বিভিন্ন ক্লাবকে নানা ধরণের অনুদান দেওয়া হয়। ‘

তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু কন্যার সঠিক সিদ্ধান্ত ও নেতৃত্বের কারণেই আমাদের নারী ফুটবল দল আজকে সাফ ফুটবলে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। তারা অসাধ্যকে সাধন করেছে। তাদের সবগুলো খেলোয়াড় একেবারে প্রত্যন্ত এলাকার বঙ্গমাতা টুর্নামেন্ট থেকে উঠে এসেছে। আজকে তারা দেশের গর্ব হয়ে দাঁড়িয়েছে।

জেলা প্রশাসক মমিনুর রহমানের সভাপতিত্বে ও জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. বদিউল আলমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক নাজমুল আহসান, মুহাম্মদ মাহমুদ উল্লাহ মারূফ, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, মহানগর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোজাফ্ফর আহমদ।

আরো উপস্থিত ছিলেন- জেলার ভারপ্রাপ্ত কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা একেএম সরোয়ার কামাল দুলু, জেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. ওয়াহিদুল আলম, চট্টগ্রাম মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি লায়ন আশীষ কুমার ভট্টাচার্য, জেলা পূজা পরিষদের সভাপতি শ্যামল কুমার পালিত, সাধারণ সম্পাদক অসীম কুমার দেব, হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রীস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট নিতাই প্রসাদ ঘোষ প্রমুখ।