Bangladesh
This article was added by the user . TheWorldNews is not responsible for the content of the platform.

পাতা ও রাবার কষ নষ্টের অভিযোগে ৫ চা বাগানের জিডি

৩০০ টাকা মজুরির দাবিতে চলমান আন্দোলনের সময়ে শ্রীমঙ্গলের ৫টি চা বাগানের পক্ষ থেকে থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। ডায়েরিতে শ্রমিক ধর্মঘটের কারণে কাঁচা চা পাতা ও রাবারের লেটেক্স (কষ) নষ্ট হচ্ছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। 

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শ্রীমঙ্গল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হুমায়ুন কবির। 

শ্রীমঙ্গল থানায় করা সাধারণ ডায়েরি থেকে জানা যায়, মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে চলমান শ্রমিক ধর্মঘটের কারণে কাঁচা চা পাতা নষ্ট হচ্ছে  যে সব বাগানে তারমধ্যে রাজঘাট চা বাগানের কারখানায় ১ লাখ ৪৮ হাজার ৭৩৫ কেজি, ডিনস্টন চা বাগানের কারখানায় ৯৯ হাজার ২৫০ কেজি, বালিশিরা চা বাগান কারখানায় ৫০ হাজার ২০৭ কেজি, আমরাইল চা বাগান কারখানায় ৫ হাজার ৬৮৩ কেজি কাঁচা চা পাতা নষ্ট হয়ে গেছে৷ অপরদিকে জাগছড়া চা বাগানে ২ হাজার ৩০৫ লিটার লিটেক্স (কষ) নষ্ট হয়ে গেছে। শ্রমিকরা ধর্মঘট ডেকে কাজ বন্ধ রাখায় উত্তোলিত চা পাতা ও রাবারের কষগুলো প্রক্রিয়াজাত করা যাচ্ছে না৷ তাই এই কাঁচা পাতাগুলো ও কস কারখানায় থেকে নষ্ট হচ্ছে এবং এতে তাদের কোটি কোটি টাকার ক্ষতি হচ্ছে৷ 

সাধারণ ডায়েরির বিষয়ে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের অর্থ সম্পাদক পরেশ কালিন্দি বলেন,  শুনলাম বাগান কর্তৃপক্ষ থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন। 

তিনি বলেন, এই চা পাতা নষ্ট হওয়ার পিছনে মালিক পক্ষই দায়ী। তারা আন্দোলনে যাওয়ার আগে মালিক পক্ষকে মজুরি বাড়ানোর জন্য আল্টিমেটাম দিয়েছিলেন। পরবর্তীতে তারা টানা চার দিন মাত্র দুই ঘণ্টা কর্মবিরতি দেন। তখন চা শ্রমিকরা কর্মবিরতি করেও বাগানের সব কাজ করেছেন। দুই ঘণ্টার কর্মবিরতি করেও তারা চা বাগানের ক্ষতি করেননি। তাদের দাবি তখনই মেনে নেওয়া বা তাদের সাথে সমঝোতা বৈঠকে মালিক পক্ষ বসলে আজকের ধর্মঘটের প্রয়োজন পড়তো না। মালিক পক্ষ ইচ্ছে করেই কালক্ষেপণ করেই চায়ের ক্ষতি করছে। গত ১৯ মাস ধরে মজুরি সমস্যার সমাধান না করে যে ক্ষতি হয়েছে সেটার জন্য মূলত বাগান কর্তৃপক্ষ দায়ী৷ 

শ্রীমঙ্গল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) হুমায়ুন কবির বলেন, শ্রীমঙ্গলের রাজঘাট চা বাগান, ডিনস্টন চা বাগান, আমরাইল ছড়া চা বাগান, বালিশিরা চা বাগান ও জাগছড়া চা বাগান এই ৫ টি চা বাগানের অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজাররা বাদি হয়ে শ্রীমঙ্গল থানায় গত (১৬ আগস্ট) রাতে ও আজকে ((১৭ আগস্ট) রাতে আলাদা আলাদা ভাবে সাধারণ ডায়েরি করেছেন। 

তিনি বলেন, তারা বিষয়গুলো তদন্ত করে দেখবেন। 

উল্লেখ্য, ৩০০ টাকা মজুরির দাবিতে চলমান ধর্মঘট নিরসনে মঙ্গলবার দিনব্যাপী মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে বিভাগীয় শ্রম দপ্তর কার্যালয়ে চা শ্রমিক নেতাদের নিয়ে আলোচনায় বসেন শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খালেদ মামুন চৌধুরী। সেখানে কোন সমঝোতায় না পৌঁছাতে পেরে বুধবার রাতে ঢাকার শ্রম অধিদপ্তরের কার্যালয়ে মালিক পক্ষ-শ্রমিক পক্ষ নিয়ে ত্রিপক্ষীয় সভার আয়োজন করে শ্রম অধিদপ্তর। সেখানে বিকাল সাড়ে ৬ টার দিকে আলোচনা শুরু হয়ে চলে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত সমঝোতা হয়নি। মালিকপক্ষ বলছেন আন্দোলন তুললে সমাধান হবে, অপরদিকে শ্রমিক নেতারা বলছেন মজুরী বৃদ্ধির ঘোষণা দিলেই আন্দোলন প্রত্যাহার হবে। গত ৯ আগস্ট থেকে ৪ দিন দুই ঘণ্টা করে কর্মবিরতি ও গত শনিবার ১৩ আগস্ট থেকে অর্নিদিষ্টকালের ধর্মঘট করছেন চা শ্রমিকরা। বুধবার ধর্মঘট করে দেশের প্রত্যেকটি চা বাগানে সভা সমাবেশ বিক্ষোভ মিছিল চালিয়ে যান শ্রমিকরা।