Bangladesh
This article was added by the user . TheWorldNews is not responsible for the content of the platform.

ওয়ানডে ফরম্যাটে দল বৃদ্ধি জরুরি

সম্প্রতি ওয়ানডে ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছে সাবেক ও বর্তমান বহু ক্রিকেটার। বিশেষ করে বেন স্টোকসের অবসর গ্রহণের পর থেকেই ওয়ানডে ক্রিকেট নিয়ে কথা শুরু হয়েছে। ইতিবাচক বিষয় এটি যে, ৫ দিনের টেস্ট নিয়ে কেউ কথা বলছে না অর্থাৎ টানা ৫ দিন দুই দল সমানতালে লড়াইয়ের পর ম্যাচে জয়-পরাজয় না হয়ে ড্র হওয়ার কারণে টেস্ট ক্রিকেট নিয়ে বহু দেশের রাষ্ট্রপ্রধান বিরক্তি প্রকাশ করলেও আইসিসির সবচেয়ে ঐতিহ্যবাহী ফরম্যাট টেস্ট ক্রিকেট স্বগৌরবেই টিকে থাকবে।
ওয়ানডে ক্রিকেট এবং বিশ্বকাপ দিয়েই বিশ্বব্যাপী ক্রিকেট ছড়িয়েছে। ক্রিকেটের বিশ্বকাপ মানেই ওয়ানডে বিশ্বকাপকে বোঝানো হয়। হালের টি২০ ক্রিকেটের আগ্রাসনে একদিনের ক্রিকেট এখন পর্যন্ত রং ধরে রাখলেও ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কা তৈরি হওয়ার কারণ একটাই, তা হলো আন্তর্জাতিক টি২০-এর চেয়েও ফ্র্যাঞ্চাইজিভিত্তিক লিগগুলোর প্রভাব ও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের ব্যস্ত সূচি। টেস্ট খেলুড়ে ১২টি দেশের মধ্যে আয়ারল্যান্ড, জিম্বাবুয়ে ও নিউজিল্যান্ড এখনো ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ শুরু না করলেও অপর ৯টি দলেরই আছে ফ্রাঞ্চাইজিভিত্তিক টি২০ লিগ। নিউজিল্যান্ড, জিম্বাবুয়ে ও আয়ারল্যান্ডেও আছে ঘরোয়া টি২০ লিগ। ৯টি দেশে ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ ছাড়াও আরব আমিরাতে টি১০ লিগ আছে। আরব আমিরাতে টি২০ লিগও শুরু হচ্ছে। কানাডাভিত্তিক টি২০ লিগ আছে। এতসব লিগের মাঝে আন্তর্জাতিক ওয়ানডে ফরম্যাটটা হারিয়ে যাওয়া নিয়ে চিন্তিত সাবেক ও বর্তমান অনেক ক্রিকেটার।
ওয়ানডে ক্রিকেট নিয়ে কথা হলেও ব্যক্তিগতভাবে শঙ্কার কিছু আছে বলে মনে হয় না আমার কাছে। কেননা যতদিন স্পন্সর ও সমর্থকদের আগ্রহ থাকবে এই ফরম্যাটটির প্রতি, ততদিন ভালোভাবেই চলবে ওয়ানডে ক্রিকেট। আর ক্রিকেটপ্রেমীদের কাছে এখনো ওয়ানডে ফরম্যাট অন্যতম সেরা, অন্তত এশিয়ার ক্রিকেটপ্রেমীদের কাছে তো অবশ্যই। টেস্ট ফরম্যাট ঐতিহ্যের ক্রিকেট হলেও রঙিন পোশাকের ক্রিকেটের দিকেই আগ্রহ বেশি এশিয়ান সমর্থকদের। আর সমর্থকদের আগ্রহ মানেই স্পন্সরদের হুমড়ি খেয়ে পড়া। বলা হচ্ছে বহু ক্রিকেটার ওয়ানডে ছাড়তে চাইবে বা ছেড়ে দেবে এক সময়। এতে আমি সমস্যার কিছু দেখছি না। কোনো ক্রিকেটার ওয়ানডে ছেড়ে দিলে অন্য ক্রিকেটার জায়গা করে নেবে। বোর্ডগুলো যদি সদিচ্ছা রাখে, তাহলে তিন ফরম্যাটে আলাদা দল গঠন করে একত্রে তিন দেশের সঙ্গেও খেলা সম্ভব।
তারপরও যেহেতু ওয়ানডে ক্রিকেট নিয়ে কথা হচ্ছে, সেই কথাকে বাস্তবতা হিসেবে ধরে নিলেও বলা যায়, আপনি কুয়েত কিংবা হংকং বা নেপালকে টেস্ট মর্যাদা দিতে পারবেন না এখনই বা কখনোই সম্ভব না হয়তো আর; কিন্তু তাদের আপনি অনায়াসে ওয়ানডে মর্যাদা দিতে পারেন। যেহেতু তাদের দেশে টেস্টের চাপ নেই কিংবা নেই ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগের চাপ, সেহেতু তারা ওয়ানডে খেলার প্রস্তাব সাদরে গ্রহণ করে নেবে। বর্তমানে আইসিসির পূর্ণ সদস্য ১২টি দেশের বাইরে। ওয়ানডে খেলছে আরো কতেক দেশ। ওই দেশগুলোর বাইরে যারা শুধু টি২০ খেলছে, তাদের মধ্য থেকে কম করে ২০টি দলকেও যদি ওয়ানডে মর্যাদা দেয়া হয়, তারা সাদরে গ্রহণ করে নেবে এই ফরম্যাটটি। এতে বিশ্বব্যাপী ক্রিকেটের বিস্তার ঘটবে আরো ভালোভাবে এবং তার মাধ্যমে কমপক্ষে আগামী ৫০ বছর ওয়ানডে ক্রিকেটকে বাঁচিয়ে রাখার মাধ্যমে ক্রিকেট বিশ্বায়ন বাস্তবে রূপ দেয়া সম্ভব। টেস্ট খেলুড়ে দেশগুলোর মধ্যে যেহেতু ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটের চাপ বেড়ে গেছে, সেহেতু নতুন দলগুলোর মাঝে ওয়ানডে ক্রিকেট ছড়িয়ে দেয়া হবে সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত এবং এভাবেই ওয়ানডে ক্রিকেটের গৌরব বজায় রেখে টিকিয়ে রাখা সম্ভব।

জুবায়ের আহমেদ : ক্রীড়া লেখক, কুমিল্লা।
[email protected]