Bangladesh
This article was added by the user . TheWorldNews is not responsible for the content of the platform.

সৌদিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার যুবক খুন, ৪ মাস পর লাশ এলো বাড়িতে

পরিবারে সচ্ছলতা আনতে চার বছর আগে সৌদি আরবে পাড়ি জমিয়েছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার আরেফিন খান (৩১)। সৌদি আরবে ভালোই কাটছিল আরেফিনের জীবন। কিছুটা সচ্ছলতাও ফিরে এসেছিল তাদের সংসারে। গেল সেপ্টেম্বরে আরেফিনের দেশে আসার কথা ছিল। কিন্তু তার আগেই গত ২ জুন সৌদি আরবে খুন হন এই যুবক।

মৃত্যুর চার মাস পর বুধবার (৫ অক্টোবর) সকালে আরেফিনের লাশ সরাইলে আসে। পরে জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে লাশের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। বিকেলে আরেফিনের লাশ তার নিজ গ্রামে দাফন করা হয়।

আরেফিন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলার শাহজাদাপুর ইউনিয়নের শাহজাদাপুর গ্রামের আলমগীর খানের ছেলে। আরেফিনের মৃত্যুর ঘটনায় গত ২৩ সেপ্টেম্বর তার ছোট ভাই আশিক খান (২৬) বাদী হয়ে সরাইল থানায় আটজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।

মামলার আসামিরা হলেন- শাহজাদাপুর গ্রামের ফখরুল ইসলাম ওরফে ফারুক (৪৮), তার বড় ভাই জিতু রহমান (৫৫), সাদেক মিয়া (২৮), তার মা জৈবন বেগম (৫২), সাদেকের বড় ভাই সুমন মিয়া (৩০), ছোট ভাই জাকির মিয়া (২৫), ইকবাল হোসেন (২৫) ও মিজান মিয়া (৪৮)।

আরেফিনের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চার ভাইয়ের মধ্যে আরেফিন সবার বড়। পরিবারের সবার সুখের কথা ভেবেই আরেফিন চার বছর আগে সৌদি আরবে গিয়েছিলেন। মধ্যস্থতা করেছিলেন ওই গ্রামের ফখরুল ইসলাম ওরফে ফারুক নামের এক ব্যক্তি। তিনি এখনো সৌদি আরবেই আছেন।

আরও পড়ুন: ২৫ লাখ টাকা কাল হলো সৌদি প্রবাসীর, বাড়িতে মাতম

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, আরেফিনের কাছে ২৫ লাখ টাকা জমা ছিল। ওই টাকা হাতিয়ে নেওয়ার জন্য ফারুকসহ একটি দালাল চক্র আরেফিনের পিছু নেয়। চক্রটি আরেফিনকে ইতালি নিয়ে যাওয়ার আশা দেখায়। আরেফিনও ফাঁদে পা দেন। পরে আরেফিনের সহকর্মীদের মাধ্যমে পরিবারের লোকজন জানতে পেরেছেন, গত ২ জুন সৌদি আরবের সাফা এলাকার মরুভূমিতে নিয়ে ফারুক ও তার চক্রের লোকজন আরেফিনকে খুন করেন। মৃত্যুর তিন দিন পর আরেফিনের লাশ উদ্ধার করে হাসপাতালের হিমাগারে রাখে ওই দেশের পুলিশ।

এদিকে বুধবার বিকেলে আরেফিনের লাশ গ্রামে পৌঁছালে সেখানে নারী-পুরুষের ভিড় জমে যায়। এসময় স্বজনেরা কান্নায় ভেঙে পড়েন।

ছোট ভাই আশিক খান বলেন, ‘ভাইয়ের লাশ আনতে গিয়ে আমাদের আরও চার লাখ টাকা খরচ করতে হয়েছে। একটি দালাল চক্র এ টাকা আত্মসাৎ করেছে। পরে আমরা জানতে পেরেছি, আমার ভাইয়ের লাশ সরকারি খরচেই এসেছে।’

আরেফিনের মা বিউটি খানম বলেন, ‘আমাদের সব শেষ। এমন সর্বনাশ কে করল? ছোট ছেলেদের পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যাবে। আমাদের ছেলের টাকাপয়সা লুটে নিয়ে কৌশলে মেরে ফেলেছে। আমরা এ ঘটনার বিচার চাই।’

সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসলাম হোসেন বলেন, ‘মামলার আসামিদের মধ্যে চারজন সৌদি প্রবাসী। মামলার তদন্ত চলছে। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’