নিউ জিল্যান্ড ক্রিকেট (এনজেডসি) ট্রেন্ট বোল্টকে তার কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকে অব্যাহতি দিতে রাজি হয়েছে। নিজের পরিবারকে আরও সময় দিতে ও টি-টোয়েন্টি লিগগুলোতে বাধাহীনভাবে খেলতে বোর্ডের চুক্তি থেকে ছেড়ে দেওয়ার অনুরোধ করেন এই পেসার। তার আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার এখন হতে যাচ্ছে বেশ সীমিত।
বুধবারের ঘোষণার আগে এনজেডসির সঙ্গে কয়েক দফায় আলোচনা করেন বোল্ট। আগামী জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে সংযুক্ত আরব আমিরাত নাকি দক্ষিণ আফ্রিকার নতুন টি-টোয়েন্টি লিগে তিনি খেলবেন, সেই ঘোষণা শিগগিরই আসতে যাচ্ছে। কিন্তু এনজেডসির প্রধান নির্বাহী ডেভিড হোয়াইট বলেছেন, চুক্তি থেকে সরে গেলেও অস্ট্রেলিয়ায় হতে যাওয়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে খেলানো হবে তাকে। তারপর থেকেই সীমিত হয়ে পড়বে তার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে খেলা। এমনকি চলতি ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরেও দেখা যাবে ৩৩ বছর বয়সী পেসারকে।
বোল্ট বলেছেন, ‘এটা ছিল আমার জন্য সত্যিই কঠিন একটি সিদ্ধান্ত এবং এই অবস্থানে আসতে আমাকে সমর্থন দেওয়ায় এনজেডসিকে ধন্যবাদ জানাই। আমার দেশের হয়ে ক্রিকেট খেলা ছিল ছেলেবেলার স্বপ্ন এবং গত ১২ বছরে ব্ল্যাক ক্যাপদের সঙ্গে যা কিছু অর্জন করেছি, তার জন্য আমি খুব গর্বিত।’
‘শেষ পর্যন্ত এই সিদ্ধান্ত আমার স্ত্রী গার্ট ও তিন ছোট ছেলের জন্য। পরিবার আমার জন্য সবসময় ছিল বড় অনুপ্রেরণা এবং এটাকে সবার আগে রাখতে পেরে ও ক্রিকেট পরবর্তী জীবনের প্রস্তুতি শুরু করতে পেরে আমি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছি।’
বোল্ট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নেননি, কিন্তু নিউ জিল্যান্ডের হয়ে তাকে এখন খুব কমই খেলতে দেখা যাবে। হোয়াইট নিশ্চিত করেছেন, এনজেডসি তাদের কেন্দ্রীয় চুক্তিতে থাকা খেলোয়াড়দের যে প্রাধান্য দেয় সেটা বুঝে নিয়েই এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন কিউই পেসার।
হোয়াইট বললেন, ‘আমাদের কয়েক দফা আলোচনা হয়েছে এবং বোল্ট জানে, দল নির্বাচনের ক্ষেত্রে এনজেডসি সবসময় তাদের কেন্দ্রীয় কিংবা ঘরোয়া চুক্তিতে থাকা খেলোয়াড়দের প্রাধান্য দিয়ে যাবে।’
বোল্ট বুঝতে পারছেন, তার এই সিদ্ধান্ত নিউ জিল্যান্ডের হয়ে খেলার ওপর প্রভাব ফেলবে। এই পেসার বলেছেন, ‘আমার দেশের হয়ে খেলার তীব্র ইচ্ছা এখনও আছে এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দেওয়ার মতো দক্ষতাও আছে বলে মনে করি। কিন্তু জাতীয় চুক্তিতে না থাকা আমাকে দলে নেওয়ার ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলবে, এই বিষয়টিকে আমি সম্মান করি। আগেও বলেছি, একজন ফাস্ট বোলার হিসেবে আমার ক্যারিয়ারের দৈর্ঘ্য সীমিত এবং আমি মনে করি পরের ধাপে যাওয়ার জন্য এখনই সঠিক সময়।’
২০১১ সালে হোবার্টে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বিখ্যাত টেস্ট জয়ের ম্যাচে অভিষেকের পর থেকে বোল্ট আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছেন ২১৫টি। নিউ জিল্যান্ডের হয়ে ৩০০ টেস্ট উইকেট নেওয়া চার বোলারের একজন তিনি। লাল বলের ক্রিকেটে তার উইকেট ৩১৭টি- ইনিংসে পাঁচ উইকেট নিয়েছেন ১০ বার এবং ম্যাচে ১০ উইকেট একবার। বিশ্বের বর্তমান এক নম্বর র্যাংকিংধারী ওয়ানডে বোলার বোল্ট একদিনের ক্রিকেটে খেলেছেন ১৬৯ ম্যাচ, উইকেট ৬২টি।