বনানীর রেইনট্রি হোটেলে দুই শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের মামলায় একজন ম্যাজিস্ট্রেটসহ দুইজনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেছেন ট্রাইব্যুনাল। সাক্ষ্য প্রদানকারী ম্যাজিস্ট্রেটের নাম মো. খুরশিদ আলম। এদিন সাক্ষ্য দেওয়া অপর সাক্ষী হলেন, গুলশান-১ এর মদিনা ফার্মেসির সেলসম্যান মিঠুন চন্দ্র দাস।
আজ বুধবার ঢাকার ৭ নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক বেগম কামরুন্নার এ সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণের পর আগামী ১৭ ফেব্রুয়ারি পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ঠিক করেন। এর মধ্য দিয়ে মামলাটিতে ২০ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হলো।
সাক্ষী খুরশিদ আলম মামলার ভিকটিমের ২২ ধারার জবানবন্দি গ্রহণ করেন। সে সম্পর্কে তিনি সাক্ষ্য দেন এবং অপর সাক্ষী মিঠুন। তার কাছ থেকে আসামিরা ঘটনার রাতে জন্ম নিরোধক পিল ক্রয় করেন। সে সম্পর্কেই মিঠুন এদিন সাক্ষ্য দেন।
এদিন সাক্ষ্য গ্রহণের সময় জামিনে থাকা আসামি আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদের ছেলে সাফাত আহমেদ, তার বন্ধু সাদমান সাকিফ, দেহরক্ষী রহমত আলী ও গাড়িচালক বিল্লাল হোসেন আদালতে হাজির হন। এ ছাড়া কারাগারে থাকা সাফাতের বন্ধু নাঈম আশরাফ ওরফে এইচএম হালিমকে কারাগার থেকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।
২০১৭ সালের ২৮ মার্চ জন্মদিনের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানিয়ে অস্ত্রের মুখে ঢাকার বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই দুই ছাত্রী ধর্ষণের অভিযোগে ৬ মে বনানী থানায় পাঁচ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন।
মামলাটিতে ওই বছর ৭ জুন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশের উইমেন সাপোর্ট অ্যান্ড ইনভেস্টিগেশন ডিভিশনের (ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টার) পরিদর্শক ইসমত আরা এমি আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন।
মামলায় বলা হয়, আসামিদের মধ্যে সাফাত ও নাঈম দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং তারা ওই দুই ভুক্তভোগী ছাত্রীর বন্ধু। গত ২৮ মার্চ ঘটনার দিন আসামি সাফাতের জন্মদিনের অনুষ্ঠানের যান ওই দুই ছাত্রী। এরপর ওইদিন তাদের রাত ৯টা থেকে পরদিন সকাল ১০টা পর্যন্ত আসামিরা আটকে রাখেন। অস্ত্র দেখিয়ে ভয়-ভীতি প্রদর্শন ও অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করেন। জোর করে একটি কক্ষে নিয়ে যায় আসামিরা। আসামি সাফাত আহমেদ ও নাঈম আশরাফ একাধিকবার তাদের ধর্ষণ করেন। ধর্ষণ করার সময় আসামি সাফাত তার গাড়িচালক বিল্লালকে দিয়ে ভিডিওচিত্র ধারণ করেন। পরে বাসায় দেহরক্ষী পাঠিয়ে তাদের ভয়ভীতি দেখান। ধর্ষণের শিকার তরুণীরা ভয়ে এবং লোকলজ্জার কারণে এবং মানসিক অসুস্থতা কাটিয়ে উঠে পরে আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে আলোচনা করে তারা মামলার সিদ্ধান্ত নেন।