মিরপুরে শেষ ওভারে ফাইনাল জয়ের জন্য ১০ রান দারকার ছিল বিসিবি সাউথ জোনের। বিসিএলে কোনো ম্যাচ না হেরে ফাইনালে উঠায় সাউথ জোন বেশ আত্মবিশ্বাসী ছিল। বিশেষ করে ক্রিজে ষাটের ঘরে পৌঁছে যাওয়া নাসির হোসেন থাকায় শিরোপা জয়ের ঘ্রাণ পাচ্ছিল তারা।
কিন্তু প্রথম বলেই সব ওলটপালট। শফিকুল ইসলামের বল ডিপ ওয়াইড লং অনে পাঠিয়ে ২ রান নিতে গিয়ে রান আউট নাসির। পরের বলে নতুন ব্যাটসম্যান শরিফুল ইসলামের ডট। তৃতীয় বলে বাই থেকে এক রান। চতুর্থ ও পঞ্চম বলে আবার ডট বাঁহাতি পেসারের।
শেষ বলে ছক্কা হলেও ১ রানে ম্যাচ জেতে নর্থ জোন। ব্যাটসম্যান কামরুল ইসলাম রাব্বী ৪ রানের বেশি আদায় করতে পারেননি। ৩ রানে ম্যাচ জিতে বিসিএলের ওয়ানডে সংস্করণের তৃতীয় আসরের শিরোপা জিতল নর্থ জোন।
আগে ব্যাটিং করে নর্থ জোন ৮ উইকেটে ২৪৪ রানের মাঝারি মানের পুঁজি পায়। লক্ষ্য তাড়ায় ভালো শুরুর পরও হোঁচট খায় সাউথ জোন। ৯ উইকেটে ২৪১ রানে থামে তাদের ইনিংস। নর্থ জোনের জয়ের নায়ক স্পিনার রাকিবুল হাসান। বাঁহাতি স্পিনার সাউথ জোনের ইনিংসের মাঝে এমন ধাক্কা দেন তাতেই সব শেষ।
লক্ষ্য তাড়ায় শুরুতে নাঈম শেখকে (১১) হারালেও দ্বিতীয় উইকেটে অধিনায়ক এনামুল হক বিজয় ও জাকির হাসান শতরানের জুটি গড়েন। দলীয় রান যখন ১১৭ তখন এনামুলের ভুল ডাকে জাকির রান আউট হন। পরের ১০ রান তুলতেই সাউথ জোন হারায় ৫ উইকেট। রাকিবুল একাই তুলে নেন ৪ উইকেট। তাতে স্বল্প পুঁজি নিয়েও ম্যাচ জমিয়ে তুলে নর্থ জোন।
তবে নাসির থাকায় ম্যাচে লড়াই হয়েছে। তাকে সঙ্গ দিয়েছেন নাসুম আহমেদ। নাসুম ৭০ বলে ৩৮ রান করেন। নাসিরের ব্যাট থেকে ৮৯ বলে আসে ৬১ রান। দুজন সপ্তম উইকেটে ৮৫ রান তুলে ভয় পাইয়ে দিয়েছিল আকবর আলীদের। কিন্তু এ জুটি ভাঙার পর আর কেউ লড়াই করতে পারেনি। রাকিবুল ১০ ওভারে ২৯ রানে নেন ৪ উইকেট। তার ৬০ বলে ৪১টিই ছিল ডট। ১টি করে উইকেট পেয়েছেন সাইফ উদ্দিন ও রিপন মন্ডল।
এর আগে দুপুর সাড়ে ১২টায় শুরু হওয়া ম্যাচে টস জিতে আগে ব্যাটিং করতে নেমে ভালো শুরু পায়নি নর্থ জোন। লিটন (১), শাহাদাত দিপু (৪) ও সৈকত আলী (২২) দ্রুত সাজঘরে ফেরেন। সেখান থেকে জুটি বেঁধে পরিস্থিতি সামলে নেন ফজলে মাহমুদ ও মাহমুদউল্লাহ।
দুজন রান পেলেও মন্থর গতিতে এগিয়েছেন। নাসিরের বলে স্কুপ করতে গিয়ে বোল্ড হওয়ার আগে মাহমুদউল্লাহ ৫৩ বলে ৩৯ রান করেন। মেহেদী হাসান মিরাজের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেওয়ার আগে ফজলে মাহমুদ ১১৪ বলে ৬৫ রান করেন। এই ইনিংসই ছিল নর্থ জোনের সর্বোচ্চ রান। পরবর্তীতে তাদের রান বাড়িয়েছেন আকবর আলী ও শামীম। আকবর ৫৩ বলে ৩৯ ও শামীম ২০ বলে ৩৭ রান করেন।
প্রতিযোগিতার শেষ হাসি হেসেছে নর্থ জোন। রানার্সআপ সাউথ জোন। সর্বোচ্চ ২১০ রান করেছেন সাউথ জোনের নাঈম শেখ। সর্বোচ্চ ১০ উইকেট পেয়েছেন সাউথ জোনের অফস্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজ।