Bangladesh
This article was added by the user . TheWorldNews is not responsible for the content of the platform.

‘ওরা ১১ জন’ সব ফুল এক করে মালা গেঁথেছি: সোহেল রানা 

স্বাধীন বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক প্রথম সিনেমা ‘ওরা ১১ জন’। ১৯৭২ সালের ১১ আগস্ট সিনেমাটি মুক্তি পায়। যুদ্ধের বিভীষিকা থেকে তখনো মানুষ পুরোপুরি মুক্তির স্বাদ পায়নি। এমন সময়ে সিনেমা নির্মাণের কথা ভাবা কঠিন, তাও আবার মুক্তিযুদ্ধকে কেন্দ্র করে! হ্যাঁ, এমন উদ্যোগই নিয়েছিলেন ঢাকাই চলচ্চিত্রের প্রযোজক, পরিচালক ও অভিনেতা সোহেল রানা। 

যুদ্ধপরবর্তী সেই সংকটকালে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক সিনেমা নির্মাণে ভাবনা কীভাবে এলো? এ প্রশ্নের উত্তরে সোহেল রানা রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘যুদ্ধের পর ফিরে আসি ঢাকায়। এসে ইকবাল হলে যাই। তখন হলের একজন আমাকে বলেছিলেন- আপনারা যুদ্ধ করে ফিরে আসলেন কিন্তু অনেকেই তো ফিরে আসতে পারেননি!’ এ কথাটা আমার মনে খুব দাগ কাটে। তখন ভাবি, আসলেই তো আমরা অনেক আপনজন হারিয়েছি। এমন কিছু কি করতে পারি না যেখানে সব ফুল এক করা যাবে। হয়তো ভালো কিছু হবে না কিন্তু একটি মালা তো হবে। এই ভাবনা থেকে যুদ্ধে অংশ নেওয়া সব বন্ধু মিলে ‘‘ওরা ১১ জন’’ নির্মাণ করি।’

সিনেমাটি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু দেখেছিলেন উল্লেখ করে সোহেল রানা বলেন, ‘মুক্তি পাওয়ার পর যে কোনোভাবে জাতির পিতা সিনেমাটি দেখেন। এরপর আমার সঙ্গে দেখা হলে মুজিব তিনি আমাকে বলেছিলেন- ‘ভালোই তো বানিয়েছিস। এগিয়ে যা।’

‘এটাকে পুরোপুরি ভালো সিনেমা বলবো না। এটা ডকুমেন্টরি। এই সিনেমায় যা কিছু হয়েছে সবকিছুই সত্যি। এমনকি সিনেমায় ব্যবহৃত অস্ত্রগুলোও জেনুইন। কোনো কিছুতে ডামি ব্যবহার করা হয়নি। এ ব্যাপারে বন্ধু নূরে আলম সিদ্দিকি অনেক সাহায্য করেছে।’ 

অল্প বাজেটে সে সময় সিনেমাটি নির্মাণ করা হয়। অধিকাংশ শিল্পী পারিশ্রমিক নেননি। এ প্রসঙ্গে সোহেল রানা বলেন, ‘যারা কাজ করেছেন তাদের অনেকে বিনা টাকায় কাজ করেছেন। এমনো দিন ছিল, তখন প্রযোজক হিসেবে আমি তাদের ভাত পর্যন্ত খাওয়াতে পারিনি।’

সিনেমায় কয়েকজন বীর মুক্তিযোদ্ধা অভিনয় করেন। তাদের অন্যতম ছিলেন খসরু, মুরাদ, হেলাল ও নান্টু। এ ছাড়াও সিনেমার প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেন রাজ্জাক, শাবানা, কেয়া, নূতন, হাসান ইমাম প্রমুখ। সিনেমার ১১জন মুক্তিবাহিনীর সদস্য মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। এদের মধ্যে আলতাফ ছাড়া আর কারো অভিনয়ে প্রশিক্ষণ ছিল না বলে উল্লেখ করেন সোহেল রানা।