Bangladesh
This article was added by the user . TheWorldNews is not responsible for the content of the platform.

সহজ ম্যাচ কঠিন করে জিতল টাইগাররা

দুই ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচে আজ রবিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সংযুক্ত আরব আমিরাতকে ৭ রানে হারিয়েছে বাংলাদেশ। এর আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ১৫৮ রান সংগ্রহ করে টাইগাররা। ১৫৯ রানের লক্ষ নিয়ে খেলতে নেমে শেষ পর্যন্ত ১৯.৪ বলে ১৫১ রানে গুটিয়ে যায় আরব আমিরাতের ইনিংস। ফলে ৭ রানে ম্যাচ জিতে সোহান বাহিনী। দলের হয়ে তিনটি করে উইকেট করে নেন মেহেদি হাসান মিরাজ এবং শরিফুল ইসলাম। দুইটি উইকেট শিকার করেন মোস্তাফিজুর রহমান।

ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালো করতে পরেনি সফরকারীরা। দলীয় ৪৭ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে বাংলাদেশ। তখন দলের হাল ধরেন আফিফ হোসেন। দলের বিপদে ব্যাট হাতে গর্জে ওঠেন তিনি। এর আগে দলীয় ১১ রানে ওপেনার সাব্বির রহমান আউট হন। তিনি রানের খাতা খোলার আগে সাজঘরে ফিরেন। এরপর ক্রিজে আসেন অভিজ্ঞ টাইগার ব্যাটসম্যান লিটন দাস। তিনি আরেক ওপেনার মেহেদি হাসান মিরাজকে ভালই সঙ্গ দিচ্ছিলেন। কিন্তু দ্রুত রান তুলতে গিয়ে দলীয় ২৬ রানে আউট হন লিটন। ৮ বলে ৩ টি চার মেরে ১৩ রানে সাজঘরে ফিরেন তিনি। এরপর মিরাজও তাড়াহুড়ো করে রান তুলতে গিয়ে আউট হন। ১৪ বলে ১২ রান করেন তিনি। দলীয় ৪৭ রানে সাজঘরে ফিরেন ইয়াসির আলী। তিনি ব্যক্তিগত ৪ রানে বোল্ড হোন। ৪ উইকেট হারানোর পর মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত ও আফিফ মিলে ২৩ বলে ৩০ রানের জুটি গড়েন। কিন্তু কার্তিক মায়াপ্পানের করা একাদশ ওভারের শেষ বলে এগিয়ে এসে ব্যাট চালাতে গিয়ে স্ট্যাম্পড হন মোসাদ্দেক। তিনি ৮ বলে ৩ রান করেন। শেষে আফিফ হোসেন ও নুরুল হাসানের জুটিতে ১৫৮ রানের লড়াকু পুঁজি পায় বাংলাদেশে। তারা দুজন অবিচ্ছিন্ন থেকে তোলেন ৮১ রান। আফিফ ৫৫ বলে ৭ চার ও ৩ ছক্কায় ৭৭ রানে অপরাজিত থাকেন। তার সঙ্গে ২৫ বলে ২ চার ও ২ ছক্কায় ৩৫ রানে অপরাজিত থাকেন সোহান। আরব আমিরাতের হয়ে বল হাতে সর্বোচ্চ তিন উইকেট শিকার করেন সাবির আলী। দুই উইকেট নেন কার্তিক মায়াপ্পান। একটি করে উইকেট শিকার করেন জুনাইদ সিদ্দিকি, জাওয়ার ফরিদ, বাসিল হামিদ।

১৫৯ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে আরব আমিরাত। মোহাম্মদ ওয়াসিমের রানআউটে প্রথম উইকেটের দেখা পায় বাংলাদেশ। শরিফুলের বলে চিরাগ সুরি সোজাসুজি ডিফেন্ড করলে শরিফুল হাতের স্পর্শ লেগে বল উইকেট ভেঙে দেয়। নন স্ট্রাইক প্রান্তে থাকে ওয়াসিম বেরিয়ে যান বক্স থেকে। চেষ্টা করেও ফিরতে পারেননি। রিপ্লে দেখে আউট ঘোষণা করেন টিভি আম্পায়ার। ১৫ বলে ১৫ রান করে থামেন ওয়াসিম।

মোস্তাফিজের করা পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে টানা তিন চারে চিরাগ সুরি নেন ১৩ রান। পরের ওভারে নাসুম দেন আরও ২ রান বেশি। সুরি-আরইয়ান লাকরা একটি করে চার-ছক্কায় নেন ১৫ রান। দুজনে ২ ওভারে দেন ২৮ রান। দুজনে ২০ বলে ৩৭ রান যোগ করেন। এরপরই টানা ২ ওভারে মিরাজ নেন ২ উইকেট। ভয়ঙ্কর চিরাগ সুরিকে সাজঘরে পাঠালেন মিরাজ। ২৪ বলে ৩৯ রান করেন এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান। এক ওভার পরেই আবার মিরাজের আঘাত। এবার ফেরালেন সেট ব্যাটসম্যান আরিয়ানকে। ১৫ বলে ১৯ রান করেন আরিয়ান। মিরাজের পর আঘাত হানেন মোস্তাফিজ। তার বলে মিরাজের দারুণ ক্যাচে সাজঘরে রিজওয়ান। ১ চারে ৬ বলে ৫ রান করেন মিরাজ। মোস্তাফিজের এটি প্রথম উইকেট। এর আগের ওভারে দিয়েছিলেন ১৩ রান। ১৩তম ওভারে শরিফুলের আঘাতের পরেই আবার মিরাজের আক্রমণ। নিজের টানা তিন ওভারে নেন ৩ উইকেট। আরব আমিরাত হারায় ষষ্ঠ উইকেট। লেগ সাইডে খেলতে চেয়েছিলেন অরবিন্দ, কিন্তু টাইমিং ঠিকঠাক হয়নি। মিরাজের হাতেই ক্যাচ দেন তিনি। ১৬ বলে ১৬ রান করেন অরবিন্দ। দলীয় ১০২ রানে ফিরেন জাওয়ার ফরিদ।

দলের খাতার ২২ রান যোগ করতেই মোস্তাফিজের বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফিরেন কার্তিক মায়াপ্পানে। ত্রিদেশীয় সিরিজের আগে নিজেদের ঝালাই করে নিতে আরব আমিরাত সফর করছে টাইগাররা। সাকিব আল হাসানের অনুপস্থিতিতে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন নুরুল হাসান সোহান। ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগ খেলতে আগে থেকেই অনাপত্তিপত্র নেয়া আছে বিশ^সেরা অলরাউন্ডারের। সাকিব দলের সঙ্গে সরাসরি নিউজিল্যান্ডে যোগ দেবেন। আরব আমিরাতের বিপক্ষে দলে ফিরছেন নুরুল হাসান, লিটন দাস, ইয়াসির আলী। চোটের কারণে তারা তিনজন এশিয়া কাপে খেলতে পারেননি। এর আগে জিম্বাবুয়ে সফরে হ্যামস্ট্রিংয়ে চোট পেয়েছিলেন লিটন। ইয়াসিরের চোট অবশ্য তারও আগের, ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর থেকেই ফিরে এসেছিলেন তিনি। বিশ্বকাপ দলে আছেন দুজনই। তাছাড়া এশিয়া কাপে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে সাব্বির-মিরাজকে ওপেন করিয়েছিল বাংলাদেশ। আরব আমিরাতের বিপক্ষেও বিকল্প হয়নি।

এমকে