Bangladesh
This article was added by the user . TheWorldNews is not responsible for the content of the platform.

পাঠ্যবই পাওয়া নিয়ে শঙ্কা : দায়িত্বশীলদের জোর উদ্যোগ জরুরি

শিক্ষার্থীদের হাতে নির্দিষ্ট সময়ে নতুন বই তুলে দেয়া সরকারের একটি চ্যালেঞ্জ, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। বলা যায়, নববর্ষে শিক্ষার্থীদের জন্য এটি একটি বাড়তি আনন্দের দিন। দেশের প্রতিটি জনপদে চলে এ উৎসব। কিন্তু এবার সময়মতো শিক্ষার্থীরা হাতে বই না পাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। গত বছরও একই অবস্থা দেখেছি আমরা। এবার বই ছাপানোর কার্যাদেশ দিতে দেরি করাসহ তিনটি কারণে এবারো সময়মতো শিক্ষার্থীদের হাতে মানসম্মত সব বই তুলে দেয়া নিয়ে তৈরি হয়েছে শঙ্কা। নতুন শিক্ষাবর্ষ শুরু হতে মাত্র সাড়ে ৩ মাস বাকি। গতকাল ভোরের কাগজে প্রকাশিত সংবাদে বলছে, আনুষঙ্গিক কাজ শেষ করে এখন পর্যন্ত প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের পাঠ্যবই ছাপানোর কার্যাদেশই দিতে পারেনি এনসিটিবি। তাহলে প্রায় ৩৫ কোটি বই কীভাবে ছাপানো সম্ভব। এ অবস্থায় ২০২৩ সালের ১ জানুয়ারি কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থীদের হাতে পাঠ্যবই পৌঁছাবে তো? অতীতে আমরা দেখেছি, বই বিপণন নিয়ে নানা ঘটনা। বিনামূল্যে বিতরণের বই কালোবাজারে বিক্রি, বইয়ের সঙ্গে নোট বই কিনতে অভিভাবকদের বাধ্য করার মতো অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা ঘটেছে। মাধ্যমিক স্তরের বিভিন্ন শ্রেণির বই বছরের পর বছর সময়মতো শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছাতে ব্যর্থ হয়েছেন প্রকাশকরা। অন্যদিকে পাঠ্যপুস্তকের মান নিয়েও সংশয় ছিল। অস্পষ্ট ছাপা, নিম্নমানের কাগজ ব্যবহার করা হতো এসব পাঠ্যপুস্তকে। কিন্তু বিগত ১০ বছর যে ঝকঝকে ছাপা রঙিন বইগুলো শিক্ষার্থীর হাতে দেয়া হয়েছে তাতে শিক্ষার্থীদের বই পাঠের আনন্দ বহুগুণ বেড়ে যায়। সদিচ্ছা থাকলে এসব অন্তরায় দূর করা যায়, সেটা প্রমাণ করেছে সরকার। প্রধানমন্ত্রী এর আগে একাধিকবার শিক্ষাকে দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার প্রধান হাতিয়ার হিসেবে অভিহিত করেছেন। এটি যে দারিদ্র্যমুক্তির কার্যকর অস্ত্র তা প্রমাণিত হয়েছে শিক্ষা বিস্তারের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে দারিদ্র্যমুক্তির ঘটনায়। বিনামূল্যে পাঠ্যবই বিতরণসহ শিক্ষা খাতে বাজেটের এক উল্লেখযোগ্য বিনিয়োগ যে জাতির জন্য সত্যিকার অর্থেই লাভজনক তা বাস্তবতার নিরিখেই প্রমাণিত হয়েছে। তবে দেশে পাঠ্যপুস্তক প্রকাশ ও বিতরণকে ঘিরে যে কায়েমি চক্র গড়ে উঠেছিল তারা এখনো সক্রিয়। এ ক্ষেত্রে সরকারের অনমনীয় মনোভাবই প্রত্যাশিত। পাশাপাশি মনে রাখা দরকার, বই উৎসবকে তাৎপর্যবহ করতে হলে শিক্ষার মানের দিকেও গুরুত্ব দিতে হবে। আমরা মনে করি, কোমলমতি শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার ব্যবস্থা এমন হওয়া উচিত, যাতে পাঠের ভেতর দিয়ে তারা আনন্দ খুঁজে পায়। শিক্ষা হতে হবে যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আধুনিক ও বিজ্ঞানসম্মত। শিক্ষার মান নিশ্চিত সরকারের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হলেও সে চ্যালেঞ্জ দক্ষতার সঙ্গেই মোকাবিলা করতে হবে। করোনার দুই বছর বই উৎসব হয়নি। চলতি শিক্ষাবর্ষে বছরের শুরুতে সব শিক্ষার্থীর হাতে সব পাঠ্যবই তুলে দিতে পারেনি এনসিটিবি। ফেব্রুয়ারি-মার্চেও কোনো কোনো মুদ্রণকারী বই দিয়েছিল। বইয়ের কাগজের মান নিয়েও অভিযোগ উঠেছিল। নতুন শিক্ষাবর্ষের শুরুতেই প্রতিটি শিক্ষার্থীর হাতে নতুন বই পৌঁছানো নিশ্চিত হবে, বইয়ের মান ঠিক থাকবে- এমন প্রত্যাশা রাখছি।