Bangladesh
This article was added by the user . TheWorldNews is not responsible for the content of the platform.

সুইস ব্যাংকের কাছে অর্থ পাচারের তথ্য চেয়েছে বিএফআইইউ

ucb stock regular

সুইস ব্যাংকের কাছে অর্থ পাচারের তথ্য চাওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. সিরাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, দেশের আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিলিজেন্ট ইউনিট (বিএফআইইউ) একাধিকবার বিভিন্ন দেশের কাছে বিভিন্ন বিষয়ে তথ্য চেয়েছে। তাদের কাছে একাধিকবার চিঠিও দেওয়া হয়েছে। সেই সংগ্রহ করা তথ্য রিপোর্ট আকারেও প্রকাশ করেছে বিএফআইইউ।

বৃহষ্পতিবার (১১ আগস্ট) তিনি সাংবাদিকদেও এসব তথ্য জানান।

সুইজারল্যান্ডের বিভিন্ন ব্যাংকে বাংলাদেশের নাগরিকদের জমা করা অর্থের বিষয়ে বাংলাদেশ সরকার এখন পর্যন্ত সুইস ব্যাংক বা কর্তৃপক্ষের কাছে নির্দিষ্ট কোনো তথ্য চায়নি, বাংলাদেশে নিযুক্ত সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত নাতালি চুয়ার্ডের এমন মন্তব্য সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি এসব কথা বলেন।

LankaBangla securites single page

সিরাজুল ইসলাম বলেন, আমাদের যেখানে-যেখানে তথ্য সংগ্রহের প্রয়োজন হয়, তারা সব জায়গাতেই তথ্য সংগ্রহ করে থাকে। বিএফআইইউ আর্ন্তাজিতকভাবে এগমন্ড গ্রুপের সদস্য হওয়ায় এই গ্রুপের অন্য যে কোনো সদস্য দেশের কাছে যে কোনো বিষয়ে বিএফআইইউ তথ্য চাইতে পারে।

তিনি আরো বলেন, ব্যাংকিং চ্যানেলে যদি আন্ডার ইনভয়েসিং এবং ওভার ইনভয়েসিংয়ের মাধ্যমে আমাদের দেশের অর্থ অন্য দেশে চলে যায়, তাহলে বাংলাদেশ ব্যাংক সেটা নজরদারি করতে পারে। এবং কোন ব্যাংকের মাধ্যমে গেছে সেটাও বাংলাদেশ ব্যাংক জানতে পারবে এবং সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে পারবে। কিন্তু সেটা যদি অন্য কোনো মাধ্যমে যায় তাহলে বিএফআইইউ সেই তথ্য সংগ্রহ করবে।

এদিকে, গত ১৮ জুন রাজধানীতে অনুষ্ঠিত বিএফআইইউ এর ‘বাংলাদেশে অর্থ-পাচার ও সন্ত্রাসীকার্যে অর্থায়ন প্রতিরোধ কার্যক্রমের ২০ বছর’ শীর্ষক সেমিনারে বিএফআইইউ অতিরিক্ত পরিচালক মো. কামাল হোসেন বলেন, বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া অর্থ বিষয়ে জানতে সুইস অথোরিটির কাছে প্রতিবারের মতো এবারও তথ্য চেয়ে আবেদন করেছে বিএফআইইউ।

তিনি বলেন, বিএফআইইউ বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশের ৬৭ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের অর্থ সম্পকে তথ্য পেয়েছে সুইস ন্যাশনাল ব্যাংকের কাছ থেকে। সেই তথ্য বাংলাদেশের বিভিন্ন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, দুদক ও তদন্তকারী সংস্থাকে দেওয়া হয়েছে।

সুইস ন্যাশনাল ব্যাংকে থাকা ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের অর্থের বিষয়ে ২০১৪ সাল থেকে তথ্য প্রকাশ করে আসছে ব্যাংকটি।

বুধবার (১০ আগস্ট) জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে সুইস রাষ্ট্রদূত বলেন, সুইজারল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুইস ন্যাশনাল ব্যাংক বা এসএনবির ২০২২ সালের জুন মাসে প্রকাশিত বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশিরা কত টাকা জমা রেখেছে ওই তথ্য প্রতিবছর সুইস ন্যাশনাল ব্যাংক দিয়ে থাকে এবং ওই অর্থ অবৈধপথে আয় করা হয়েছে কি না, এটি আমাদের পক্ষে বলা সম্ভব নয়। তিনি বলেন, গত বছরে বাংলাদেশিরা প্রায় তিন হাজার কোটি টাকার সমপরিমাণ অর্থ সুইজারল্যান্ডের বিভিন্ন ব্যাংকে জমা করেছেন।

নাতালি চুয়ার্ড বলেন, তথ্য পেতে হলে কী করতে হবে, সে সম্পর্কে আমরা সরকারকে জানিয়েছি, কিন্তু নির্দিষ্ট কোনো তথ্যের জন্য আমাদের কাছে অনুরোধ করা হয়নি। আমরা আন্তর্জাতিক মানদণ্ড বজায় রাখার ক্ষেত্রে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। দুই পক্ষের সম্মতির ভিত্তিতে এ ধরনের তথ্য আদান-প্রদান করা সম্ভব এবং সেটি তৈরি করতে হবে। এটি নিয়ে আমরা বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করছি।

এদিকে, সুইস রাষ্ট্রদূতের বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে সুইস ব্যাংকে জমা রাখা অর্থের বিষয়ে সুইজারল্যান্ড সরকারের কাছে বাংলাদেশ সরকার কোনো তথ্য না চাওয়ার কারণ জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট। আগামী ১৪ আগস্টের মধ্যে দুদক ও রাষ্ট্রপক্ষকে এ তথ্য জানাতে বলা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১১ আগস্ট) বিচারপতি নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে এ আদেশ দেন।

অর্থসূচক/এমএস/এমএস