Bangladesh
This article was added by the user . TheWorldNews is not responsible for the content of the platform.

তেল ও স্বর্ণের চেয়েও দামি ডাটা: টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী

ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, ডাটা তেল বা স্বর্ণের চেয়েও দামি। ডাটা মানেই সম্পদ। আমরা নিশ্চিত করতে চাই বাংলাদেশের ডাটা যাতে বাংলাদেশেই থাকে। সারা দুনিয়া ব্যবহার করবে কিন্তু অবশ্যই অনুমতি নিয়ে ব্যবহার করবে। এই লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি।

মন্ত্রী গতকাল বুধবার ঢাকায় এক হোটেলে রবি আয়োজিত ডাটাথনের দ্বিতীয় সংস্করণের সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ বা স্মার্ট বাংলাদেশ ডিজিটাল সংযুক্তির হাইওয়ে দিয়েই এগিয়ে যাবে। দেশে টেলিযোগাযোগ খাতে মানসম্মত গ্রাহক সেবা নিশ্চিত করতে অপারেটরসমূহের মধ্যে সুষ্ঠু প্রতিযোগিতার পরিবেশ থাকা অপরিহার্য। টেলিযোগাযোগ খাতে সেবার গুণগত মান নিশ্চিত করা এবং বাজারে সুস্থ প্রতিযোগিতার পরিবেশ সৃষ্টির উদ্দেশ্য নিয়েই বিটিআরসি এসএমপির মতো শক্ত পদক্ষেপ নিয়েছে। আশা করছি এই পরিবেশ অপারেটরসমূহ কাজে লাগাবে।

অনুষ্ঠানে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, বাংলাদেশে মালয়েশিয়ার হাইকমিশনার হাজনাহ মো. হাসিম এবং রবির ভারপ্রাপ্ত সিইও রিয়াজ রশীদ বক্তৃতা করেন। 

ডাক ও টেলিযোাগাযোগ মন্ত্রী বলেন, তেল ও স্বর্ণের চেয়েও অনেক বেশি মূল্যবান হয়ে ওঠেছে ডাটা। এজন্য প্রয়োজন দক্ষ ডাটা সায়েন্টিস্ট ও ডাটা ইঞ্জিনিয়ার যারা ডাটার এই মূল্যায়ন তেমন পর্যায়ে পৌঁছে দিতে পারবেন। 

চতুর্থ শিল্পবিপ্লবে ‘টেলিকম নেতৃত্ব দেবে’ উল্লেখ করে এজন্য টেকসই ডিজিটাল প্রযুক্তির মহাসড়ক তৈরিতে টেলকোদের প্রতি আহ্বান জানান ডিজিটাল প্রযুক্তি বিকাশের অগ্রদূত মোস্তাফা জব্বার।

মন্ত্রী কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ছাড়া ভবিষ্যতে কোনো বাণিজ্যিক বা শিল্প প্রতিষ্ঠান চলবে না সতর্ক করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে এ বিষয়টি অন্তর্ভুক্তির প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

তিনি বলেন, তথ্যপ্রযুক্তির বিকাশ হয়েছে আমেরিকায়। তৃতীয় শিল্পযুগ মিস করার পর বাংলাদেশ আকস্মিকভাবে প্রবেশ করেছে। চতুর্থ শিল্পবিপ্লবে রূপান্তরে ডিজিটাল রূপান্তরের পথ ধরে ২০৪১ সালে আমরা স্মার্ট বাংলাদেশ করবো। তবে আশির দশকেই মালয়েশিয়া স্মার্ট স্কুল করেছে। তখন তারা মাল্টিমিডিয়া সুপার করিডোর করলে তাদেরকে পশ্চিমারা পাগল বলেছিলো।

তিনি বলেন, পৃথিবীতে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের ধারণা প্রকাশিত হয় ২০১৬ সালে ওয়ার্ল্ড ইকোনোমিক ফোরামের বৈঠকে। এর আট বছর আগে দূরদৃষ্টি সম্পন্ন রাজনীতিক জননেত্রী শেখ হাসিনা ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচি ঘোষণা করেন। এরপর ২০০৯ সালে ইংল্যান্ড, ২০১৪ সালে ভারত এবং ২০১৯ সালে পাকিস্তান তাদের ডিজিটাল কর্মসূচি ঘোষণা করে। ২০২১ সালে ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের ধারাবাহিকতায় প্রধানমন্ত্রী ২০৪১ সালে স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়নের ঘোষণা দিয়েছেন যা  জ্ঞানভিত্তিক ডিজিটাল সাম্য সমাজ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে একটি সুখী সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ী অঙ্গীকার বলে তিনি উল্লেখ করেন।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, ডেটা সভরেইনিটি না করলে সিলিকনভ্যালির উন্নয়ন হবে আমাদের নয়। তাই ডেটা প্রসেসিংয়ে রেগুলেটরি ফ্রেমওয়ার্ক তৈরি করা এখন সময়ের দাবি। প্রযুক্তি ভিত্তিক মানবসম্পদ গড়তে হলে এখন সরকার, ইন্ডাস্ট্রি ও অ্যাকাডেমিয়ার পাশাপাশি প্রফেশনালসদের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

পরে মন্ত্রী ডাটাথন প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন।প্রতিযোগিতায় সেরা ডাটা ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে নুরেন শামস ও ইয়ামিনুর রহমান এবং সেরা ডাটা সায়েন্টিস্ট হিসেবে আবদুল বাসিত ও পার্থ ঘোষ পুরষ্কৃত হন।

প্রতিযোগিতায় ১১টি দেশ থেকে ২হাজার ৮শর বেশি প্রতিযোগী অংশগ্রহণ করেন। তীব্র প্রতিযোগীতার পর ২৫টি দলে ভাগ হয়ে ১০০জন প্রতিযোগী চূড়ান্ত পর্বে অংশ নেওয়ার সুযোগ পান। এর পর দুই দিনব্যাপী হ্যাকাথনে কঠোর প্রতিযোগিতার মুখোমুখি হয় নির্ধারিত ২৫টি দল। ডাটাথনের বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ডাটাসায়েন্টিস্ট এবং এ আই পেশাজীবীরা।